ক্যাটাগরি: গণমাধ্যমরাজনীতি

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধসহ সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ৭ দাবি

সাত দিনের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। দেশে ফেরার পর সাংবাদিকদের সাথে তার প্রথম মতবিনিময় সভায় তিনি এসব দাবি উত্থাপন করেছেন।

আজ রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

সাত দফা দাবি তুলে ধরে মাহমুদুর রহমান বলেন, অনতিবিলম্বে ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ও বেআইনি সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের যত সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দায়ী একমাত্র বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার ছেলে-মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে, আবু সাঈদ-মুগ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুণ্ডা বাহিনী ছিল। এই অনুষ্ঠান থেকে আমার দেশ পরিবার, আমার ও সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আল্টিমেটাম দিচ্ছি, সাত দিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমি সাংবাদিক সমাজকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামব।

তিনি বলেন, একজন বর্ষিয়ান নাগরিক হিসেবে ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মী হিসেবে আমি সাত দফা দাবি ঠিক করেছি, যা এই সরকারের কাছে উত্থাপন করছি।

সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের ৭ দফা দাবি

এক নং দাবি হচ্ছে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসার জন্য অনতিবিলম্বে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করতে হবে।

তৃতীয়ত, যমুনা সেতুকে শহীদ আবু সাঈদ সেতু নাম ঘোষণা করতে হবে।

চতুর্থত, ২০০৯ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে তার প্রতিটি ধারা উপ-ধারা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জনগণকে জানতে হবে ভারতের সঙ্গে কি কি চুক্তি হয়েছে। এগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটিতে দেশ প্রেমিকরা থাকবেন। তবে সেখানে টিআইবির ইফতেখারুজ্জামান বা ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মতো কোনো ব্যক্তিকে রাখা যাবে না, যারা ফ্যাসিবাদ, ভারতীয় দালাল তারা থাকবে না।

পঞ্চমত, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের নাম পরিবর্তন করে শহীদ আবরার এভিনিউ করতে হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লব শুরু হয়েছে শহীদ আবরারের শাহাদতের মাধ্যমে। শহীদ আবরার ছিলেন ইন্ডিয়ান হেজেমনির বিরুদ্ধে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ আবরার অ্যাভিনিউ করতে হবে।

ষষ্ঠত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নমিনেশন অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই সাহেবা পুতুলের নমিনেশন করা হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পুতুলের নমিনেশন বাতিল করবে কি করবে না– সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু বিপ্লবোত্তর সরকারকে পুতুলের নাম প্রত্যাহার করে ম্যাসেজ দিতে হবে সংস্থাটিকে।

সপ্তমত, বুয়েটের ছাত্র, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) রহিমকে অবহেলাজনিত হত্যা করা হয়েছে। এটা আমি কারাগারে থাকতে জেনেছি। তিনি ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় কারান্তরীণ ছিলেন। যদিও বলা হয় তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। কিন্তু, আমি জেনেছি হার্ট অ্যাটাকের পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হলে ইলেক্ট্রিসিটির লাইন বন্ধ করে রাখা হয়েছিল দুই থেকে তিন ঘণ্টা। এসময় তিনি ছটফট করে মারা যান। আরেকজন হচ্ছে বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টু, যাকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে বলে জেনেছি। দুজনের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। যে কমিটির দায়িত্ব হবে সমস্ত কাগজপত্র প্রমাণ পর্যালোচনা করে এই দুজনের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার