আওয়ামী সরকারের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংক খাতে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার। এসব ঋণ থেকে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন তিনি।
ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
সূত্র বলছে, নজরুল ইসলাম মূলত ২০১৭ সালের পর দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নিজেকে একক ক্ষমতাধর বলে জানান দেন। এ সময় তার বড় ছেলে ওয়ালিদ ইবনে ইসলামের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ভায়রার মেয়ের বিয়ে হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে তিনি বোন (বেয়াইন) ডাকা শুরু করেন। সম্পর্কের নতুন মোড়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন নজরুল ইসলাম।
জানা যায়, বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদে দেশের ব্যাংক খাতের অন্যতম মাফিয়া বনে যান। এ সুবাদে তিনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান পদ পেয়ে যান। আর্থিক খাতের নানা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির টাকায় দেশ-বিদেশে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের একাধিক দেশে রয়েছে তার বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ। তবে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেফতারের সংবাদ দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সূত্র জানায়, লন্ডন এবং হংকং ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মজুমদারের বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। সেখানে রিয়েল এস্টেট খাতে একাধিক কোম্পানি খুলে তিনি ব্যবসা করছেন। এছাড়া ২০১৫ সালের দিকে তিনি সৌদি আরবের কৃষি খাতে বিনিয়োগ করেন। সৌদির একাধিক খেজুর বাগানে বিনিয়োগ রয়েছে তার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের রাজধানী দোহায় তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী নাছরিন ইসলাম ও তাঁদের ছেলে-মেয়েদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।
এমআই