রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) ৩ হাজার কোটি টাকার ‘সভরেন গ্যারান্টি’ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
আইসিবি এই গ্যারান্টি পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো ঋণদাতা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য সমপরিমাণ টাকার ঋণ নিতে পারবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) সূত্রে জানা গেছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য কয়েক বছর যাবত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে তারল্য সংকট মেটাতে সরকারের কাছে ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ চেয়ে আসছিল আইসিবি।
তবে আর্থিক সংকটে থাকা সরকারের পক্ষে সরাসরি ঋণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন প্রেক্ষাপটে আইসিবির ঋণে সরকার ‘গ্যারান্টার’ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইসিবির ঋণ আবেদনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকার আইসিবিকে সরাসরি ঋণ দিতে পারবে না। তবে গ্যারান্টি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য আইসিবিকে আবেদন করতে হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, এই মুহুর্তে আমি দেশের বাহিরে আছি। এবিষয়ে এখনি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল হোসেন বলেন, গ্যারান্টি পেতে সরকার নির্ধারিত ফরম্যাটে কিছু নথিপত্রসহ আবেদন করতে হয়। এসব নথি প্রস্তুতের কাজ চলছে। শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।
সরকারের কাছে কত টাকার ঋণ গ্যারান্টি চাইবেন– এমন প্রশ্নে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আইসিবি ৫ হাজার কোটি টাকা চায়। এখন সরকার কতটা দেবে, তা তো বলতে পারি না।’
আইসিবির এমডি জানান, এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ঋণ চেয়ে আবেদন করেছিল আইসিবি। তবে ১৩ জুন চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সরকার গ্যারান্টার হলে ঋণ দিতে আপত্তি নেই।
সরকারের গ্যারান্টিতে ঋণ পেলে ওই টাকা কী কাজে ব্যবহার করবেন জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, আইসিবির পরিকল্পনা হলো, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকার ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে নেওয়া উচ্চ সুদের পুরোনো ঋণের কিছুটা পরিশোধ করা। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত ঋণের ৫০ অনুপাত ৫০, অর্থাৎ অর্ধেকটা ঋণ পরিশোধে এবং বাকিটা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা আছে। তবে এ হার ৬০ অনুপাত ৪০-ও হতে পারে।
ঋণ করে পুরোনো ঋণ পরিশোধের কারণ ব্যাখ্যায় আইসিবির এমডি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের সুদহার অনেক বেশি। সরকারের গ্যারান্টিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণ মিলবে। এতে সুদ ব্যয় বাবদ খরচ কমবে।