ইবিতে গণ-অভ্যুত্থানের ১০০তম দিন পালন

বিবেক নাড়ানো ছাত্র জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থানের ১০০তম দিবস পূর্তি উপলক্ষ্যে শহীদের কবর জিয়ারত ও বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় হতে কুষ্টিয়ায় ভাদালিয়ায় দহকুলা নামক গ্রামে দহকুলা দারুস সালাম কবরস্থান শহীদ ওসামার কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন তারা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই উদ্যানে ৮টি চারা গাছ রোপণ করা হয় এবং বাকি ৯২টি বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগানো হবে বলে জানান তারা।

এসময় ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট, তানভীর মন্ডল, গোলাম রাব্বানী, পঙ্কজ রায়সহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এসময় ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট দায়বদ্ধ না। আমাদের সাথে যুদ্ধ করে যারা শহীদ হয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। আমরা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, দূর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মানের চেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের শহীদরা দেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা মাঠে নেমেছি এবং সফল না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই চালিয়ে যাবো। আজ বিজয়ের ১০০ তম দিন উপলক্ষে শহীদ পরিবারের সাথে আমরা সাক্ষাৎ করছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া ওসামার বাবা মো. জয়নাল আবেদীন স্মৃতিস্মারণ করতে গিয়ে বলেন, যখন পুলাডা (ছেলে) আন্দোলন করছিল তখন টিভির পর্দায় দেখতাম আর আগে আগে থাকতে বলতাম। যদিও আমি যায়নি তবে সাহায্য করেছি। প্রথমে অনুমতি নিয়েছে, টাকা নিয়েছে। বড় ছেলেও গেছে। এরপর যেদিন শহীদ হয়েছিল সেই প্রথম দিন অনেক খোঁজ করছিলাম। কেউ বলছে অমুক জায়গায় অবস্থান করছি তমুক জায়গায় অবস্থান করছি৷ শেষের দিনে আমরা পরিবার কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। শেষদিনে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সম্ভবত আমরা সাদিকের কাঁঠাল বাগানে ছিলাম। ওইসময় বড় ছেলে কল দিলো, কোনো একজন রিসিভ করে বললো, আপনারা আসেন ওসামার সমস্যা হয়েছে। এদিকে আমার এক ছোট ভাই আইসা বললো, ভাদালিয়ায় প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে, তখন আমরা গিয়ে দেখি হাসপাতালে ওসামা মারা গেছে। আমরা পরিবার থেকে জীবিত অবস্থায় পায়নি। আমার ছেলের একটা স্মৃতি নাড়া দেয় যে, যখন বাহির থেকে বাড়িতে আসে তখন আম্মু আম্মু বলে ডাক দিয়েই প্রবেশ করে। এটাই আমার স্মৃতি হিসেবে মনে পড়ে।

উল্লেখ্য, শহীদ ওসামা বিন জয়নুল আবেদীন প্রথমে কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। এরপর পল্লবপুর কওমিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে ভাদালিয়া এসে দাখিল পরীক্ষা দেয়। দাখিল পাশ করার পর কুষ্টিয়া কোয়াতুল ইসলাম আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছিলেন।

অর্থসংবাদ/সাকিব আসলাম/এসএম

শেয়ার করুন:-
শেয়ার