ক্যাটাগরি: অর্থনীতিব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ৪ সিদ্ধান্তে খুলছে রিজার্ভ-জট

ডলার সংকটে গত কয়েকবছর ধরে অসহনীয় হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। ধরা-বাঁধা আমদানি, পরিবহনে বাড়তি ব্যয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি- সবকিছুর পেছনে প্রধান দায় ছিল রিজার্ভ সংকট। অপরিকল্পিত চলন নীতি, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে গিয়ে রিজার্ভের ডলার প্রায় নাই করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পেছনে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফের জোগসাজশকে অনেকটা দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর তার সাহচর্যে থাকা উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা জনগণের তোপে পদত্যাগ শুরু করেন। প্রাক্তন গভর্নর আব্দুর রউফের পদত্যাগের পর অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে মাত্র ৪ সিদ্ধান্তে রিজার্ভের জট খুলতে শুরু করেছেন নতুন এ গভর্নর। তাতে রিজার্ভের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বাণিজ্যেও কিছুটা অগ্রগতি দেখা গিয়েছে।

জানা যায়, নতুন গভর্নর দায়িত্ব পাওয়ার পরেই বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা কমাতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি বাণিজ্য-ভিত্তিক অর্থপাচারে রেখেছেন কঠোর নজরদারি। পাশাপাশি ক্রলিং পেগ এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেমের অধীনে ১১৭ টাকার মিড রেটে আড়াই শতাংশ ব্যান্ড চালু করেন, যার ফলে ব্যাংকগুলো ডলার লেনদেনের জন্য সর্বোচ্চ ১২০ টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি ন্যূনতম পর্যায়ে কমিয়ে এনেছে এবং সরকারি সংস্থাগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্য না নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারি এলসির (ঋণপত্র) জন্য ডলারের ব্যবস্থা করতে বলেছে।

এসব পদক্ষেপে এবং ব্যাংকগুলোকে দেওয়া আশ্বাসের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোও স্থানীয় ব্যাংকগুলোতে ক্রেডিট লাইন বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভরসা পেয়েছে। তাতে বাংলাদেশের আন্তঃব্যাংক ফরেক্স মার্কেটে এখন গড়ে ৫০ মিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত থাকছে।

এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নেওয়া এসব উদ্যোগ দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছে, যার ফলে দ্রুত স্বস্তি আসার পাশাপাশি সামনের দিনগুলোতে আরও স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীর দিনগুলোতে দেশের রিজার্ভ এবং বাণিজ্যিক খাতে উন্নতি আসবে। তাতে মূল্যস্ফীতির বোঝা কমে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি নামতে পারে।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার