শ্রীলঙ্কায় ১৭তম আগাম সাধারণ নির্বাচনে দেশটির নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকের নির্বাচনি জোট ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে। এই জয়ের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্টকে দারিদ্র্য বিমোচন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নীতি সংস্কারে আরও বেশি ক্ষমতা দিল শ্রীলঙ্কা।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা ফলাফলের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট ২২৫টি আসনের মধ্যে এনপিপি ১৩৭টি আসন পেয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৬২ শতাংশ বা ৬৮ লাখ ভোট পেয়েছে দলটি।
এদিকে, দিশানায়েকের জোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমাদাসার সামাগি জানা বালাওয়েগায়া পার্টি ২৮টি আসন পেয়েছে এবং প্রায় ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সমর্থিত নিউ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র তিনটি আসন।
পার্লামেন্টের আসনসংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি আসন প্রতিটি দলের প্রাপ্ত আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে বরাদ্দ করা হবে।
শ্রীলঙ্কার মার্কসবাদী প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকের ডাকেই মূলত বৃহস্পতিবার দেশটিতে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জনগণের সমর্থনে পার্লামেন্টে নিজ দলের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ঋণ জর্জরিত দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারে গতি আনার লক্ষ্য নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
দিশানায়েকে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েই নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২৩ সেপ্টেম্বর ক্ষমতা গ্রহণের পরদিনই পার্লামেন্ট ভেঙে দেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে দিশানায়েকের এনপিপি জোটের আসন ছিল মাত্র তিনটি। এই কারণেই নিজের নীতিগুলো বাস্তবায়নে নতুন করে জনসমর্থন চাইছেন তিনি; জানিয়েছে রয়টার্স।
“এই নির্বাচন শ্রীলঙ্কার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রত্যাশা একটি শক্তিশালী পার্লামেন্ট গঠন করা এবং আমার বিশ্বাস জনগণ আমাদের এই সুযোগ দেবে,” দিশানায়েকে বৃহস্পতিবার তার ভোট দেওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এসেছে, সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে, আশা করি অবশ্যই এই পরিবর্তন অব্যাহত থাকবে।”
এর আগে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে সৃষ্ট ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গোতাবায়া রাজাপাকসের শাসনের অবসানের দুই বছর আগে পর নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দেয় শ্রীলঙ্কা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শ্রীলংকার ১ কোটি ৭১ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন দিশানায়েকে।
এমআই