জুমা অর্থ সম্মিলন বা জমায়েত। জুমা শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো কিছু সংখ্যাক মানুষের জমায়েত। কিছু সংখ্যাক মানুষ একসাথে জামাতবদ্ধ হয়েই জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ একা আদায় করা গেলেও জুমার নামাজ একা আদায় করা যায় না।
কোন জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি শর্ত হলো জুমা হতে হবে কোনো শহর বা উপশহরে। জনমানবহীন জঙ্গল বা মরূভূমিতে জুমার নামাজ শুদ্ধ হবে না।
শহর ও উপশহরের বাইরে যেসব এলাকায় রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি নেই, মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহজলভ্য নয়, ওইসব এলাকায় জুমা হবে না। যেমন আমাদের দেশের খাগড়াছড়ি বা বান্দরবনের গহীন জঙ্গলে বসবাসকারীদের ওপর জুমা আবশ্যক নয়।
জনবহুল এলাকা থেকে দূরের মরুভূমিতেও জুমার নামাজ পড়া যাবে না। সেনাবাহিনীর কোন ক্যাম্প যদি গহীন পাহাড়ে স্থাপন করা হয়, অথবা মরু অঞ্চলে যদি ট্রেনিংয়ে জন্য সেনা ক্যাম্প করা হয়, তাহলে তারা এসব জায়গায় জুমা পড়া থেকে বিরত থাকবে এবং জোহরের নামাজ আদায় করবে।
হজরত আলী (রা.) বলেন,
لَا جُمُعَةَ وَلَا تَشْرِيقَ إِلَّا فِي مِصْرٍ جَامِعٍ
শহর ছাড়া জুমা ও ঈদের নামাজ নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৫১৭৫)
জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার আরেকটি শর্ত হলো যে জায়গায় জুমার নামাজ হবে, ওই জায়গাটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা। সবার জন্য উন্মুক্ত নয় এ রকম জায়গায় জুমা শুদ্ধ হয় না। যেমন জেলখানার মসজিদে জুমা শুদ্ধ হয় না। অফিসের নামাজ ঘর বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য বিশেষায়িত মসজিদ যদি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না হয়, তাহলে সেখানে জুমা শুদ্ধ হবে না।
স্বাভাবিক অবস্থায় জুমার নামাজ কোনো জামে মসজিদে আদায় করাই বাঞ্চনীয়। তবে কখনও যদি বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়, যেমন কোনো বড় সমাবেশ বা মাহফিলে যদি বহু সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়, যাদের জুমা আদায় করার মতো জায়গা আশপাশের জামে মসজিদগুলোতে নেই, তাহলে তারা জুমার অন্যান্য শর্ত পূরণ করে সমাবেশস্থলে বা কোনো মাঠেও জুমার নামাজ আদায় করতে পারেন।