দেশের পুঁজিবাজারে সার্কিট ব্রেকারের স্বাভাবিক নিয়ম ফিরিয়ে এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর ফলে দাম বাড়া ও কমার ক্ষেত্রে একই হার কার্যকর হবে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে সার্কিট ব্রেকারের স্বাভাবিক নিয়ম কার্যকর হবে। এতে শেয়ারের দাম ভেদে একদিনে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত দাম ওঠানামা করতে পারবে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৯১৬তম জরুরি কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
এর আগে শেয়ারবাজারে দরপতন ঠেকাতে সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন করে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ দাম কমার নিয়ম কার্যকর করে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়মেই রাখা হয়।
বুধবার কমিশন সভায় ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়া কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ জুন জারি করা সিদ্ধান্তটি পুনর্বহাল করা হয়। এতে শেয়ারের মূল্যসীমা আগের দিনের সমাপনী দর অনুসারে নির্দিষ্ট হারে বাড়তে ও কমতে পারবে।
সূত্র বলছে, সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম মোতাবেক কোনো কোম্পানির শেয়ারের মূল্য ২০০ টাকার মধ্যে থাকলে পরদিন ওই শেয়ারের মূল্য সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে বা কমতে পারে। মূল্য ২০০ টাকার উপর থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ৫০০ টাকার উপর থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, মূল্য ১০০০ টাকার উপর থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, ২০০০ টাকার উপর থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ এবং মূল্য ৫০০০ টাকার বেশি হলে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে।
এছাড়া সভায় জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব বাতিলসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে বিএসইসি কর্তৃক প্রেরিত এ সংক্রান্ত চিঠি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া বিএসইসির ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’ এর শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নিযুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাশাপাশি পুঁজিবাজারের যে সকল ইস্যুয়ার কোম্পানি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষিত লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড প্রদান করেনি, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।
এছাড়া সভায় কাজাখস্তানের সাথে স্বাক্ষরের জন্য খসড়া সমঝোতা স্মারকটিতে মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদনের বিষয়টি আলোচ্য সভায় অনুমোদিত হয়েছে। এই দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারকে পারস্পারিক তথ্য বিনিময়, দক্ষতার উন্নয়নসহ যেসকল বিষয়াদি রয়েছে তা উভয়দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে মনে করছে বিএসইসি। যেহেতু দুই পক্ষের মধ্যে কোন মতবিরোধ হলে নিজস্ব আইনকানুন প্রযোজ্য হবে মর্মে সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ আছে, তাই এর শর্ত পালনে কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে সভায় জানানো হয়।
এসএম