কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের মূল চালিকাশক্তি হল কৃষক ও কৃষিজ সম্পদ। বন্যা-পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসীর কৃষিজ সম্পদের প্রতিস্থাপনের অংশ হিসেবে নিজ গ্রামে এক হাজার ফলজ গাছ রোপন করলেন পরিবেশ, ভ্রমণ ও এ্যাভিয়েশন বিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম।
শনিবার (৯ নভেম্বর) নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার দশানী টবগা গ্রামে আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারা, কাঠবাদাম, বাক্সবাদাম, লেবু ইত্যাদি গাছ রোপণ ও বিতরণ কার্যক্রম আয়োজন করা হয়।
এই কার্যক্রম সম্পাদনে সহযোগী হিসেবে ছিল মিশন গ্রিন বাংলাদেশ ও এসএমএস এনভায়রনমেন্টাল এলায়েন্স।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম বলেন, ফলজ গাছ শুধুমাত্র আমাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনই দেয়না বরং এসব গাছ থেকে প্রাপ্ত ফল আমাদের শরীরে ভিটামিনের যোগানের পাশাপাশি ফল বিক্রয়ের মাধ্যমে সংসারে অর্থকড়িও দেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে পরিমাণ অক্সিজেন প্রকৃতি থেকে বিনামূল্যে নিচ্ছি সেটা কোন হাসপাতাল থেকে নিতে গেলে প্রতিদিন বিপুল অঙ্কের অর্থ গুণতে হত। জীবনে আমরা সবকিছুর জন্য অর্থ খরচ করলেও কেবলমাত্র প্রতিনিয়ত অক্সিজেন গ্রহণের জন্য খরচ করি না। কেউ না কেউ গাছ লাগিয়েছে বলেই কিন্তু আমরা নির্মল বাতাস গ্রহণ করতে পারছি। তাই আসুন আজ থেকে নিজের অক্সিজেনের ও ভিটামিনের যোগান নিজেই দেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাটখিল উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. মোকছেদ মিয়া বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বন্যা পরবর্তী বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম এলাকার মধ্যে সবুজের ভারসাম্য রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। যেহেতু বন্যার কারনে গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বৃক্ষরোপন ও বিতরণ প্রসঙ্গে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি বলেন, ‘সারা দেশকে আমরা সবুজ করতে চাই। দেশ সবুজ হলে অনেকাংশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিই শুধু কমবে না বরং আমাদের দেশ ফিরে পাবে তার হারানো রূপ। আমরা ফিরে পাব সবুজ, শ্যামল বাংলাদেশ। এছাড়াও আমরা বুকভরে নিতে পারব নির্মল বাতাস।‘
গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক ও সদ্যবিদায়ী দশানী টবগা গ্রামের (৭ নং ওয়ার্ড) কাউন্সিলর সালেহ আহমেদ সুমন বলেন, সম্প্রতি বন্যায় পাড়া-মহল্লায় এবং নার্সারিতে ও বনজ ও ফলদ গাছগুলো মারা যাওয়ায় এই মুহুর্তে নতুন উদ্যোমে বৃক্ষরোপণ অতিব জরুরি ছিলো। এছাড়াও, বর্তমানে ফলমূলের দাম আকাশচুম্বী তাই অনেকেই ফল থেকে প্রাপ্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন নিতে পারছে না। এ থেকে সমাধানের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ফলগাছ রোপন করা। আমাদের গ্রামে এই এক হাজার ফলজ গাছ রোপনের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের শুধুমাত্র ফলের চাহিদাই পূরণ করবে না বরং একইসাথেই অক্সিজেনেরও যোগান দিবে।
প্রসঙ্গত, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রতি বছর বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার প্রভাব শহরের পাশাপাশি গ্রামেও পড়ছে। এসব মোকাবেলায় নগরাঞ্চলে নানান পদক্ষেপ বা কর্মসূচী লক্ষণীয় হলেও গ্রামে সেটা অপ্রতুল। তাই উষ্ণতা কমাতে হোক কিংবা ফল খেতেই হোক, প্রচুর পরিমানে গাছ লাগানো গেলেই উষ্ণতা কমতে শুরু হবে বলে মনে করেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা।
উল্লেখ্য, কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম গত সপ্তাহে গ্রামে পাঁচশত তালবীজ রোপন করেন। এছাড়াও কিছুদিন আগে রাজধানী ঢাকায় পাঁচশত নিমগাছ রোপন ও নিয়মিত পরিচর্যার ব্যবস্থা করেছেন।
কাফি