দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে হাইকোর্ট ঘেরাও করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকোর্ট মাজার গেট এসে পৌঁছান তারা। তবে আগে থেকেই হাইকোর্টের গেটসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন হল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে অবস্থান নেন। এরপর তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের দিকে রওনা হন। এর আগে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়াও সাধারণ মানুষ এ মিছিলে অংশ নেন।
অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ‘ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে—হাইকোর্ট ঘেরাও হবে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত—আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়—ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘ফ্যাসিবাদের আস্তানা—ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই—খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া দলবাজ বিচারপতি হিসেবে চিহ্নিতদের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এছাড়া সাধারণ আইনজীবীরাও দলবাজ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমও শিক্ষার্থীদের জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তার ফেসবুকে পোস্ট দেন।
গতকাল সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ বুধবার সকাল ১১টায় হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেন।
সারজিস তার পোস্টে লিখেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি। যে যেখানে আছেন, চলে আসবেন। শকুনদের শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। আগামীকাল আবার দেখা হবে রাজপথে।’
একই পোস্টের আরেক কমেন্টে সারজিস লিখেছেন, ‘যেখানে আমার শহীদ ভাই ও বোনদের মা-বাবার কান্না থামেনি, আহত ভাই-বোনদের ক্ষত শুকায়নি, সেখানে শকুনরা জেগে ওঠার সাহস করছে! এদের প্রতিহত করার জন্য আবারও রক্ত দিতে প্রস্তুত।’
একই পোস্ট দিয়েছেন আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি তার দেয়া পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন, ‘যে লীগের হাতে হাজার হাজার ছাত্র ও নাগরিকের রক্ত লেগে আছে, দুই মাস না যেতেই তাদের কীভাবে দুঃসাহস হয় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে খুনি হাসিনার নামে স্লোগান দেয়ার?’
এমআই