পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত-সমালোচিত বিনিয়োগকারী আবুল খায়ের হিরু ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। যাদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, হিরুর বাবা আবুল কালাম মাদবর, ভাই মোহাম্মদ বাশার, বোন কনিকা আফরোজ ও হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান।
বুধবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে। বিএফআইইউ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্টার আবুল খায়ের হিরুর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে অসংখ্য কারসাজির অভিযোগ রয়েছে। কয়েকটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একাধিক দফায় তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদেরকে জরিমানা করেছে।
সরকারি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়েরও আভিযোগ আছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বিএফআইইউ।
বিএফআইইউ’র চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে। লেনদেন তলব করার এ নির্দেশনার ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে।
বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠাতে বলা হয়েছে।
আবুল খায়ের হিরু ৩১তম বিসিএস সমবায়ের কর্মকর্তা। বছর পাঁচেক আগে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কাছে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না আবুল খায়ের হিরু। ২০২০ সালে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মূলত তার প্রশ্রয়ে কারসাজিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন হিরু ও তার সহযোগীরা। তারা পুঁজিবাজার থেকে কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হিরু শুধু নিজের বিনিয়োগ নয়, অনেক উর্ধতন সামরিক-বেসামরিক আমলা এবং রাজনৈতিক নেতার পোর্টফোলিও (তহবিল) পরিচালনা করতেন। ।
ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর কয়েকদিনের মধ্যে হিরুর প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার অন্য পৃষ্ঠপোষকদের কেউ কেউ আত্মগোপনে, কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।