পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, পুলিশ সংস্কার কমিশন এর মধ্যে অন্যতম। পুলিশ যাতে রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে সংস্কার কমিশন কাজ করছে। বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কল্যাণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের আশ্বস্ত করে আইজিপি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্য কোনো অন্যায় করেনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখতে পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের সব প্রকার ভয়কে জয় করে সৎ সাহস নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্য কোনো অন্যায় করেনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না
আইজিপি আরও বলেন, এরই মধ্যে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য বিভিন্ন ইউনিটে বদলি হয়েছে। ইউনিট প্রধানদের নিশ্চিত করতে হবে নতুন ও পুরাতনদের মধ্যে যেন বিভাজন তৈরি করা না হয়। সবাই মিলেমিশে একত্রে একটি টিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে ডিএমপির গৌরব সমুন্নত রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট। এই ইউনিটের কার্যক্রমের ওপর বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অনেকাংশেই নির্ভর করে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজারবাগ বাংলাদেশ পুলিশের জন্য একটি গৌরবময় স্থান। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল রাজারবাগ থেকেই। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের একটি বিষয়। ডিএমপি আয়োজিত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য তিনি আইজিপিকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
গণঅভ্যুত্থানে যেসব পুলিশ সদস্য কোনো অন্যায় করেনি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না
কল্যাণ সভায় ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্য তাদের সুনির্দিষ্ট কিছু সমস্যা ও চাহিদার কথা আইজিপির কাছে তুলে ধরেন। আইজিপি সবার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
কল্যাণ সভার শুরুতে গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ কল্যাণ সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) মো. ইসরাইল হাওলাদার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এবং উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।