ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

ক্রেডিট কার্ডসহ বাড়বে সব ধরনের সুদহার

দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরেক দফা নীতি সুদহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। নীতি সুদহার বাড়লে ক্রেডিট কার্ডসহ অন্যান্য সুহারও বেড়ে যাবে।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকার্স সভায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এমন আভাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। বৈঠকে থাকা একাধিক ব্যাংকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে গভর্নর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১২০ টাকার বেশি ডলার বিক্রি না করার পরামর্শ দেন।

রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এই মাসেও যদি বাড়ে, তাহলে চলতি সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মুদ্রানীতির বৈঠক করে নীতি সুদ হার আরও বাড়ানো হবে। সেক্ষেত্রে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হতে পারে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নীতি সুদহার বাড়াতে থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের এমন সতর্ক বার্তা দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।

বৈঠক শেষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের মুদ্রা বাজার এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এখনো সম্ভব হয়নি। যতদিন মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকতে, নীতি সুদ হারও বাড়তে থাকবে।

এর আগে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের আমলে সার্কুলারের বাইরে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো এখন আর কার্যকর থাকবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সুদের হার নিয়ে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ মৌখিকভাবে বেঁধে দেওয়া ঋণের সুদ হার এখন আর ১৪ শতাংশে আটকে রাখা হবে না। মার্কেট অনুযায়ী ঋণের সুদ হার ঠিক হবে। তবে, এই প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে কেউ যাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বা অনৈতিকতার আশ্রয় না নেয়, সে বিষয়ে শতর্ক করা হয়েছে।

একই সঙ্গে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময় ক্রেডিট কার্ডের সুদ হার ১৮ শতাংশের বেশি যাতে অতিক্রম না করে সেটি মৌখিক নির্দেশনা ছিল। তা বাতিল করে সাকুর্লার অনুযায়ী সুদ হার নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বাড়বে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার।

সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণে ক্রলিং পেগের ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো এখন ১২০ টাকার মধ্যেই ডলার ক্রয় বিক্রি করতে পারছেন। এই ডলার ক্রয় বিক্রয় যেন কোনোভাবেই ১২০ টাকার উপরে না যায়, সে বিষয়ে ব্যাংকারদের অনুরোধ করেছেন গভর্নর। যদি দর আরও বৃদ্ধির দরকার হয়, মার্কেট বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকই নির্দেশনা দেবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

সার্বিক বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ব্যাংকার্স মিটিংয়ে অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সুদের হারের যেসব মৌখিক ক্যাব ছিল, সেগুলো আর থাকবে না। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত নীতি সুদ হার বাড়তে থাকবে বলেও উল্লেখ করেছেন গভর্নর। এছাড়া, ব্যাংকগুলোকে ১২০ টাকার মধ্যে ডলার কেনাবেচা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার