প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে আলোচিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মির পক্ষ নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার সমালোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, তাপসী তাবাসসুম উর্মি বাক স্বাধীনতার বলি নন। তিনি সরকারের শৃঙ্খলাবিধি ভঙ্গ করেছেন। আর এ যৌক্তিক কারণেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে তার হওয়ার কথা পক্ষপাতহীন। কিন্তু তিনি স্বৈরশাসকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, আইনজীবী জেড আই খান পান্না তাকে সেলুট জানিয়েছেন। কয়েকদিন আগে পান্না অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বর্জ্য বলে সমালোচনা করেছিলেন। আমি অবাক হইনি। সারাজীবনই তিনি খুবই গড়পড়তা মানের একজন আইনজীবী ছিলেন। তবে কোনোভাবে তিনি শোরগোল তৈরিতে ওস্তাদ। হয়ত এ কারণেই তিনি আজকের এ অবস্থানে এসেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করে সম্প্রতি আলোচনায় আসেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি। গত শনিবার তিনি ফেসবুকে লেখেন লেখেন, সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।
পরে স্ট্যাটাস বিষয়ে জানতে চাইলে উর্মি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের জের ধরে তার এই প্রতিক্রিয়া।
নিজের স্ট্যাটাসের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমি পোস্ট দিয়েছি এটাই তো যথেষ্ট। অনলি মি করেছি, বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর জন্য যদি আমার চাকরি চলে যায়, আমার সমস্যা নাই। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, এটা মীমাংসিত সত্য। রিসেট বাটন মুছে ফেলে অতীত মুছে ফেলা, এর মানে কি? তাহলে তো আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি আমাদের দেশে সরকার হিসেবে আছে। আমার মনে হয়েছে, আমার দায়িত্বশীল জায়গা এটাই। বলা হচ্ছে জুলাই গণহত্যা, এগুলো সবই তদন্ত সাপেক্ষে, মীমাংসিত সত্য না। এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি তো।
তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে এরই মধ্যে বরখাস্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
উর্মিকে বরখাস্ত করার পর তার পক্ষ নিয়ে জেড আই খান পান্না একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে তাকে আইনি সহায়তা দেবেন তিনি।
জেড আই খান পান্না মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। গত জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করা হলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন জেড আই খান পান্না।
জেড আই খান পান্নার সমালোচনান করে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, যখন আপনি (পান্না) আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতো একটি মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন, তখন শব্দ চয়নে আপনার সতর্ক থাকা উচিত। আপনার মন্তব্যের স্বপক্ষে তথ্য প্রমাণ থাকা উচিত। স্বৈর শাসনের সময় মানবাধিকারের বিষয়ে পান্নার তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। এখন তিনি ফ্যাসিস্টকে রক্ষার চেষ্টায় নেমেছেন।