লেবাননে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর বৈরুতে বিমান হামলায় গোষ্ঠীটির আরেক শীর্ষ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের উপ-প্রধান নাবিল কাউক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই ঘটনায় হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তারা হিজবুল্লাহর বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। আইডিএফের মতে, এই হামলাগুলো হিজবুল্লাহর অস্ত্র এবং সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর করা হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী এবং শিশুরাও রয়েছে।
চীন ও ইরানের প্রতিক্রিয়া
হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর চীন এই ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে লেবাননের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। চীন সব পক্ষকে, বিশেষ করে ইসরায়েলকে, উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, ইরান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি জাতিসংঘকে পাঠানো এক চিঠিতে অভিযোগ করেছেন যে, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহকৃত বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করে বৈরুতের আবাসিক এলাকায় সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়েছে।
বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ
ইসরায়েলের এই আক্রমণে লেবাননে মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার কারণে দুই লাখ মানুষ লেবাননের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পার্শ্ববর্তী সিরিয়ায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, এই সংঘাত আরও দীর্ঘায়িত হলে অঞ্চলটিতে মানবিক বিপর্যয় আরো ঘনীভূত হতে পারে।