সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঘাতক ড্রাইভারের সুষ্ঠ বিচার ও নিরাপদ সড়কসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীরা প্রায় ৪৫ মিনিট কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করেন।
সমাবেশ শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, ড্রাইভারসহ দোষীদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত মনির হোসেনের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হবে। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অতিদ্রুত সংস্কার করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে উই ওয়ান্ট জাস্টিস, মনির হত্যার বিচার চাই, নিরাপদ সড়ক চাই, দিয়েছি তো রক্ত আরও দিব রক্ত, অকাল মৃত্যু বন্ধ হবে কবে? মনির হত্যার ক্ষতিপূরণ চাই, আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসনের জবাব চাই; পুলিশের খামখেয়ালি, মানি না মানব না, নিরাপদ সড়ক চাই, ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন চাই, ট্রাফিকের অনিয়ম ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন দেখা যায়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এই দেশে দীর্ঘদিন আগে থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবী উচ্চারিত হয়ে আসছে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সড়ক এখনো শিক্ষার্থীদের জন্য বা কারো জন্যই নিরাপদ হয়নি৷ ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নে পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা এবং যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমরা আজকের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে দেশের ট্রাফিক আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই।
তারা আরো বলেন, আমাদের দেশে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলেও আমাদের সরকার এটি বন্ধে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। সড়কে যে মেধাবী শিক্ষার্থী মনিরের প্রাণ ঝরে গেছে তা আর ফেরত আসবে না। তার পরিবারের যে স্বপ্ন ছিল সেটাও আর পূরণ হবে না। তার পরিবারের কাকুতি মিনতি আমাদের অত্যন্ত ব্যথিত করেছে। আমরা চাই তার পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।
কুষ্টিয়ার চৌড়হাস থানার হাইওয়ে পুলিশ ইনস্পেক্টর আকুল চৌধুরী জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবির মধ্যে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ৩ দফা অবগত হয়েছি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে দ্রুত বাস্তবায়ন করব। যদিও ট্রাক ও সিএনজি চালককে আটক করা হয়নি, তবে সড়ক দুর্ঘটনা আইন ২০১৮ (৯৮/১০৫) মাধ্যমে ট্রাক ও সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে ২৬ তারিখ অজ্ঞাত মামলা (মামলা নং-১৯) করা হয়েছে। দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গতকাল বুধবার, দুপুর ১২ টায় ক্লাস শেষ হলে ক্যাম্পাসের দুপুর ২ টার বাসের অপেক্ষায় না থেকে পাবলিক বাসে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় মনির। বাস থেকে নেমে সিএনজি যোগে যাওয়ার সময় কুষ্টিয়া শহরে ট্রাকের সাথে সিএনজির সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে আহত হয় সে। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে সে মারা যায়।
এমআই