অর্থনীতি
ইউনূস ম্যাজিকে আসছে সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার
আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটে দেশের আর্থিক খাত যখন ভয়াবহ চ্যালেঞ্জে, ঠিক সে মুহূর্তে ত্রাণকর্তা হিসেবে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ করে, অর্থ পাচার আর ডলার সংকটে যখন দেশের রিজার্ভ তলানিতে, সেই সময় আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তায় রিজার্ভের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছেন তিনি। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইএসডিবি) ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাসহ (ইউএসএআইডি) বেশ কয়েকটি সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এসব অর্থ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডলার সংকট ও রিজার্ভের পতন থেমে দেশের আর্থিক খাত ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশ যখন আর্থিক সংকটে পড়ে, সে সময় আইএমএফ থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ঋণ চায়। সংস্থাটি ওই প্যাকেজের আওতায় ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের সংস্কারের শর্ত জুড়ে দেয়। এমনকি বারবার সফরে এসে বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় দেশের আর্থিক খাতে অনেকটাই অস্বস্তি দেখা দেয়। অথচ ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঋণ চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ঋণ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছে। এটি সম্ভব হয়েছে শুধু আন্তর্জাতিক বিশ্বে ড. ইউনূসের ভাবমূর্তির কারণেই।
বর্তমানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ড. ইউনূস। সেখানে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় অঙ্কের ডলার পাওয়ার আশ্বাস এসেছে। এর বাইরেও চীনের প্রস্তাবে বড় বিনিয়োগের সোলার প্লান্ট স্থাপন, নেপালের পক্ষ থেকে জলবিদ্যুৎ, জ্বালানি আমদানিসহ বিভিন্ন খাতে সহায়তারও আশ্বাস এসেছে বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে। এর আগেও ড. ইউনূস বিভিন্ন সময়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন অধিবেশনে যুক্ত হয়েছেন। তবে সে সময় তিনি একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে সেখানে যুক্ত হন। তবে এবারই প্রথম বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে জাতিসংঘে গেলেন তিনি। এ জন্য বিশ্বে নেতাদের মধ্যে তাকে নিয়ে দেখা গেছে উচ্ছ্বাস।
এরই মধ্যে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েবা, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং উইসহ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রনায়ক ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবাই কমবেশি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
দেশের আর্থিক খাতের দুরবস্থা বিবেচনায় প্রত্যেক বৈঠকেই উঠে এসেছে আর্থিক সহায়তার বিষয়টি। আর সব ক্ষেত্রেই এসেছে ইতিবাচক সাড়া। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ কোটি ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সংস্কারের যে কোনো উদ্যোগে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ প্রায় সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ড. ইউনূস ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গার বৈঠকে বাংলাদেশকে সংস্কারে খরচের জন্য সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে দুই বিলিয়ন ডলার দেবে একেবারে নতুন ঋণ হিসেবে আর বাকি দেড় বিলিয়ন ডলার দেবে আগের প্রকল্পগুলো চালিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে। মোটাদাগে সরকার এই অর্থ ডিজিটাইজেশন, তারল্য সহায়তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং পরিবহনে খরচ করতে পারবে।
আর আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েবার সঙ্গে করা বৈঠকেও এসেছে নতুন ঋণের আশ্বাস। এমন একসময় ড. ইউনূস আইএমএফপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যখন ঋণ দেওয়ার জন্য সংস্থাটির একটি মিশন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে আইএমএফ। এরপরও সংস্থাটি ড. ইউনূসের নেতৃত্বের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে চায়। আইএমএফ মনে করে, একটি বিশেষ সময়ে ক্ষমতায় আসা নতুন সরকার অনেক খাতে সংস্কার করবে। এ জন্য তারা পাশে থাকতে চায়। এ অর্থ বাজেট সহায়তা হিসেবে সরকার খরচ করতে পারবে।
তথ্য বলছে, চীন বাংলাদেশে একটি বড় বিনিয়োগের সোলার উৎপাদন প্লান্ট বসাতে চায়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সোলার প্যানেল বানিয়ে সারা বিশ্বে রপ্তানির লক্ষ্য দেশটির। এতে দেশে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বাড়বে। এতে সৃষ্টি হবে বহু লোকের কর্মসংস্থান। চীন মনে করে, সোলার প্যানেলে বাংলাদেশ বিশ্বের বড় রপ্তানিকারক হতে পারবে। আর নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা দেশটির বিপুল জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি জ্বালানি, পর্যটন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া ইউএসএআইডির প্রধান সামান্তা পাওয়ার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিইও মার্ক সুজম্যানও বাংলাদেশের পাশে থাকতে চান বলে জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম বলেন, এই ঋণগুলো না নিয়ে সরকারের কোনো উপায় ছিল না। কারণ, এটি ছাড়া রিজার্ভের পতন থামানোর আর কোনো উপায় ছিল না। শুধু তাই নয়, দেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এখান থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। ফলে এ ঋণগুলো পাওয়া গেলে ব্যাংকিং খাত একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে আসবে। সেইসঙ্গে রিজার্ভ বাড়বে এবং ডলারের দামও স্থিতিশীল হবে। এভাবেই দেশের পুরো অর্থনীতি একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে আসবে।
বিভিন্ন বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগামী তিন বছরে একটা প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে আইএসডিবি। বিভিন্ন খাতের জন্য এ অর্থ দেবে তারা। এ ছাড়া, ডিসেম্বরের মধ্যে বাজেট সহায়তা হিসেবে বাংলাদেশকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে এডিবি। সংস্থাটি ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি খাতে সংস্কারের জন্য দেবে ৫০ কোটি ডলার। এটা পাওয়া যাবে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে। এর বাইরে জ্বালানি খাতের উন্নয়নেও এডিবির কাছে ১০০ কোটি ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটি চলমান প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলারের বেশি উন্নয়ন সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। সব মিলিয়ে দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ১ হাজার ৩৬০ কোটি বা সাড়ে ১৩ বিলিয়নের বেশি ঋণ সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডলার সংকট কাটাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে কোনো মূল্যে ডলারের মজুদ বাড়াতে চাচ্ছে। নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। বরং রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়িয়ে ডলারের মজুদ বাড়াতে চাচ্ছেন। এরই মধ্যে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়েছে। ইতোমধ্যেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার আশ্বাসে বোঝাই যাচ্ছে যে, ড. ইউনূস সেখানে বেশ সমীহ পাচ্ছেন। তাকে সবাই আগে থেকে চেনেন, নতুন করে চেনানোর কিছু নেই। তবে এবার তিনি একটি বাড়তি পরিচয় নিয়ে সেখানে গেছেন। সেটি হলো বাংলাদেশের সরকারপ্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ড. ইউনূসের নেতৃত্বগুণে উচ্চপর্যায়ে একটি সাফল্য পাওয়া গেছে। এখন এই ঋণ পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। আর্থিক খাত, জ্বালানি খাত, রাজস্ব খাত, ব্যাংকিং নীতিমালাসহ বেশ কিছু জরুরি সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য একটি সময়োপযোগী কর্মসূচি তৈরি করে তাদের দিতে হবে। অর্থ বিভাগকে এখন এটি করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
খেলাপি ঋণের ৭০ শতাংশই ১০ ব্যাংকে
দেশের ৬১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের ৭০ দশমিক ৫৮ শতাংশই রয়েছে মাত্র ১০টি ব্যাংকে। গতকাল প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে প্রতিবেদনে এসব ব্যাংকের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ব্যাংকগুলোর শীর্ষ ঋণগ্রহীতারা খেলাপি হলেই ২৯টি ব্যাংক তাদের ন্যূনতম মূলধন সক্ষমতা বা ক্যাপিটাল টু রিস্ক-ওয়েটেড অ্যাসেটস রেশিও (সিআরএআর) বজায় রাখতে ব্যর্থ হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জুন প্রান্তিকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, শীর্ষ পাঁচ ও ১০ ব্যাংকের মধ্যে খেলাপি ঋণের ঘনত্ব আগের (মার্চ) প্রান্তিকের তুলনায় যথাক্রমে ২.৮৯ ও ২.৭৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। ২০২৪ সালের জুন শেষে, খেলাপি ঋণের ৫৪ শতাংশই ছিল শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ পাঁচ ও ১০টি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের এই ক্রমবর্ধমান কেন্দ্রীকরণ সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের জন্য উদ্বেগজনক।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখনকার প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেখা যাচ্ছে, সেটি আসলে এই খাতের ন্যূনতম পরিমাণ (মিনিমাম ফিগার)। প্রকৃত পরিস্থিতি সম্ভত আরও খারাপ।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ২০২৫ সালের জুন মাসের স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র উঠে আসবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী এপ্রিল মাস থেকে খেলাপি ঋণ (ক্লাসিফাইড লোন) নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। তখন নতুন আরও খেলাপি ঋণ তৈরি হবে, যেগুলো এখন নিয়মিত দেখাচ্ছে। একইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতির চিত্রও পরিষ্কার হবে।
ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ যথেষ্ট কি না- জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকগুলোকে এখন ফার্স্ট এইড দেওয়া হচ্ছে, যাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে না যায়। মূল চিকিৎসা এখনও শুরুই হয়নি। এর জন্য আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক চিত্র হাতে পাওয়ার পর মূল চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন প্রান্তিকে মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে খারাপ ও মন্দ (ব্যাড অ্যান্ড লস) ঋণের হিস্যা কিছুটা কমলেও এখনও এই শ্রেণির ঋণ সবচেয়ে বেশি।
মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে খালাপ ও মন্দ ঋণ ৭৯.৪২ শতাংশ, সাব-স্ট্যান্ডার্ড’ (নিম্নমান) ঋণ অংশ ১৭.৩৯ শতাংশ এবং ‘ডাউটফুল’ (সন্দেহজনক) ঋণে ৩.১৯ শতাংশ। খারাপ ও মন্দ শ্রেণির ঋণ সবচেয়ে বাজে ধরনের খেলাপি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের জুন শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২.১১ লাখ কোটি টাকা, যা মোট বকেয়া ঋণের ১২.৫৬ শতাংশ।
তবে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৮৫ লাখ কোটি টাকা, যা দেশের মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। ওই সময়ে মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬.৮৩ লাখ কোটি টাকা।
শীর্ষ ৩ ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে মূলধন ঘাটতিতে পড়বে ২৯ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে দেশের ২৯টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়বে এবং ন্যূনতম সিআরএআর বজায় রাখতে ব্যর্থ হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুন শেষে দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ১১টি ইতিমধ্যেই ১০ শতাংশ ন্যূনতম সিআরএআর বজায় রাখার বাধ্যবাধকতা পূরণে হয়েছে। বাকি ব্যাংকগুলোর শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে আরও ১৮টি ব্যাংক ঝুঁকিতে পড়বে।
অন্যদিকে, খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতির অবস্থাও আরও খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০টি ব্যাংকের সম্মিলিত সঞ্চিতি ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা।
এই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলো হচ্ছে: ন্যাশনাল ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক। এগুলোর মধ্যে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও ছয়টি বেসরকারি ব্যাংক।
খেলাপি ঋণ বেশি হলে প্রভিশন ঘাটতি হয়। প্রভিশন ঘাটতি বাড়লে ব্যাংকের নিট মুনাফা কমে যায়, যার ফলে কমে যায় শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশেও।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ভোজ্যতেলের দাম না বাড়ালে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হতো: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, সরবরাহ ঠিক রাখতে আমরা ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছি। বাস্তবতা মেনে নিয়ে এটি করতে হয়েছে। তা না হলে সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হতো। দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে যেত।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে ইআরএফ -প্রাণ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার কাজ হচ্ছে, পণ্যের সরবরাহ ও জোগানে ঘাটতি হলে আমদানি করে হলেও বাজারকে স্থিতিশীল করা। গতকাল আমরা ভোজ্য তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছি। এটাকে বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমরা বাড়িয়েছি। যদি এটা না বাড়াতাম তবে সরবরাহে বড় একটা ঘাটতি তৈরি হতো।
তিনি বলেন, ‘আমি রমজানের জন্য আপনাদের সুখবর দিতে চাই। ইনশা আল্লাহ আমি আশা করি, আগামী রমজানে প্রয়োজনীয় যেসব পণ্য রয়েছে যেমন: খেজুর ছোলা, তেল বা অন্যান্য পণ্য এগুলোর দাম বাজার স্থিতিশীল থাকবে অথবা নিম্নগামী থাকবে।’
তবে বাজারে আলুর দাম কমাতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এটা ঠিক যে আমরা আলুর দাম কমাতে পারিনি, এ ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা রয়েছে। এ বছর থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বছর আরও ভালো করব এই প্রতিশ্রুতি আমি আপনাদের দিচ্ছি।
বিশেষ খাদ্যপণ্যে সিন্ডিকেটের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেট নিয়ে যে আলোচনাটা হয়, অবশ্যই এটা ঠিক। তেল বা চিনির বাজারে মুষ্টিমেয় কিছু উৎপাদক বা আমদানিকারক এ ক্ষেত্রে কাজ করে। তার মধ্যে সর্ববৃহৎ যে, তিনি কিন্তু দেশে থেকে পালিয়েছেন। যিনি বাজারের বড় একটা অংশ ম্যানেজ করতেন। তিনি কিন্তু আট–দশটা ব্যাংকও মেনেজ করতেন। তিনি পালিয়ে যাওয়ার ফলে সরবরাহে এই যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে ওই তুলনায় বাজারে আপনারা রিঅ্যাকশন টের পাচ্ছেন না। কারণ আমরা দিনান্ত চেষ্টা করছি সরবরাহ ঠিক রাখতে। অবশ্যেই এ ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাচ্ছি।
আবারও সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি গতকাল তেলের দাম বাড়ানোর বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তটা না নিতাম, তবে দীর্ঘ মেয়াদে এটা ক্ষতির কারণ হয়ে যেত।
তিনি বলেন, প্রতিটি পাঁচজনের পরিবারে প্রতি মাসে ৫ লিটার তেল ব্যবহার হয়। দাম বাড়ানোর কারণে মাসে ৪০ টাকা খরচ বেড়েছে। অবশ্যই এটা কষ্টের। তবে আমরা চেষ্টা করছি অন্য কোনো পণ্যের মাধ্যমে এই খরচটা সমন্বয় করার। সেটা চিনি বা ডালের দাম কমিয়ে হতে পারে। তবে এটার জন্য আমাকে প্রচুর কাজ করতে হবে। যার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছি না, কারণ আমাকে অনেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকতে হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কর ফাঁকি দিলে পরবর্তী প্রজন্মকে ভুগতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কর ফাঁকি দিলে পরবর্তী প্রজন্ম সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। শিল্প সুরক্ষা ও রফতানি সক্ষমতা বাড়ানোর নামে দেয়া সুবিধা ধীরে ধীরে কমে আসবে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের মাল্টিপারপাস হলে ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সবাইকে ভ্যাট দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখন ট্যাক্স ফাঁকি দিলে পরবর্তী প্রজন্ম সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। ভ্যাটের হয়তো তাৎক্ষণিক সুবিধা পাবেন না, তবে পরোক্ষভাবে এর সুবিধা ঠিকই পাবেন। তাই সবাইকে ভ্যাট-আয়কর দিতে হবে।
এ সময় করদাতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সেবা নিশ্চিতের তাগিদ দেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সবাই একই হারে ট্যাক্স দেবে না। যার যার আয় অনুযায়ী দিতে হবে। হজের ক্ষেত্রে ট্যাক্স কমানো হয়েছে। ভ্যাট না দিলে এ ধরনের সেবা দিতে সমস্যা হবে। সেবা সুনিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য।’
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, এই মুহূর্তে ভ্যাট হার কমানোর কোনো সুযোগ নেই। ভ্যাট আদায় বাড়ানোর সুযোগ আছে, আদায় বাড়াতে হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে জনগণ ভ্যাট দিলে, অনেক ব্যবসায়ী ঠিকমতো জমা দেন না। এখানে প্রচুর কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের স্বস্তি দিতে অটোমেশন করা হচ্ছে। যাতে ঘরে বসেই কর দেয়া যায়, কর অফিসে আসতে না হয়। এটি করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ঋণ কমাতে হবে, যাতে পরবর্তী প্রজন্মের উপর ঋণের ভার কম থাকে। এজন্য ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হবে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারাও প্রবাসী আয় পাঠানোর মাধ্যমে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছেন। ভ্যাট আদায় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তাই আদায় বাড়াতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ও দুর্নীতি দমনে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৪ কোটি চোখকে ব্যবহার করতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের হাফিজুর রহমান বলেন, ভ্যাটের হার কমিয়ে ক্ষেত্র বাড়াতে হবে৷ ইপিজেডের মতো ব্যবসার শুরুতে অন্তত ১ বা ২ বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য কর ছাড় তুলে নিতে হবে। তবে সেটা একবারে না করে ধাপে ধাপে উঠিয়ে নিতে হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নির্দিষ্ট অঞ্চলে আয়কর রিটার্ন দাখিলের অনুরোধ এনবিআরের
ঢাকার অধিক্ষেত্রাধীন কোম্পানির তহবিল সমূহের আয়কর রিটার্ন নির্দিষ্ট অঞ্চলে দাখিলের জন্য অনুরোধ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মধ্যে করদাতা কোম্পানির বার্ধক্য তহবিল বা পেনশন তহবিল, আনুতোষিক তহবিল, স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল সমূহ রয়েছে।
সম্প্রতি বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কর কমিশনার মো. খাইরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকার অধিক্ষেত্রাধীন করদাতা কোম্পানির বার্ধক্য তহবিল বা পেনশন তহবিল, আনুতোষিক তহবিল, স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল সমূহের আয়কর রিটার্ন বিভিন্ন কর অঞ্চলে দাখিল করা হচ্ছে যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সূত্রোক্ত পত্রের মাধ্যমে জারীকৃত আদেশের লংঘন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ঢাকার অধিক্ষেত্রাধীন কোম্পানির তহবিল সমূহের আয়কর রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে এনবিআরের নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করার জন্য অনুরোধ করা হল।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পেঁয়াজ কাণ্ডে বিএডিসির দুই কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত
চলতি মৌসুমে দেশের কয়েকটি জেলায় বিতরণ করা পেঁয়াজ বীজের অঙ্কুরোদ্গম হার অস্বাভাবিক কম হওয়ায় কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া আরও একজনকে দায়িত্ব পালনে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস ও জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ ও অদক্ষতা পরিলক্ষিত হয়।
এ কাণ্ডে বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও উপপরিচালক শাহানা আক্তার সাময়িক বরখাস্ত এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে দায়িত্ব পালনে বিরতির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিএডিসির সরবরাহ করা ৩৪ টন পেঁয়াজের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৫৯ জেলায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এক কেজি করে বিনামূল্যে পেঁয়াজের বীজ পেয়ে ৩৪ হাজার কৃষকের মলিন মুখে ফুটেছিল চওড়া হাসি। প্রণোদনার এই বীজ যে এতটা যন্ত্রণার ঝাঁজ হয়ে ফিরবে, আন্দাজও করতে পারেননি চাষিরা।
ঠিক সময়ে, সঠিক নিয়মে বীজ বপন করার পরও ৯৫ শতাংশ পেঁয়াজ চারা মাটি ফুঁড়ে বের হয়নি। বীজ থেকে পেঁয়াজ না আসায় এ বছর হাজার হাজার চাষির স্বপ্ন মাঠে মারা। এ পরিস্থিতির জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদেরই দুষছে কৃষকরা।
কৃষকের অভিযোগ, সরকার যে পেঁয়াজ বীজ দিয়েছে, তা ভেজাল। বিএডিসির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারসাজিতেই এমন সর্বনাশ হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এভাবে নিম্নমানের ভেজাল বীজ কৃষকের হাতে তুলে দিচ্ছে।