বাসার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যাংকের কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার চিত্র অনেকের কাছেই বেশ পরিচিত ঘটনা। বেসরকারি চাকুরিজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানও তার কর্মব্যস্ত জীবন থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য হয় অফিস থেকে অর্ধদিবস ছুটি নিতেন, নয়তো নির্ভর করতেন বাসা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির উপর।
এমন অবস্থায় তাঁর জীবনে আক্ষরিক অর্থে স্বস্তি নিয়ে এলো দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। কেননা, এখন নিজের ফোন থেকেই বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে যেকোনো সময় বিদ্যুৎ বিল সহ আরও নানা ধরণের বিল পরিশোধ করতে পারছেন তিনি।
আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছর দুয়েক ধরে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য বেশকিছু পরিসেবার বিল পরিশোধ করছি বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে। বিল পরিশোধের এই প্রক্রিয়া খুব সহজ এবং পুরো বিষয়টি বেশ স্বচ্ছও বটে। পাশাপাশি, বিল পরিশোধ করার সাথে সাথেই ডিজিটাল রিসিট চলে আসে ফোনে। তবে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে দিনে রাতে যেকোনো সময় বিল দেয়ার সুযোগ থাকায় বিল পরিশোধের শেষ তারিখ বা ডেডলাইন মিস করার সম্ভাবনা নেই।
দেশ জুড়ে আসাদুজ্জামানের মতো লক্ষ গ্রাহক বিকাশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট, টিভির মতো ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করছেন স্বাচ্ছন্দ্যে ও নিরাপদে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের এক জরিপেও উঠে এসেছে ইউটিলিটি বিল পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবে বিকাশের জনপ্রিয়তার কথা। এই জরিপে (যেখানে একাধিক উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল) দেখা যায়, দেশের ৬৮.৩২ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পোস্ট-পেইড বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন, আর শুধুমাত্র বিকাশ-এর মাধ্যমেই পোস্ট-পেইড বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন ৬১.১১ শতাংশ গ্রাহক। এছাড়াও, ঐ জরিপে ১৮.০১ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ অফিসে, এবং ১৪.২৬ শতাংশ গ্রাহক অন্যান্য এমএফএস সেবার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন।
বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাওয়ার ডিভিশনের আওতাধীন পাওয়ার সেল কর্তৃক নিযুক্ত ‘কাস্টমার স্যাটিসফ্যাকশন সার্ভে উইথ রিকমেন্ডেশন অব কোয়ালিটি পাওয়ার সাপ্লাই ইনক্লুডিং এসএআইডিআই/এসএআইএফআই’ (এসএআইডিআই/এসএআইএফআই ব্যবহারপূর্বক মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পরামর্শসহ গ্রাহক সন্তুষ্টি সমীক্ষা) শীর্ষক জরিপটি পরিচালনা করে উন্নয়ন সংস্থা মাইডাস (মাইক্রো ইন্ডাসট্রিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্টেন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস)। জরিপটি করা হয় ২০২৩ সালের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ১৫ হাজার ২৪৫ জন গ্রাহকের উপর জরিপটি চালানো হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫২.০১ শতাংশ গ্রাহক প্রি-পেইড বিদ্যুতের মিটার এবং ৪৭.৯৯ শতাংশ পোস্ট-পেইড মিটার ব্যবহার করেন। ৬৯.৮৭ শতাংশ মোবাইল বা অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। জরিপে উত্তর দেয়া ৯৯.১২ শতাংশ গ্রাহক এমএফএস ও অনলইনে বিল পরিশোধে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ সেবাকে নিয়ে ৪৬.৫ শতাংশ গ্রাহক ‘ভালো’, ২৯.৫ শতাংশ ‘খুব ভালো’ এবং ২৩.১ শতাংশ গ্রাহক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
জরিপে আরও দেখা গিয়েছে, অনলাইনে বিল দেয়া বর্তমানে অনেক আধুনিক ও নিরাপদ একটি সেবা, যা আগের চেয়ে অনেক সহজ এবং গ্রাহকরা ঘরে বসেই পেমেন্ট করতে পারছেন। গ্রাহকরা যাতে ঘরে বসেই নির্বিঘ্নে বিল পরিশোধ করতে পারেন, সে বিষয়ে ইউটিলিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় জরিপটিতে।
কেবল ইউটিলিটি বিলই নয়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি, সরকারি ফি, ক্রেডিট কার্ডের বিলসহ বিভিন্ন সেবার বিল বিকাশ-এর মাধ্যমে পরিশোধ করার সুবিধা গ্রাহকের জীবনকে করেছে আরও সহজ ও গতিশীল।
প্রয়োজনের মুহূর্তে বিল পরিশোধের জন্য বিকাশ-এ পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলেও সমস্যায় পড়তে হয়না বিকাশ অ্যাপের ‘অ্যাড মানি’ সেবার কল্যাণে। কেননা, দরকারের সময় গ্রাহক তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা ভিসা, অ্যামেক্স বা মাস্টারকার্ড থেকে নিমেষেই টাকা ট্রান্সফার করতে পারেন নিজের বা প্রিয়জনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে। আবার, বিকাশ অ্যাপে আছে ‘অটো পে’ সুবিধা, যা সেট করে রাখলে নির্দিষ্ট ইউটিলিটি বিলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল পেমেন্ট হয়ে যায়।
এই সেবা চালু করে রাখলে ডেডলাইন মিস হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায় খুব সহজেই। বিকাশ থেকে ইউটিলিটি বিল পেমেন্টের বিস্তারিত দেখে নেয়া যাবে এই লিংকে – https://www.bkash.com/products-services/pay-bill