ক্যাটাগরি: রাজনীতি

শেখ হাসিনাকে লক্ষ্মণ সেনের সঙ্গে তুলনা করলেন জামায়াত আমির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এমন রাজনীতি করলেন আপনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হলো। ৮৫০ বছর আগে লক্ষ্মণ সেন পালিয়ে গিয়েছিল। অবশেষে পালিয়ে গেলেন আপনি।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের মাগফেরাত, আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৭ বছরে দেশের ১৫ কোটি মানুষ ছিল মজলুম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ জাতি বন্দিত্বের নিকট বাঁধা ছিল। মুখে ছিল তালা, হাতে হ্যান্ডকাপ, পায়ে ছিল বেড়ি। প্রত্যেকটি মানুষই ছিল জুলুমের শিকার।

জামায়াত আমির বলেন, শেখ হাসিনা যেটা কালিমা হিসেবে জাতির কপালে লিখে দিতে চেয়েছিলেন, জাতি এটা তার দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এমন রাজনীতি করলেন, বললেন উন্নয়নের রাজপথে দেশকে উঠিয়ে দিয়েছেন। বললেন বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এমন বানালেন আর এমন রাজপথ তৈরি করলেন, গাড়িটা রাজপথ দিয়ে চালিয়ে আপনি যেতে পারলেন না।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, এখানে কোনো ধর্ম নেই। এখানে সব ধর্মের মানুষ অংশ নিয়েছেন। সব ধর্মের মানুষই নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন। শহীদদের আমরা কোনো দলের সম্পত্তি বানাতে চাই না। এই শহীদরা জাতির সম্পদ, আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। তারা আজীবন জাতীয় বীর। আমরা তাদের সেই মর্যাদায় দেখতে চাই।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৭ বছর এরা (আওয়ামী লীগ সরকার) জাতির ওপর স্টিম রোলার চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আঘাত দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ওপর। আমাদের মতো মজলুম সংগঠন আর কেউ না। আর কারও এতগুলো নেতাকে হত্যা করা হয়নি। আর কারও বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয়নি। আর কারও বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাট করা হয়নি। আমাদের পর্দাশীল মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের নির্যাতন নিয়ে তিনি বলেন, যে সাংবাদিক ভাই বিদেশে বসে অন্যায়, জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, দেশে থাকা তার বোনকে টেনে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হয়েছে। কোনো ভাই ফেসবুকে কিছু লিখলে আজরাইল রূপে ডিবি তার ঘরে গেছে। তাদের হেনস্তা করা হয়েছে।

জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির আহসান হাবিব মাসুদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ ও ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।

বক্তব্য রাখেন ধনবাড়ীর নিহত একরামুল হক সাজিদের বাবা জিয়াউল হক, নিহত আশরাফুলের বোন সৈয়দা আক্তার, জেলা বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মনিরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মতিউল্লাহ, শহর শিবির সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার