দেশের পুঁজিবাজারের পদ্ধতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে বাজারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি বলেন, বিএসইসি পুঁজিবাজারের সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাগুলোর সাময়িক সমাধান নয়, বিশ্বমানের যুগোপযোগি সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই ও নিশ্চিত সমাধানে কাজ করছে। পুঁজিবাজারের সংস্কারে টাস্কফোর্স করেছে এবং ফোকাস গ্রুপের মাধ্যমে বাজারের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেই সংস্কারের রূপরেখা তৈরি হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিএসইসি ভবনে পুঁজিবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজসমূহের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিএসইসি তিন কমিশনার- মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর, ফারজানা লালারুখ; বিএসইসি’র কর্মকার্তাবৃন্দ এবং ব্রোকারেজ হাউজসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারের বাজার মধ্যস্ততাকারীদের সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতপূর্বক সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে। এর মাধ্যমে আগামীতে বাজারে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া সিকিউরিটিজ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সকল অনিয়ম দূর করে দেশের পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানের ও মেধাভিত্তিক করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সভায় ব্রোকারেজ হাউজসমূহের শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও সংস্কারসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তাদের মতামত ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির বিষয়টি অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ গুরুত্ব পায়।
সভায় পুঁজিবাজারের বিদ্যমান বিভিন্ন নিয়ম-নীতির প্রয়োজনীয় সংস্কার, বহুজাতিক কোম্পানিসহ ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন ও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ, তালিকাভুক্তিতে উৎসাহ বাড়াতে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্যে সংস্কার, মার্জিন রুলের পুনর্বিবেচনা ও সংস্কার, ইনডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি ও তাদের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারকে বিনিয়োগবান্ধব করতে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, ক্যাপিটাল গেইন ও ডিভিডেন্ডের উপর আরোপিত করের ক্ষেত্রে সংস্কার আনয়ন, বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা ও আস্থা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়।
এছাড়া বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ গ্রহণ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্টকরণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে সুশাসন নিশ্চিতসহ জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, বাজার মধ্যস্ততাকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারকে আরো ডিসক্লোজারভিত্তিক করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের সম্ভবনাকে কাজ লাগাতে ও এই খাতের উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস পরিণত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতিসহায়তা প্রদান এবং নীতি সম্পৃক্ত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সাথে মিলে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং সরকারে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পুঁজিবাজারের গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিতকরণে উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি প্রস্তাবনা সভায় উঠে এসেছে।
এমআই