ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ১৩টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব জেলার বেশিরভাগ স্থান পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই মুহূর্তে আরও ভারী বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা রয়েছে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টি নিয়ে দুঃসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস। আগামীকাল শনিবার থেকে আবারও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আভাস দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, শনিবার থেকে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও কক্সবাজারসহ সারা দেশে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় আবারও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এতে তিন দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়ন না হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, মৌসুমি বায়ু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবেই সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে ১৫১ মিলিমিটার।
এর আগে, গতকাল দেওয়া আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে জানানো হয়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এর ফলে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সেখানে আরও বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়। রংপুর ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে যেতে পারে।
বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। ১৩ জেলায় বন্যাকবলিত অন্তত কয়েক লাখ মানুষ। আকস্মিক বন্যায় ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকেই ঘর থেকে কিছু বের করতে না পেরে খালি হাতে ছুটে এসেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। দুর্গত এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।
আগামী সোমবারের (২৬ আগস্ট) পর বৃষ্টিপাত কমে গেলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে।