চীনা আমদানিকারকরা মূলত সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেন। তবে এ বাজার হিস্যায় ভাগ বসিয়েছে রাশিয়া। বিশেষত করোনাকালে মস্কো ও বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি বাণিজ্য সৌদি প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। জ্বালানি খাতের তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভ, ভরটেক্সা ও কেপলারের দেয়া উপাত্ত বিশ্লেষণ করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর চীনের বাজারে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রফতানি করেছিল সৌদি আরব। চলতি বছরের শুরু থেকে নভেম্বরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত (১ জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর) চীনের বাজারে প্রতিদিন গড়ে ১৭ লাখ ব্যারেলের কম অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছেন সৌদি রফতানিকারকরা। চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশের জন্য বিশেষ মূল্যছাড় দেয়ায় নভেম্বর নাগাদ সৌদি আরব থেকে বেইজিংয়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হারানো গতি ফিরে পেতে শুরু করেছে।
মূলত তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে চীনের বাজারে পুরনো অবস্থান ধরে রাখতে সৌদি আরব অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যছাড় দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর বিপরীতে বসে নেই রাশিয়া। দেশটিও চীনের বাজারে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছে। সৌদি আরবের সাথে তীব্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে চীনের বাজারে প্রতিদিন গড়ে ১৭ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছে রাশিয়া। সেই হিসাবে বছর শেষের আগেই সৌদি আরবকে হটিয়ে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ রফতানিকারকের তকমা বাড়িয়ে নিয়েছে দেশটি।
অন্যদিকে চীনের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানিতে রাশিয়া ও সৌদি আরবের পর তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ইরাক। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর সময়ে দেশটি চীনের বাজারে প্রতিদিন গড়ে ১২ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছে।
এ বিষয়ে ভরটেক্সার জ্বালানি বিশ্লেষক সেরেনা হুয়াং বলেন, করোনার কারণে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলো বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে। একদিকে রফতানি চাহিদায় পতন দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ক্রমাগত কমতির দিকে রয়েছে দাম। সব মিলিয়ে জ্বালানি তেলের রফতানিনির্ভর দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালে বেশির ভাগ দেশে যেখানে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ও আমদানি কমে গেছে, সেখানে ব্যতিক্রম চীন। বছরের শুরুর দিকে লকডাউনের সময় দেশটিতে অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে এসেছিল। পরিবহন খাত ছিল স্থবির। ওই সময় দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা কমলেও সময়ের সাথে সাথে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীন। অর্থনীতির গতি ফেরার পাশাপাশি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদাও চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। ফলে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বাড়িয়েছে চীন।
অর্থসংবাদ/ এমএস/ ১৪: ২৬/ ১১: ২৪: ২০২০