দেশে মাইক্রোফিন্যান্স খাতে গ্রাহকদের জন্য আম্বালা আইটির প্রযুক্তিগত সহয়তায় প্রথম অ্যাপস ভিত্তিক ডিজিটাল পাশবুক চালু করলো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান আম্বালা ফাউন্ডেশন। রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় শ্যামলীতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে ডিজিটাল পাশবুক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পিকেএসএফর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক আরিফ সিকদার, চীফ অপারেটিং অফিসার মো. এনামুল হক, উপ-নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান তৌফিকা হোসাইন স্বাথী, হেড অব মাইক্রোফিন্যান্স এসকে হাসানুজ্জামান, উপ-পরিচালক মিনহাজ মহসিন মিশু, সহকারি পরিচালক রাব্বি আলম মন্ডল, সহকারি পরিচালক রীপা খাতুন, সহকারি পরিচালক কাজী ফয়সাল ইসলাম, সহকারি পরিচালক মো. আব্দুল আলীম, আম্বালা আইটির এজিএম মোহাম্মদ আলী, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার শাফিউল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিষয়ে আম্বালা ফাউন্ডেশনের সিওও মো. এনামুল হক বলেন, ‘ঘরে বসে লেনদেন আর হব না পেরেসান, আমার হিসাব আমার হাতে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আম্বালা ফাউন্ডেশন খুব দ্রুত কার্যকর করতে যাচ্ছে সদস্যদের জন্য ডিজিটাল পাশবুক। যার মাধ্যমে সদস্যদের সঞ্চয় এবং সঞ্চয়ের আমানতের সব হিসাব নিকাশ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে। এতে সদস্যদের আস্থা এবং বিশ্বাস দুটোই বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া সময়ের অপচয় রোধ হবে অনেক। আমরা আশা করি এই ডিজিটাল পাশবুক প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা প্রযুক্তির যুগে আরেকটি মাইলফলক প্রতিস্থাপন করতে পারবো।
আম্বালা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আরিফ সিকদার বলেন, আম্বালা ফাউন্ডেশন ১৯৯৮ সাল থেকে এ দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালে আর্থিক সেবা কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ক্ষুদঋণ কার্যক্রম শুরু করি। আমরা প্রথম থেকেই ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমকে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছি।
তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন বাংলাদেশে এই প্রথম আমরাই গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল পাশবই চালু করেছি। এই পাশবই চালুর ফলে একদিকে যেমন সংস্থার জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়েছে, অন্যদিকে গ্রাহকরা তাদের সকল কার্যক্রম যেমন- ঋণের স্থিতি এবং লেনদেন যেকোন জায়গায় বসে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। আমরা মনে করি এদেশে এটি একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ। এর ফলে একদিকে যেমন স্বচ্ছতা আসবে অন্যদিকে গতিশীলতা বাড়বে।
আরিফ সিকদার আরও বলেন, খুব শীগ্রই আমরা আরেকটি সেবা চালু করছি আর তা হলো ইমার্জেন্সি লোন। আপনারা জানেন ক্ষুদ্রঋণ সেক্টরে গ্রাহকরা বছরে একবার লোন পেয়ে থাকে কিন্তু তাদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে জরুরি ভিত্তিতে লোন প্রয়োজন হয়। যেমন- হঠাৎই পরিবারে অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য আর্থিক প্রয়োজন হয়, এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা এই সেবাটি চালু করছি। ইমার্জেন্সি লোন চালু হলে গ্রাহকরা আমাদের এই অ্যাপটি ব্যবহার করে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবে। আবেদন করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তারা তাদের কাঙ্খিত টাকাটা মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে পেয়ে যাবে। আমি মনে করি জরুরি প্রয়োজনে গ্রাহকদের এই সেবাটিও একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হবে।
এবিষয়ে পিকেএসএফর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, আমরা যে আমাদের মাইক্রোফিন্যান্সকে ডিজিটাল করতে চাচ্ছি, এ ডিজিটাল পাশবই তার অন্যতম প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের ৩ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষুদ্রঋণের সাথে জড়িত। ক্ষুদ্রঋণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ২য় অবস্থানে আছে। আমাদের মোট কৃষিঋণের ৮৫% যায় ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে। এছাড়াও জিডিপিতে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমুহের বিপুল পরিমান অবদান রয়েছে। এটাকে যদি আমরা ডিজিটালে রূপান্তর করতে পারি এটা হবে বড় রকমের একটা অর্জন। এটি মাইক্রোফিন্যান্সের স্বচ্ছতা অনেক বাড়িয়ে দিবে।
এসএম