সচিবালয়ে গতকাল ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারতো। ছাত্ররা তা মোকাবিলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
সচিবালয়ে আনসার সদস্যদের হামলায় আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেখতে আজ সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তারা।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ নজরুল বলেন, আনসারের ছদ্মবেশ নিয়ে তারা এসেছিল। দাবি আদায়ের উদ্দেশ্য তাদের ছিল না।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতা জাগ্রত আছে। তাদের কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে না।
রোববার সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন হাজারো আনসার সদস্য। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও রাত সাড়ে ১০টার আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি।
বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আনসারদের সব দাবিদাওয়া মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি তিনি বাহিনীর সদস্যদের ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলেরও ঘোষণা দেন। সে সময় আনসারদের আন্দোলনের সমন্বয়ক নাসির কর্মসূচি স্থগিত করেন।
কিন্তু আন্দোলনকারীদের একটি দল রোববারের মধ্যে তাদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়ার দাবিতে সচিবালয় ঘিরে রেখে উপদেষ্টা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে। রাতে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেয়াল টপকে সচিবালয় ছাড়তেও দেখা যায়।
রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার সময় আনসার সদস্যরা ধাওয়া দেন। পরে শিক্ষার্থীরা লাঠি নিয়ে আনসারদের প্রেসক্লাবের দিক থেকে তাড়া দেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটা করেন আনসার সদস্যরা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ জনতাও লাঠি হাতে নেমে পড়েন। ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে সচিবালয় এলাকা ছেড়ে যান আনসার সদস্যরা। পালানোর সময় লাঠি দিয়ে আনসার সদস্যদের পিটিয়েছেন ছাত্র-জনতা। অভিযোগ উঠেছে, সংঘর্ষের সময় আনসার সদস্যরা গুলিও চালিয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী সচিবালয় এলাকায় অবস্থান নিলে পরিবেশ শান্ত হয়। প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ উপদেষ্টা এবং কর্মীরা মুক্ত হন।
কাফি