ক্যাটাগরি: জাতীয়

আনিসুল-কাদেরের ক্ষমতাবলে টোল আদায়ে ব্যবসা সিএনএসের

বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতুতে টোল আদায়ে মাত্র ছয় মাসের জন্য কারিগরি সহযোগিতার দায়িত্ব পেয়েছিল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)। কিন্তু তাদের আর সরানো যায়নি। ছয় মাসের জন্য ঢুকে তারা আট বছর সেতুটির টোল আদায়ে কাজ করেছে।

কাজটি নিজেদের দখলে রাখতে সিএনএস যে কৌশল নিয়েছিল, সেটি হলো মামলা। আদালতে গিয়ে তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া আটকে রাখে অভিযোগ আছে, আদালতের আদেশ যাতে সিএনএসের পক্ষে যায়, সে জন্য প্রভাব বিস্তার করতেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হক ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সিএনএসের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালের মার্চে মারা যান। সূত্র বলছে, আরিফুলের মৃত্যুর পর আনিসুল হকই নেপথ্যে থেকে সিএনএসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটিতে তাঁর কোনো পদ ছিল না।

‘মামলা কৌশলে’ শুধু যমুনা সেতু নয়, মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের কাজও সাত বছর করেছে সিএনএস। ২০১৮ সাল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভৈরব) ও শহীদ ময়েজ উদ্দিন (ঘোড়াশাল) সেতুর টোলও আদায় করছে তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত এক যুগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অন্তত পাঁচ ধরনের কাজ বাগিয়ে নেয় সিএনএস।

সড়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রণালয়টির অধীন বিভিন্ন দপ্তরে সিএনএসের পাওয়া কাজের অর্থমূল্য দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। বেশির ভাগ কাজ সিএনএস পেয়েছে উচ্চ মূল্যে। এতে তারা লাভবান হয়েছে। বিপরীতে লোকসান হয়েছে সরকারের।

সড়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সাধারণ একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হয়েও সিএনএসের এত কাজ পাওয়ার পেছনে যেমন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রভাব ছিল, তেমনি সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আশীর্বাদও ছিল। ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান একজোট হয়ে সরকারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। সরকারে তাঁরা ছিলেন প্রভাবশালী। কোনো কারণে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ায় কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে মামলা করে তা আটকে দিতে আদালতকে ব্যবহার করতেন আনিসুল হক।

আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে। ওবায়দুল কাদের আত্মগোপনে। তাই তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সিএনএসের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির উজ জামান চৌধুরী সপরিবার কানাডা বাস করেন। সেখানে সিএনএসের বৈশ্বিক শাখাও খুলেছেন। তাঁর স্ত্রী সেলিনা চৌধুরী এখন সিএনএসের চেয়ারম্যান।

মনির উজ জামান চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রীর ভাই আরিফুল হক সিএনএসে কাজ করতেন। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রভাবে কাজ পাওয়ার বিষয়টি অপপ্রচার। তাঁরা অভিজ্ঞতার কারণে কাজ পেয়েছেন।

অবশ্য সড়ক মন্ত্রণালয়ের বর্তমান একাধিক কর্মকর্তার প্রশ্ন, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে মামলা করে দরপত্র প্রক্রিয়া আটকে রাখার উদ্দেশ্য কী?

ছয় মাসের জন্য ঢুকে আট বছর
যমুনা সেতুতে টোল আদায়কারীর মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালে। পরবর্তী ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া সময়সাপেক্ষ। তাই টোল আদায়ে কারিগরি সহায়তার জন্য সিএনএসকে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ দেয় সেতু বিভাগ। অন্যদিকে শুরু হয় স্থায়ী ঠিকাদার নিয়োগের দরপত্র প্রক্রিয়া।

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে উন্মুক্ত দরপত্রে এমন শর্ত যুক্ত করা হয়, যাতে সিএনএস ছাড়া অন্য কারও কাজটি পাওয়ার সুযোগ ছিল না। বিষয়টি নিয়ে অংশগ্রহণকারী অন্য ঠিকাদারেরা আপত্তি জানান। এ কারণে দুই দফা দরপত্র বাতিল হয়। তৃতীয় দফায় সিএনএসসহ দেশি-বিদেশি পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়।

দরপত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচপিসি ও বাংলাদেশের এসইএলের যৌথ উদ্যোগের (জেভি) প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ নম্বর পায়। তারা আদায় করা টোলের মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ নেওয়ার প্রস্তাব করে। অন্যদিকে সিএনএসের প্রস্তাব ছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। কাজটি পাবে না বুঝতে পেরে কারিগরি যোগ্যতা মূল্যায়নে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট মামলা করে সিএনএস। এতে ঠিকাদার নিয়োগ আটকে যায়। এই জটিলতার মধ্যে সিএনএসকে আবার বিনা দরপত্রে ১০ মাসের জন্য যমুনা সেতুর টোল আদায়ের কারিগরি সহায়তার দায়িত্ব দেয় সেতু বিভাগ। এভাবে মামলা চলতে থাকে আর সিএনএসের মেয়াদ বাড়ে। ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দেন।

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, আইনি বাধা দূর হওয়ার পর ২০১৭ সালে ডাকা দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতার সঙ্গে আলোচনা শুরু করে সেতু বিভাগ। কিন্তু আগের দরে তারা কাজটি করতে রাজি হয়নি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ৬০ কোটি টাকার কাজটি পায় চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন। মেয়াদ পাঁচ বছর। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে সিএনএসের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছে চীনা কোম্পানিটি।

দেখা যাচ্ছে, চীনা কোম্পানির পেছনে বছরে ব্যয় হবে ১২ কোটি টাকা। সফটওয়্যার, যন্ত্রপাতি ও জনবলের খরচ তাদের। ভ্যাট ও আয়কর এর ভেতরে। অন্যদিকে শুধু সফটওয়্যার সেবা দিয়ে বছরে ৫ কোটি টাকা নিয়ে যেত সিএনএস। জনবল ও অন্যান্য খরচ ছিল সেতু বিভাগের।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, মামলার কারণে দীর্ঘ সময় তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে পারেননি।

মামলা ও দরপত্রে অনুকূল শর্ত
২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব ছিল এশিয়ান ট্রাফিক টেকনোলজিস (এটিটি) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন দরপত্র আহ্বান করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। তখন ইনফ্রাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। কিন্তু তাদের কাজ না দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় দরপত্র প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। ইনফ্রাটেক আদালতে যায়, মামলায় আটকে যায় ঠিকাদার নিয়োগ।

২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে সওজ নিজস্ব উদ্যোগে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায় শুরু করে। কারিগরি সহায়তা দেয় সিএনএস। সিএনএস আগের দরপত্রে অংশ নিয়েছিল। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা হতে পারেনি।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দরপত্র ছাড়াই একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএনএসকে পাঁচ বছরের জন্য মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয় সওজ। চুক্তি অনুযায়ী, আদায় করা টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ পেত সিএনএস। চুক্তিতে এমন শর্ত রাখা হয়, যেখানে টোলের মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও সিএনএসের টোলের ভাগ বাবদ আয়কর দেবে সওজ। ভ্যাট ও আয়কর যুক্ত করলে ঠিকাদারের পেছনে ব্যয় দাঁড়ায় আদায় করা টোলের ২৪ শতাংশের বেশি।

মেঘনা-গোমতী সেতুতে সিএনএসের টোল আদায়ের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিতে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর সওজ দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু সিএনএস দরপত্র কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। তারা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ পায়। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয় সওজ। এর মধ্যে সাত বছর কাটিয়ে দেয় সিএনএস।

মেঘনা-গোমতী সেতুতে টোল আদায়কারীকে এখন মোট আয়ের অংশ ধরে বিল দেওয়া হয় না। নতুন ঠিকাদারকে তিন বছরের জন্য ৬৬ কোটি টাকায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর গড়ে ব্যয় ২২ কোটি টাকা। সিএনএস পেত বছরে গড়ে ৭৭ কোটি টাকা।

সওজ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে মেঘনা-গোমতী সেতুতে অতিরিক্ত মালবাহী যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। অতিরিক্ত ওজনধারী যানবাহনের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের দায়িত্বও পায় সিএনএস। আদায় করা জরিমানার ১৪ শতাংশ দেওয়া হয় তাদের। টোল ও জরিমানার ভাগ বাবদ সিএনএস মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা পেয়েছে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভৈরব) ও শহীদ ময়েজ উদ্দিন (ঘোড়াশাল) সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব সিএনএস পায় ২০১৮ সালে। আদায় করা টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ পেয়েছে তারা। যদিও দরপত্রে নজরুল ইসলাম সেতুতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএইসি-এটিটি ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ময়েজ উদ্দিন সেতুতে এম এম বিল্ডার্স ৮ শতাংশ প্রস্তাব করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছিল। কিন্তু কারিগরি মূল্যায়নে সিএনএস বেশি নম্বর পাওয়ায় কাজ তাদের দেওয়া হয়।

মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২৯ সেপ্টেম্বর সিএনএসকেই সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুতে তিন বছর ও ময়েজ উদ্দিন সেতু দুই বছরের জন্য পুনরায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিএনএসের সঙ্গে এ বিষয়ে ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে। এ দফায় তারা আদায় করা টোলের ১৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ পাচ্ছে বলে সওজ সূত্র জানিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান বলেন, তিনি জেনে পরে জানাবেন।

সওজ সূত্র জানায়, সেতুতে টোল আদায়ে কোয়ালিটি ও কস্ট বেজড সার্ভিস (কিউসিবিএস) পদ্ধতিতে দরপত্র ডাকা হয়। এতে প্রথমে দরপত্রে এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়, যাতে পছন্দের ঠিকাদারের বাইরে থাকা অন্যরা কম নম্বর পায়। এরপর আর্থিক প্রস্তাব এবং কারিগরি প্রস্তাব একসঙ্গে মূল্যায়ন করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বেশি দর প্রস্তাব করেও কাজ পেয়ে যায় সিএনএস।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নজরুল ইসলাম ও ময়েজ উদ্দিন সেতুতে টোল আদায় করে ৩০০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে সিএনএস। নিরপেক্ষভাবে উন্মুক্ত দরপত্র ডাকা হলে বর্তমান খরচের চেয়ে অনেক কম ব্যয়ে টোল আদায় সম্ভব।

বিআরটিএতেও সিএনএস
বিআরটিএতে পাঁচটি কাজ পেয়েছে সিএনএস—১. মোটরযানের কর ও ফি আদায়। ২. যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করা। ৩. বিআরটিএ কার্যালয়গুলোর সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগের ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেমের (আইএস) ব্যবস্থাপনা। ৪. বিআরটিএর সার্ভিস পোর্টাল ব্যবস্থাপনা এবং ৫. নথি ডিজিটাল ব্যবস্থায় সংরক্ষণ।

বিআরটিএ সূত্র বলছে, চলমান ও শেষ হওয়া কাজের অর্থমূল্য ৮০০ কোটি টাকার বেশি। এসব কাজের দরপত্রে এমন যোগ্যতার শর্ত যুক্ত করা হয়, যা সিএনএস ছাড়া অন্য কারও নেই। এ ছাড়া একবার কাজ পাওয়ার পর বারবার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর ঘটনা ঘটছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দরপত্র ছাড়াই কাজ দেওয়া হয় সিএনএসকে।

বিআরটিএর এসব দরপত্র প্রক্রিয়া এক যুগ ধরে দেখভালের দায়িত্বে আছেন সংস্থাটির পরিচালক (প্রকৌশল) সীতাংশু শেখর বিশ্বাস। তাঁকে দিয়েই দরপত্রের শর্ত তৈরি থেকে শুরু করে মূল্যায়ন সম্পন্ন করা হয়েছে। সীতাংশু শেখর প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তথ্যপ্রযুক্তির কাজে যোগ্যতার কিছু মানদণ্ড লাগে। সিএনএসের পক্ষে শর্ত দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। সিএনএস যোগ্যতা দিয়েই কাজ পেয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার ব্যবস্থা ভেহিকেল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) চালু হয়েছে মিরপুরে। এর সক্ষমতা বৃদ্ধি, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর সিএনএসকে ১০৫ কোটি টাকার চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে বিআরটিএ। বিআরটিএ সূত্র বলছে, দক্ষিণ কোরিয়া এই কাজ করে দেওয়ার আগ্রহ দেখালেও বিআরটিএ তাতে সাড়া দেয়নি।

স্বাধীন তদন্ত ‘জরুরি’
সিএনএসের কাজ পাওয়ার প্রক্রিয়া ও মামলা কৌশল সম্পর্কে জানানো হলে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এতে বহুমুখী দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব কাজ করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী বা রাজনীতিকদের প্রভাবে এ রকম দুর্নীতি-অনিয়ম স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছিল। এর পেছনে আমলাদের জোরালো যোগসাজশ না থাকলে হয়তো এতটা সম্ভব হতো না। তাই রাজনীতিকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আমলাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সময়টাকে একটা সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখন এই অনিয়ম-দুর্নীতিগুলোর স্বাধীন তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য একটা মানদণ্ড তৈরি করতে হবে। এবার ব্যর্থ হলে আর কখনোই সম্ভব হবে না।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার