বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বহালের দাবি

তৃণমূল পর্যায়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার বাস্তবায়ন ও জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষায় বৈষম্যবিরোধী সিটি ও পৌর কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) ভবনে সিটি ও পৌর কাউন্সিলর সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশন ও পৌর কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। উভয় সংগঠন যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।

কাউন্সিলরদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার বুদ্ধিমান হলে আপনাদের অপসারণ না করে ডেকে নিতেন। সরকার আপনাদের সহযোগিতা পেত। আপনার সরকারকে সহযোগিতা করতেন। জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ না করে সরাসরি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।

সমাবেশ কাউন্সিলদের দাবির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমলাদের পরামর্শে জনপ্রতিনিদিদের অপসারণ করা হচ্ছে। যে আমলারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের দালালি করেছে তাদের আবার নতুন করে দালালির ঠিকাদারি কেন দেওয়া হলো?

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, বিগত ১৬ বছরে যেসব আমলা আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের দালালি করেছে তাদের কেন অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলো? তারা নিজের দায়িত্বই ভালোভাবে পালন করে না, আবার জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব নিয়েছে। এটা তো ভালো সমাধান হলো না।

সমাবেশ সিটি ও পৌর কাউন্সিলররা বলেন, আমরা কোনো দলের মনোনীত প্রার্থী নই। কোনো দলের প্রতীকে ভোট করিনি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে কাউন্সিলর হয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের মত রাতের ভোটে নির্বাচিত হইনি। আমরা আওয়ামী লীগের সিলেক্টেড লোকদের হারিয়ে জিতে এসেছি।

কাউন্সিলররা আরও বলেন, আমরা ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিভিন্নভাবে আমরা ছাত্রদের সঙ্গে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের ছেলে-মেয়ে, আমাদের ভাই-বোন অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। আমরা এই সরকারের সঙ্গে আছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র যখন সুষম বন্টনের কথা বলছে, তখন আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যখন সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী কাউন্সিলরদের সংস্কারের বাহিরে রাখা হচ্ছে। আমরা সংস্কারের অংশীজন হতে চাই। রাষ্ট্র সংস্কারে সরকারের সহযোগি হতে চাই। সরকারের হাত শক্তিশালী করতে চাই। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে তৃণমূলে যেতে হবে। তৃণমূল জনসাধারণের প্রতিনিধি কাউন্সিলররা। জনপ্রতিনিধির কাজ একজন অফিসার করতে পারবে না।

আওয়ামী আমলাদের কুবুদ্ধিতে কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হয়েছে দাবি করে তারা আরও বলেন, আমলারা সরকারকে অস্বস্তিতে রাখতে এ ধরণের কুবুদ্ধি দিয়েছে। কাউন্সিলর না থাকায় জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাউন্সিলররা এলাকায় অভিভাবক। কাউন্সিলরা অপসারণ হওয়ায় পতিত স্বৈরাচার সরকারের লোকেরা এলাকায় এলকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তারা নতুন করে অভিভাবক সাজার চেষ্টা করছে। আমরা পুনর্বহাল চাই। অবিলম্বে আমাদের পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যারা নৌকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের বহাল রেখেছেন। তাহলে আমরা কেন পারবো না।

বাংলাদেশ সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাওসার মাহমুদ।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার