জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সরকারের রাজস্ব আয়ে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ১৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকা কম।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪৭ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ। রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে আয়কর ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, মূসক ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ও শুল্ক রয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
অর্থবছরের প্রথম ২ মাসে শুল্ক আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৪ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় শুল্কে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৬ হাজার ৭৪ কোটি টাকার শুল্ক আদায় হয়েছিল।
এছাড়া, আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ২১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১৬ হাজার ২৮ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় মূসকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৮ হাজার ২৬২ কোটি টাকার মূসক আদায় হয়েছিল।
আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। কম আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৪১ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয়করে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ১৩ হাজার ২২৪ কোটি টাকার আয়কর আদায় হয়েছিল।
সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, বিগত সরকারের বেঁধে দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অন্তর্বর্তী সরকার কাটছাঁট করবে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের প্রকৃত তথ্য ‘ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর’ প্রবণতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বের হয়ে এসেছে। ফলে রাজস্ব আদায় কিছুটা কম হলেও এখন প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। জুলাই আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শিল্প কারখানায় হামলার কারণে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে।
জানতে চাইলে সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত অর্থবছরের ন্যায় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার অবস্থা দেখছিনা। আগামীর কথা চিন্তা করে কর ফাঁকিরোধে ব্যাপক সংস্কার করতে হবে।