ক্যাটাগরি: জাতীয়

বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির

দেশের চলমান সংকটে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, আমি আশা করি পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে যার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা দিয়েই অসহায় ও দু:স্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাই এগিয়ে আসবেন।

আজ সোমবার বঙ্গভবনে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলা ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অসহায় এসব লোকের নিরাপদ আশ্রয়ের পাশাপাশি জীবন ধারণের জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ বহুমুখী সহায়তা প্রয়োজন। সরকার বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাও তাদের সাধ্যমতো সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেশের সব হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে সবাই দেশকে এগিয়ে আসতে একযোগে কাজ কারার আহ্বান জানান।

শ্রীকৃষ্ণকে হিন্দু ধর্মের একজন পরোপকারী ও মানবদরদী মানুষ এবং সমাজ সংস্কারক হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সব নাগরিকের সমান অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সব ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বন্ধনে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হোক এবারের জন্মাষ্টমীর অঙ্গীকার।

তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণু ও সহনশীল আচরণ করতেও সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সব অতিথির সাথে কুশল বিনিময় করেন।

এসময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সম্মানিত সদস্য, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার