পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি ২০২৪-২৫ হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই’২৪- সেপ্টেম্বর’২৪) ১৪৯ কোটি ০৩ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২০২ কোটি ০৭ লাখ টাকা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। সোমবার (১১ নভেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী মুদ্রার মান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি উচ্চ সুদ হারের কারণে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানির বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ১২ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশী মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি ৪৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সমপরিমান বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
পাশাপাশি আলোচ্য সময়ে বিক্রয় ও বিতরণ এবং ব্যাংক সুদজনিত খরচের বৃদ্ধি সার্বিকভাবে কোম্পানির মুনাফাতে প্রভাব ফেলেছে।
ফলে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৯২ পয়সা, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ৬ টাকা ৬৭ পয়সা।
পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত ২৮২ টাকা ৮০ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৮৪ টাকা ২২ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা কিছুটা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৯২ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ টাকা ৬৮ পয়সা।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির দেনাদারের কাছ থেকে টাকা প্রাপ্তির পরিমাণ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এর প্রধান কারণ- ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্থিতিশীল ও টেকসই বাজার নিশ্চিত কল্পে ক্রেডিট সহায়তা কিছুটা বাড়িয়েছে কোম্পানি। এদিকে আলোচ্য সময়ে বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় সরকারি কোষাগারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এনওসিএফপিএস হ্রাস পেয়েছে।
যদিও আলোচ্য সময়ে প্রচুর পরিমাণ কাঁচামাল ক্রয়ের কারণে টেকসই বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটন ম্যানেজমেন্ট বিগত দিনেও বাংলাদেশী মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সফলভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছিল। সেই প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকায় আগামীতেও বর্ণিত ক্ষতি কমে আসবে বলে তাঁরা দৃঢ় আশাবাদী। পাশাপাশি দেনাদারদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধিতে আরও অধিক জোর দেয়া বলে জানায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।