সারাদেশ
চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে লাখো মানুষের ঢল
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে জুলুস শুরু হয়।
এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরীফের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ।
নবী প্রেমিদের এই জুলুস নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে পুনরায় একই রুটে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া ময়দানে গিয়ে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে মিলাদ মাহফিল ও যোহরের নামাজ শেষে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে জুলুস সমাপ্ত হবে।
এর আগে ফজরের নামাজের পর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, জিপে করে আলমগীর খানকাহ আসতে শুরু করেন ভক্তরা। অনেকেই দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে জুলুসে অংশ নিতে ছুটে এসেছেন। ইয়া নবী সালাম আলাইকা মুখে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে অংশ নিয়েছে শিশু থেকে বৃদ্ধরাও। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেই সুন্নিয়া মাদরাসা, বিবিরহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট এলাকা লোকে লোকারণ্য।
এদিকে জুলুস উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে চট্টগ্রাম। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তোরণ। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও রয়েছে। বসেছে খাবারসহ বিভিন্ন আইটেমের অস্থায়ী দোকানও। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা বিতরণ করছেন শরবত। জুলুসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
১৯৭৪ সাল থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনে নবী প্রেমীদের এই জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
টাঙ্গাইলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাত ১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু সড়কের ময়মনসিংহ লিংক রোডে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নান্নু খান জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহগামী একটি বাস রাত ১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ময়মনসিংহ লিংক রোডে পৌঁছায়। এ সময় কালিহাতী থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে সল্লা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
ছয় মাসে কুরআনের হাফেজ ১০ বছরের এমদাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছে ১০ বছরের মো. এমদাদুল ইসলাম। দ্রুত সময়ে ৩০ পারা কোরআন হিফজ করায় আনন্দিত এমদাদের পরিবার ও শিক্ষকরা। মো. এমদাদুল ইসলাম সুবর্ণচর উপজেলার থানারহাট এলাকার ব্যবসায়ী মো. এরশাদুল উদ্দিনের ছেলে। সে উপজেলার তামীরুল উম্মাহ হিফজুল কুরআন মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।
জানা গেছে, ব্যবসায়ী এরশাদুল উদ্দিনের দুই ছেলে এক মেয়ে। সাড়ে ৫ বছর বয়সে স্থানীয় মাদরাসায় নুরানি শাখায় মো. এমদাদুল ইসলামকে ভর্তি করান তিনি। তার দাদির স্বপ্ন ছিল এমদাদকে হাফেজ বানাবেন। এরপর তিন বছর নুরানি পড়ে এমদাদ। ২০২৪ সালে সে তামীরুল উম্মাহ হিফজুল কুরআন মাদরাসায় ভর্তি হয়। তারপর ৩ মাস নাজরানা বিভাগে পড়ার পর কোরআন সবক নেয় এমদাদুল ইসলাম। এরপর মাত্র ৬ মাসে পবিত্র কুরআন হিফজ (মুখস্থ) করে সে।
এমদাদুল বলে, আলহামদুলিল্লাহ! আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। আমার ওস্তাদরা আমাকে অনেক বেশি সহায়তা করেছেন। ওস্তাদদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি প্রথম ভেবেছিলাম অনেক কঠিন হবে। কিন্তু আল্লাহ আমাকে সহজ করে দিয়েছেন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন ভবিষ্যতে বড় একজন দ্বিনের দায়ী হতে পারি।
এমদাদের সহপাঠী মো. তাসকিন বলে, আমার বন্ধু এমদাদ মাত্র ছয় মাসে হিফজ শেষ করেছে জন্য আমরা খুব আনন্দিত। তার মাধ্যমে আমাদের মাদরাসার নাম উজ্জ্বল হয়েছে। আমরা দোয়া করি যেন এমন আরও অনেকেই হাফেজ হতে পারে। আল্লাহ যেন সবাইকে কবুল করেন।
এমদাদুল ইসলামের বাবা এরশাদুল বলেন, কোরআনের হাফেজ হয়ে এমদাদ আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। তার দাদির ইচ্ছা ছিল তাকে হাফেজ বানানো। সে তার দাদির স্বপ্ন পূরণ করেছে। তার জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে কবুল করে।
হেফজ বিভাগের শিক্ষক মো. আবু ইউসুফ বলেন, এমদাদুল এক প্রতিভাবান ছাত্র। ২০২৪ সালের শুরুতে সে আমাদের মাদরাসায় ভর্তি হয়। তারপর তিন মাস নাজেরা পড়ে। এরপর ছয় মাসেই সে পুরো ৩০ পারা কোরআন আয়ত্ত করতে পেরেছে। আলহামদুলিল্লাহ। কখনো ৫ পৃষ্ঠা, কখনো ৮ পৃষ্ঠা আবার কখনো ১০ পৃষ্ঠা সবক সে দিয়েছে। আমরা আশা করছি এ প্রতিভা কাজে লাগিয়ে সে একদিন বড় আলেম হবে।
তামীরুল উম্মাহ হিফজুল কুরআন মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মো. নাছরুল্লাহ বলেন, মাত্র ৬ মাসে আল্লাহর কালাম মুখস্থ করা সৌভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ এমদাদুলকে সেই মেধা দিয়েছেন। সে জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এটি আমাদের জন্য গর্বের। তাকে দেখে অন্য শিক্ষার্থীরাও ব্যাপক উৎসাহ পাচ্ছে। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য এবং এমদাদুলের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করছি। সে যেন আন্তর্জাতিকভাবে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে পারে সেই দোয়া করি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সমবায় ব্যাংকের ৭৩৯৮ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করে দেন আ. লীগ নেতা
সমবায় ব্যাংকে সোনা জমা বা বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন সাধারণ গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের সেই সম্পদ ভুয়া মালিক সাজিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। তাঁর নাম মহিউদ্দিন আহমেদ, যিনি যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এখন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
নথিপত্র বলছে, সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময় ২০২০ সালে মহিউদ্দিন আহমেদ মোট ৭ হাজার ৩৯৮ ভরি সোনা বিক্রি করে দেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যাংকটির ২ হাজার ৩১৬ জন গ্রাহক।
সোনা বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা তদন্ত শুরু করেছিল পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, যাদের অধীনে সমবায় ব্যাংক পরিচালিত হয়। সমবায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সেই তদন্ত প্রভাব খাটিয়ে থামিয়ে দেন মহিউদ্দিন আহমেদ। ২০২১ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সোনা বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনায় মামলা করে। মামলার এজাহারে ৯ আসামির মধ্যে মহিউদ্দিনের নাম ছিল ১ নম্বরে। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিযোগপত্র থেকে নিজের নামটিও বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহিউদ্দিন আহমেদ আত্মগোপনে চলে গেছেন।
সমবায় ব্যাংকে গচ্ছিত সোনা বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়টি আবার সামনে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার ও সমবায় উপদেষ্টা হাসান আরিফের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। গত রোববার কুমিল্লার কোটবাড়ীতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সমবায় ব্যাংকের অবস্থা দেখতে গিয়ে জানলাম, ১২ হাজার ভরি (দুদকের মামলায় ৭ হাজার ৩৯৮ ভরি) সোনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাঁরাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার মন্তব্যের পর নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সমবায় ব্যাংকে সোনা বন্ধক রাখা গ্রাহকদের মধ্যে। গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার মতিঝিলে সমবায় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনেক গ্রাহক জড়ো হন। অনেকে বন্ধক রাখা সোনা দেখানোর দাবি করেন।
সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আহসানুল গনি বলেন, এটা ঠিক যে ২০২০ সালে বন্ধককৃত সোনা বিক্রি নিয়ে অনিয়ম হয়েছে। দুদকের প্রতিবেদনেও তা উঠে এসেছে।
সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন গ্রাহকদের এই সোনা বিক্রি করেছেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১০০ কোটি টাকা।
যেভাবে জালিয়াতি
সমবায় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্ত কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক নয়। এটি বিশেষায়িত ব্যাংক। পরিচালিত হয় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনে।
সমবায় ব্যাংকে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া যায়। প্রতি ভরি খাঁটি সোনার (খাদ বাদে) বিপরীতে এখন ৫৫ হাজার টাকা ঋণ পাওয়া যায়। সুদের হার ১৭ শতাংশ। বাড়তি ১ শতাংশ বিমা খরচ দিতে হয়। ঋণ নেওয়ার পর সুদ ও আসল টাকা পরিশোধ করে সোনা ফেরত নিতে পারেন গ্রাহকেরা। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো গ্রাহক নির্ধারিত সময়ে ঋণের টাকা শোধ করতে না পারলে বন্ধক রাখা সোনা নিলামে বিক্রি করা যায়।
দুদকের মামলার এজাহার বলছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর সময়ে সমবায় ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বন্ধক রাখা সোনা নিলামে না তুলে ভুয়া মালিক সাজিয়ে বিক্রি করে দেন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করা হয়। মহিউদ্দিন আহমেদকে জালিয়াতিতে সহায়তাকারীদের একজন সমবায় ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) নুর মোহাম্মদ। তিনি মহিউদ্দিন আহমেদের ভাগনে। দুদকের মামলায় নুর মোহাম্মদ ৬ নম্বর আসামি। মামলাটি এখন বিচারাধীন।
মহিউদ্দিন আহমেদ সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন ২০০৯ সালে। তখন তিনি যুবলীগের নেতা ছিলেন। সমবায় সমিতি আইনে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের তিন মেয়াদের বেশি থাকার সুযোগ নেই। সে হিসাবে চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁর ২০১৮ সালে বিদায় নেওয়ার কথা। যদিও ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। ২০২২ সালে তিনি সমবায় ব্যাংক থেকে বিদায় নেন।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২০ সালে মতিঝিলে সমবায় ব্যাংকের সদর দপ্তরে জমা রাখা সোনা ফেরত নিতে অনেক গ্রাহক আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪৫৫টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে দুদক। তাতে দেখা যায়, ৩৩৫টি আবেদনপত্রে মূল নথিপত্রের সঙ্গে স্বাক্ষর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মিল নেই। অর্থাৎ, ভুয়া মালিক সাজিয়ে সোনা ফেরত নেওয়া হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। পরে সেই সোনা বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ব্যাংকের প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করে বাকি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
জালিয়াতি করে ঢাকা সমবায় অফিসে বিক্রি করা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৪ ভরির কিছু বেশি সোনা। অন্যদিকে সমবায় ব্যাংকের সদস্য প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট লিমিটেড সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে। সেখানকার সোনা পুনঃ বন্ধক রাখে সমবায় ব্যাংক। দুদকের মামলার এজাহার বলছে, নারায়ণগঞ্জ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট লিমিটেডের ৫ হাজার ৮০৩ ভরির কিছু বেশি সোনা একই কৌশলে বিক্রি করে দেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
দুদকের মামলার এজাহার অনুযায়ী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ২ হাজার ৩১৬ জন গ্রাহকের ৭ হাজার ৩৯৮ ভরি সোনার তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল ৪০ কোটি টাকার বেশি। এর বিপরীতে ঋণের সুদ ও আসল ছিল প্রায় ২৯ কোটি টাকা। এই টাকা পরিশোধ দেখিয়ে ১১ কোটি টাকা ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট লিমিটেডে ২০১১ সালে আট ভরি সোনা বন্ধক রেখে ৯৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন রাজধানীর স্বামীবাগ এলাকার বাসিন্দা কাকলি জাহান। পরে ঋণের সুদ ও আসল বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা দিয়ে সোনা ফেরত আনতে গেলে তাঁকে তা দেওয়া হয়নি। এক বছর ধরে ঘুরছেন তিনি।
কাকলি জাহানের জমা রাখা সোনার এখনকার বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তিনি সমিতিতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন। কোনোটাই ফেরত পাচ্ছেন না। গতকাল বিকেলে তিনি বলেন, ‘সমবায় ব্যাংকে আমার কিছু সোনা বন্ধক রাখা আছে। সমবায় উপদেষ্টার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, সেটাও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।’
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
গণত্রাণ কর্মসূচির আয়-ব্যয়ের হিসাব দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গৃহীত গণত্রাণ কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ অডিট ঘোষণা করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী গণত্রাণ কর্মসূচিতে মোট ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা উত্তোলন হয়েছিল এবং ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে দুটি ব্যাংক একাউন্টে মোট ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা জমা রয়েছে।
মঙ্গলবার (০১ অক্টোবর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অডিট প্রকাশ করা হয়। অডিট ঘোষণা করেন পি কে এফ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড একাউন্টের পার্টনার এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অডিটর গোলাম ফজলুল কবির।
অডিট প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্যার্তদের জন্য নগদ ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭২৫ টাকা, ব্যাংক একাউন্টে ৭৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১৬ টাকা এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাওয়া গেছে ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৯ টাকা। এছাড়া, ডলার, স্বর্ণ, প্রাইজবন্ড ও অন্য জিনিস বিক্রি বাবদ পাওয়া যায় ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১০ টাকা। সর্বমোট আয় ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা।
অন্যদিকে, ব্যয় হিসেবে রিলিফ কেনা বাবদ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ টাকা, অন্য সংগঠনকে ডোনেশন বাবদ ১২ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা, পরিবহন খরচ বাবদ ৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ভলান্টিয়ারদের পেছনে খরচ বাবদ ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ টাকা, প্যাকেজিং পণ্য কেনা বাবদ ১১ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকা এবং অন্য খরচ ৩ হাজার ১২০ টাকা। এতে মোট খরচ হয় ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। তবে বর্তমানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুটি ব্যাংক একাউন্টে জমা আছে ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম ফজলুল কবির বলেন, আমাদের গত ১০ সেপ্টেম্বর অডিটের জন্য ডাকা হয় যা ৩০ সেপ্টেম্বর আমরা শেষ করি। সব মিলিয়ে ২০ দিন সময় লাগে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাক্তিগত একাউন্টে টাকা নিয়েছিলো। পরে ব্যক্তিগত একাউন্ট তৈরি করে সেখানে ট্রান্সফার করা, এছাড়া ২ লক্ষ টাকার কয়েন আমাদের হিসাব করতে হয়, এরপর স্ক্র্যাপ, স্বর্ণ বিক্রি করেও অর্থ পাওয়া যায়, যা পরে যোগ হয়। আয়-ব্যয়ের হিসেব স্বচ্ছ করতেই মূলত হিসেব দিতে দেরি হয়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়িতে গণপিটুনিতে সোহেল রানা নামে এক শিক্ষক নিহতের জেরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ কারণে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে এই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে।
স্থানীয়রা জানান, খাগড়াছড়ির সদরে দুপুরে সোহেল রানা নামে এক কলেজশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল রানা খাগড়াছড়ির টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। এ ঘটনার জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।
তিনি জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
এমআই