দেশের বন্যাকবলিত মানুষদের সহায়তায় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের একদিনের বেতন প্রদান করবেন। সেই সঙ্গে ইবি পূজা উদযাপন পরিষদ জন্মাষ্টমীর ব্যয় কমিয়ে তা বন্যার্তদের সহযোগিতায় ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে ২টি ভিন্ন বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ও সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রহমান, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ও পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাসসহ পরিষদের সদস্যরা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিগুলোয় বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার বেশ কয়েকটি জেলার মানুষ প্রবল বন্যার কবলে পড়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। শিশুসহ অগণিত মানুষ খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও ঔষুধের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমতাবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সিনিয়র কর্মকর্তাগণের যৌথ সিদ্ধান্তের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের এক দিনের বেতনের সমুদয় টাকা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমাদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো।
অপরদিকে ইবি পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্তগুলো হলো- যতটা সম্ভব কৃচ্ছ্রসাধন করে জন্মাষ্টমী উদযাপন করা এবং সেখান থেকে একটা অংশ বন্যার্তদের সাহায্যের ফান্ডে দেয়া হবে। পূজার দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করা হবে। পূজা মণ্ডপের সামনেও বক্স থাকবে, কেউ চাইলে পূজার দিন অর্থ সহায়তা দিতে পারবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাস বলেন, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ইশ্বর। আমরা আমাদের জায়গা থেকে বন্যার্তদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এখানে বিষয়টি হলো আমরা অর্থ দান করছি না। আমরা আমাদের ভাই বোনদের জন্য সমব্যথী। ওখানে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।
ইবি কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের একদিনের বেতনের টাকা বন্যার্ত মানুষের সহায়তার জন্য দিব। আগামী মাসের বেতনের টাকা ছাড় হলেই আমাদের সমিতির ফান্ডে টাকা টা জমা করবো। এরপর ফান্ডের একটা চেক প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল বরাবর জমা দিয়ে আসবো। সবমিলিয়ে আনুমানিক ৭/৮ লক্ষ টাকা হবে। আশাকরি আমাদের সাহায্যটা তাদের উদ্ধারকাজে ও পুনর্বাসনে অবদান রাখবে।
ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এখনতো বন্যার শুরুর ধাপ। সারাদেশ থেকেই মানুষ অর্থ, শুকনো খাবার, পানি, স্যালাইন এগুলো নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু তাদের মূল স্ট্রাগলটা শুরু হবে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর। আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারো আপত্তি থাকলে দুদিনের মধ্যে সেটা জানাতে বলেছি। আমাদের বেতন আসলে টাকাটা কর্তন করে প্রধান উপদেষ্টার ত্রান তহবিলে জমা দেওয়া হবে। তারা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে হোক বা অন্য কোন মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে যেটা প্রয়োজন করবে বলে আশাবাদী।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম