ক্যাটাগরি: শিল্প-বাণিজ্য

পিটার হাসের নেতৃত্বে পেট্রোবাংলায় এক্সিলারেটের প্রতিনিধি দল

বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছে এক্সিলারেট এনার্জি। এ বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে বুধবার পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে মার্কিন কোম্পানিটির একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করেছে। প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া পিটার ডি হাস, যাকে সম্প্রতি এক্সিলারেট এনার্জির স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা করা হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশনে টার্মিনালের সংখ্যা আরো বাড়াতে চায় এক্সিলারেট। আর পেট্রোবাংলা চায় উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে মহেশখালীতে এলএনজির ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ করতে। তাই অন্যান্য কোম্পানির মতো এক্সিলারেট এনার্জিকেও সেখানে অংশ নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি সরবরাহের জন্য পেট্রোবাংলার মাস্টার সেলস পারচেজ এগ্রিমেন্টে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া অফশোর বিডিং রাউন্ডে কীভাবে এক্সিলারেট সহযোগিতা করতে পারে, সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয় প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে।

রাজধানীর পেট্রোসেন্টারে এক্সিলারেটের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান, পরিচালক (প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট) প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম। জানতে চাইলে প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সিলারেট এনার্জির প্রতিনিধি দলের সৌজন্য বৈঠক হয়েছে। এটি নিয়মিত বৈঠকের একটি অংশ বলা চলে। আগামীতে পেট্রোবাংলার এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ, স্পট এলএনজি কার্গো আমদানি এবং অফশোর বিডিং হবে। এগুলোয় তাদের (এক্সিলারেট এনার্জি) অংশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যান্য কোম্পানির মতো তারাও যাতে অংশ নিতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, পটুয়াখালীর পায়রায় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইনে (বিশেষ আইন) করা টার্ম-শিট চুক্তি বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত সপ্তাহের এ চুক্তি বাতিলের বিষয়টি এক্সিলারেট এনার্জিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয় পেট্রোবাংলা। এ কারণেই কোম্পানিটির পক্ষ থেকে পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিশেষ আইনের আওতায় সামিটের সঙ্গে করা এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি বাতিল করেছে পেট্রোবাংলা। এখন নতুন করে কক্সবাজারের মহেশখালী, পটুয়াখালীর পায়রা ও মাতারবাড়ীর স্থলভাগে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে। এসব দরপত্রে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জিকে অংশ নিতে বলা হয়েছে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির জন্য বর্তমান যে তালিকা করা রয়েছে, সেটি আবার নতুন করে তৈরি হচ্ছে। এক্সিলারেট চাইলে নতুন তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

মহেশখালীতে বর্তমানে এক্সিলারেট এনার্জির একটি টার্মিনাল রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা দৈনিক ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে। পেট্রোবাংলার সঙ্গে ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট থেকে শুরু হয় গ্যাস সরবরাহ। পেট্রোবাংলার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ১৫ বছর মেয়াদি গ্যাস চুক্তি রয়েছে।

দেশে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি সরবরাহের জন্য গত বছরের নভেম্বরে পেট্রোবাংলার সঙ্গে এক্সিলারেট এনার্জি চুক্তি করে। সে অনুযায়ী, এক্সিলারেট এনার্জির সহযোগী প্রতিষ্ঠান এক্সিলারেট গ্যাস মার্কেটিংয়ের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে শূন্য দশমিক ৮৫ থেকে এক এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করবে সরকার। এক্সিলারেট ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার