আন্তর্জাতিক
পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পাকিস্তান, আশঙ্কায় ভারত

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস আতঙ্ক। এরই মধ্যে পাকিস্তানে পঙ্গপালের আক্রমণে নাকাল দেশটি। পঙ্গপাল ঠেকাতে ইমরান সরকার ইতমোধ্যে জরুরী অবস্থা জারি করেছে দেশটিতে। ঝাঁকবদ্ধ পতঙ্গ পঙ্গপালের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। নষ্ট হচ্ছে দেশটির বিস্তৃত অঞ্চলের তুলা, গম ও ভুট্টার আবাদ। পূর্বাঞ্চলে পতঙ্গটির আক্রমণের মুখে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান সরকার। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ইতোমধ্যে ঢুকে পড়েছে পতঙ্গটি। সে দেশের কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, আরও বিস্তৃত এলাকায় ঢুকে পড়তে পারে তারা।
সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে ব্যাপক আকারে পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়ে পাকিস্তান। এইধাপে ২০১৯ সালের মার্চে পাকিস্তানে প্রথম পঙ্গপালের আক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে এটি সিন্ধু, দক্ষিণ পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনওয়ালা প্রদেশের নয় লাখ হেক্টর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় কোটি কোটি রুপি মূল্যের ফসল ও গাছপালা। ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফিরদাউস আশিক আওয়ান বলেন, ‘দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে পঙ্গপালের সবচেয়ে তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছি আমরা। এই হুমকি মোকাবিলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’।
খাদ্য-নিরাপত্তামন্ত্রী মাখদুম খসরু বখতিয়ার বলেন, বর্তমানে পঙ্গপালের অবস্থান পাকিস্তান-ভারত সীমান্তবর্তী চলিস্তান মরুভূমিতে। গত বছরের জুনে এই পঙ্গপাল ইরান থেকে পাকিস্তানে আসে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পঙ্গপালের আক্রমণ অভূতপূর্ব এবং সতর্কতামূলক’।
ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছে; ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকায় পঙ্গপালের আক্রমণে মানবিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। দিজিবুতি ও ইরিত্রিয়ায় ৩৬ হাজার কোটি পতঙ্গের আক্রমণে খাদ্য নিরাপত্তায় অভূতপূর্ব হুমকি তৈরি হয়েছে।
নতুন ধরনের পঙ্গপালের দশ লাখ পতঙ্গের একটি ঝাঁক এক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে ফেলতে পারে। আগামী এপ্রিলে এই পঙ্গপাল নতুন করে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ওই সময়কেই পঙ্গপালের বংশবৃদ্ধির সময় বলে বিবেচনা করা হয়।

পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তামন্ত্রী মাখদুম খসরু বখতিয়ার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পঙ্গপালের উপস্থিতির কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানে অবস্থানের কিছুদিন পরই পতঙ্গগুলো ইরানে ফিরে যায় তবে তাপমাত্রা কম থাকায় এখনও পাকিস্তানে থেকে গেছে সেগুলো।
এদিকে ২ ফেব্রুয়ারি(রবিবার) রাতে ফাজিলকা জেলা দিয়ে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে প্রবেশ করে পঙ্গপালের বিশাল একটি ঝাঁক। তিন কিলোমিটার বিস্তৃত ও এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই ঝাঁকটিকে ঠেকাতে রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর ১৩ ঘণ্টা ব্যাপী কাজ করে। এরআগে পতঙ্গটি পার্শ্ববর্তী ভারতের রাজস্থান রাজ্যে বিস্তৃত এলাকার ফসল নষ্ট করে।
পাঞ্জাবের পুরো রাজ্য প্রশাসন পঙ্গপাল ঠেকানোর চেষ্টায় নেমেছে। সোমবার কৃষি বিভাগের কর্মীরা অবশ্য দাবি করেছেন, পঙ্গপাল আর ফসলের ক্ষতি করতে পারবে না। হুমকি ঠেকানো গেছে।
পাঞ্জাবের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইউ), সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন, ও কৃষকেরা পঙ্গপাল মোকাবিলায় অংশ নেয়। পাঞ্জাবের কৃষি বিভাগের পরিচালক সতন্তর কুমার আইরি বলেন, পতঙ্গ ধ্বংস করতে চারশো থেকে পাঁচশো টন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান ছাড়াও সৌদি আরবও পঙ্গপালের আক্রমণের মুখে পড়েছে। সংবাদমাধ্যম বলছে, পতঙ্গটির আক্রমণ দেশটিতে দিনকে রাত বানিয়ে তুলছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
এশিয়ার কয়লা আমদানি রেকর্ড উচ্চতায়

মে মাসে এশিয়ার বাজারে তাপীয় কয়লা (থার্মাল কোল) আমদানি রেকর্ড উচ্চতা স্পর্শ করেছে। দাম কমে যাওয়ার কারণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। বৃহৎ দুই আমদানিকারক দেশ চীন ও ভারতের চাহিদা বেড়েছে উল্লেখজনক। মে মাসে ব্যবহৃত কয়লার প্রত্যাশিত মোট পরিমাণ ৭ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার টন অতিক্রম করতে যাচ্ছে, যা ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। এমনটাই জানিয়েছে বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার।
মূলত এপ্রিল ও মার্চজুড়ে চাহিদা শক্তিশালী থাকায় মে মাসে সরবরাহ বেড়েছে। তালিকায় মার্চ দ্বিতীয় ও এপ্রিল তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। সমুদ্রপথে কয়লা আমদানিতে খরচ কমে যাওয়ার কারণে প্রভাব পড়েছে দামের ওপর। এজেন্সি আরগুসের দাবি অনুযায়ী, কয়লার বর্তমান দাম প্রতি টন ৯৬ ডলার ৫৪ সেন্ট। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর প্রথমবারের মতো ১০০ ডলারের নিচে নেমেছে দাম। ইন্দোনেশিয়ায় কয়লার দাম কমে প্রতি টন ৬৫ ডলার ২৮ সেন্টে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। এর কিছুদিন পরই রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের জেরে দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি টন ১২০ ডলার ৮৬ সেন্টে। কয়লার সবচেয়ে বড় দুই আমদানিকারক দেশ চীন ও ভারত। কিন্তু আমদানিকারক হিসেবে পিছিয়ে নেই এশিয়ার বাকি দেশগুলো। প্রথম সারিতেই রয়েছে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার নাম।
চীনের কয়লা আমদানি মে মাসে ২ কোটি ৮২ লাখ ৪০ হাজার টন অতিক্রম করবে বলে প্রাক্কলন দিয়েছে কেপলার। এপ্রিলে আমদানি ছিল ২ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টন ও মার্চে আমদানি ছিল ২ কোটি ৮৪ লাখ টন। গত তিন মাসে আমদানির পরিমাণ ছিল ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ। চলতি বছরের মে মাসে বছরওয়ারি আমদানি বেড়েছে ১৩৭ শতাংশ।
চীন মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই কয়লা আমদানিতে ঝুঁকেছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে চীনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সার্বিকভাবে ২০২২ সালের প্রথম চার মাসের তুলনায় ৮ হাজার ৩০০ কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় কয়লা আমদানিকারক দেশ ভারতেও বেড়েছে আমদানি। মে মাসে দেশটি কয়লা আমদানি করেছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার টন, যা এপ্রিলের তুলনায় বেশি। এপ্রিলে ভারতের কয়লা আমদানি ছিল ১ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার টন, যা গত বছরের জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।
তাপ, আবহাওয়া ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই ভারতের আমদানি বৃদ্ধির প্রধান কারণ। দাম কম থাকার অর্থ কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আরো বেশি আমদানির প্রতি ঝোঁক বাড়ানো। এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোয়ও বাড়ছে কয়লা আমদানির প্রবণতা। ভিয়েতনাম ২৯ লাখ টন কয়লা আমদানি স্পর্শ করতে যাচ্ছে মে মাসে। এপ্রিলে আমদানি ছিল ২০ লাখ ৯০ হাজার টন, যা ২০২০ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ। এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ কয়লা আমদানিকারক দেশ জাপান। দেশটিতে মে মাসে ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টন কয়লা আমদানি করার প্রাক্কলন করেছে কেপলার। এপ্রিলে আমদানি ছিল ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টন ও মার্চে আমদানি ছিল ১ কোটি ৬ লাখ টন। দাম কমে যাওয়ার বিপরীতে চাহিদা বৃদ্ধি এশিয়ার কয়লা বাজারে নতুন গতি সঞ্চার করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বকেয়া পরিশোধ না করায় পাকিস্তান এয়ারলাইনসের বিমান জব্দ করলো মালয়েশিয়া

বকেয়া পরিশোধ না করায় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস কর্পোরেশন (পিআইএ)-এর একটি যাত্রীবাহী বিমান জব্দ করেছে মালয়েশিয়া। গত সোমবার (২৯ মে) কুয়ালালামপুরে এই বোয়িং ৭৭৭ মডেলের বিমানটি জব্দ করা হয়।
মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিমানটি লিজ নিয়েছিল পাকিস্তান। পিআইএ’র মুখপাত্র আবদুল্লাহ হাফিজ খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইজারাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার একটি আদালত বিমানটিকে জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে বিমান জব্দ করায় যাত্রীরা কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে পড়েন। যাত্রীদের ফেরত আনার জন্য আলাদা একটি বিমান পাঠানো হয়েছে।
আবদুল্লাহ হাফিজ খানের ভাষ্যে, ইতোমধ্যেই বকেয়া অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। বিমানটি ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটি আইনি পদক্ষেপ নেবে। গত দুই বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে পিআইএ’র বিমান জব্দ করা হলো।
করাচিভিত্তিক গণমাধ্যম এআরওয়াই এর তথ্যমতে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসেও বকেয়া সংক্রান্ত ইস্যুতে কোম্পানিটির একটি বিমান জব্দ করেছিল মালয়েশিয়া।

ঐ সময় ক্রুসহ বিমানের যাত্রী ছিলেন মোট ১৭৩ জন। পরবর্তীতে কূটনৈতিক আলোচনায় মাধ্যমে কুয়ালালামপুরকে বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর পাকিস্তানকে বিমানটি ফেরত দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে লিজিং কোম্পানি হিসেবে এয়ারক্যাপ হোল্ডিংস এনভি (AerCap Holdings NV)-এর নাম জানিয়েছেন হাফিজ খান। তবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোম্পানিটির মুখপাত্র কোনো সাড়া দেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে পাইলটদের লাইসেন্স জালিয়াতির অভিযোগে পিআইএ’র ফ্লাইট পরিচালনা নিষিদ্ধ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এরপর থেকেই কোম্পানিটি নিজেদের আর্থিক সমস্যা সমাধানে হিমশিম খাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
মার্কিন ঋণসীমা বাড়ানোয় কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

মার্কিন ঋণসীমা বাড়ানোর ঘোষণায় আন্তর্জাতিক বাজারের ঝুঁকি অনেকটাই কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে। ফলে কয়েক দফা বাড়ার পর কমেছে গুরুত্বপূর্ণ এ জ্বালানির দাম। ভবিষ্যৎ সরবরাহ বাজারে ব্রেন্টের দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমে ব্যারেল প্রতি ৭৬ ডলার ৪৮ সেন্টে দাঁড়িয়েছে।
উৎপাদনকারী দেশগুলো এর মধ্যে নানা ধরনের সিদ্ধান্ত পৃথকভাবে জানিয়েছে। অনেকেই মার্কিন সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। তবে দামবিষয়ক অনিশ্চয়তা ওপেক সম্মেলন শেষেই বোঝা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে (ডব্লিউটিআই) বা মার্কিন জ্বালানি আদর্শে তেলের দাম ৩২ সেন্ট কমে ব্যারেল প্রতি দাঁড়িয়েছে ৭২ ডলার ২৫ সেন্ট। যদিও মার্কিন ছুটির দিন হওয়ার কারণে কোনো স্থির সিদ্ধান্ত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের প্রধান জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী দেশ। কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ঋণসীমা বাড়ানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
বিপরীতে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রিপাবলিকান স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি বিল পাস হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন। যদিও দেশ অর্থনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা এ বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। ফিলিপ নোভার বিশ্লেষক প্রিয়াংকা সাচদেব বলেন, ‘রিপাবলিকান পার্টি ও আইনপ্রণেতাদের পক্ষ থেকে বৈপরীত্যপূর্ণ বিবৃতি বিনিয়োগকারীদের দ্বিধাগ্রস্ত করে রেখেছে।’
ঋণের শেষ তারিখ ছিল ৪ জুন, যা কাকতালীয়ভাবে ওপেকভুক্ত দেশ ও তাদের মিত্রদের সম্মেলনের দিন। ওপেক ও তাদের মিত্রদের একসঙ্গে ওপেক প্লাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দাম কিছুটা নিচে আসার প্রতিক্রিয়ায় তারা কি তাদের উৎপাদন স্থির রাখবে নাকি বাড়াবে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি।

সম্প্রতি ফুজিতোমি সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের বিশ্লেষক তোশিতাকা তাজাওয়া বলেছেন,‘বিনিয়োগকারীরা তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছেন। অপেক্ষা করছেন অপেক প্লাসের অধিবেশন থেকে ঘোষিত সিদ্ধান্তের। কারণ এখন পর্যন্ত উৎপাদনকারীদের পক্ষ থেকে নানা রকম সিদ্ধান্ত শোনা যাচ্ছে।’ এদিকে সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান গত সপ্তাহে সতর্ক করে দিয়েছিলেন জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার ব্যাপারে, যা ওপেক প্লাস সদস্যদের জ্বালানি তেল উৎপাদন কিছুটা কমিয়ে আনার পূর্বাভাস দেয়।
অবশ্য রাশিয়ার জ্বালানি তেলবিষয়ক মন্ত্রণালয় উৎপাদন পরিবর্তন না করার ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক। এপ্রিলে সৌদি আরব ও অন্যান্য সদস্য দেশ ঘোষণা করেছিল, জ্বালানি তেলের উৎপাদন আরো এক দফায় প্রতিদিন ১২ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনা হবে। ফলে সার্বিকভাবে উৎপাদন কমবে ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল। হাইতং সিকিউরিটিজের বিশ্লেষকরা বলেছেন, এপ্রিলে স্বেচ্ছা উৎপাদন ঐচ্ছিকভাবেই কমেছে। বিনিয়োগকারীরা বাড়তি সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কেমন ঘোষণা আসে সেজন্য অপেক্ষায় তারা। চীনা উৎপাদনকারী ও পরিষেবা খাতের উপাত্তেও জ্বালানির চাহিদা সংকুচিত হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের ঋণমান কমালো মুডিস

বাংলাদেশের সরকারের ঋণমান বা বিদেশি ঋণ পরিশোধ সম্পর্কিত সক্ষমতার ঘাটতি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ঋণমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিসের (মুডিস) সূচকে বাংলাদেশের ঋণমান বি৩ থেকে নেমে হয়েছে বি১, অর্থাৎ দুই ধাপ কমেছে।
সংস্থাটির সাম্প্রতিক মূল্যায়নে বাংলাদেশের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা ও তারল্যঝুঁকির পাশাপাশি চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমানে বিদেশি ঋণ পরিশোধের যে সক্ষমতা- তার নিরিখে বাংলাদেশ সংস্থাটির ঋণমান সূচকে বি৩’র পরিবর্তে বি১ ক্যাটাগরিতে অবস্থানের জন্য উপযুক্ত।
বস্তুত চলমান ডলার সংকট এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস অব্যাহত থাকায় দিন দিন বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছে। এই চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার, কিন্তু তার জেরে ইতোমধ্যে দেশে জ্বালানির ঘাটতি শুরু হয়েছে।
আবার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও সরকার যে আমদানি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে— ব্যাপারটি এমনও নয়। মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিসের মতে, একাধিক বিনিময় হার চালু এবং সুদের হার ঠিক করে দেওয়ার মতো অপ্রচলিত যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেসব দেশটি প্রত্যাহার করেনি এখনও। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সুস্থির হতে পারছে না।
মূল্যায়নের শেষ পর্যায়ে মুডিস জানিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার, তার সাপেক্ষে দেশটি কর আদায়ের হার বেশ নিম্ন এবং বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার ঘন ঘন অবমূল্যায়ন ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।

মুডিসের মূল্যায়নে অবশ্য অর্থনীতির এই সংকট নিরসনে পরোক্ষ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি আশা করছে, বিদেশি অর্থায়ন বৈদেশিক ও রাজস্বসংক্রান্ত চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে।
তবে চাপ কমলেও মহামারির পূর্বের পরিস্থিতির তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি সামনের দিনগুলোতে দুর্বল থাকবে এবং উঁচু মাত্রার ঋণের কারণে রাজস্বেও ঘাটতি থাকবে বলে উল্লেখ করেছে মুডি’স। বিশেষ করে মুডিস মনে করছে, যেসব রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়ে সুফল পেতে আরও অনেক বছর লেগে যাবে।
অর্থনীতি চাপের মধ্যে থাকলেও প্রায় নিয়মিত কম সুদে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থায়ন ও সহায়তা পেয়ে পাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক ও রাজস্ব খাতে যতখানি চাপ হওয়ার কথা, তা ঘটবে না বলে আশা জানিয়েছে মুডিস।
বাংলাদেশের ঋণভার একই পরিস্থিতিতে থাকা অন্যান্য দেশের তুলনায় মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে এবং কম সুদে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ নেওয়ার কারণে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মুডিসের মূল্যায়নে।
অর্থসংবাদ/এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
টয়োটার বিক্রি বেড়েছে পাঁচ শতাংশ

গত এপ্রিলে টয়োটা মোটর করপোরেশনের বৈশ্বিক বিক্রি এক বছরের আগের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ বেড়েছে। এর পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে জাপান-চীনে হাইব্রিড ও পেট্রোল চালিত গাড়ির জোরালো চাহিদা। খবর রয়টার্স।
বিদেশে ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) বিক্রির বাড়বাড়ন্তও দেখেছে এ জাপানি অটোমেকার। যা আগের বছরকে ছাড়িয়ে গেছে।
এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাপী আট লাখ ৮৬৩টি গাড়ি বিক্রি করেছে টয়োটা, যার মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল লেক্সাস ব্র্যান্ড। বিক্রি গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময় মহামারীজনিত যন্ত্রাংশ সরবরাহের ঘাটতির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
জাপানে প্রিয়ুসের মতো নতুন হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ। যা দেশীয় বাজারে বিক্রি হওয়া এক লাখ ২৫ হাজার ৩২৬টি গাড়ির অর্ধেকেরও বেশি। এছাড়া সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ বিক্রি বেড়েছে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ।
এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় গত এপ্রিলে চীনে টয়োটার বিক্রি বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ। মোট এক লাখ ৬২ হাজার ৫৫৪ ইউনিট। অর্থাৎ, মহামারীর আঘাত কাটিয়ে বাজারে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে।

এপ্রিল মাসে অটোমেকারটি বিশ্বব্যাপী আট হাজার ৫৮৪ ব্যাটারি ইভি বিক্রি করেছে, যার মধ্যে লেক্সাস ব্র্যান্ডও রয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো মাসে টয়োটার মোট বিক্রির এক শতাংশের বেশি হিস্যা দখলে নিল ইভি।
অর্থসংবাদ/এসএম