সুস্বাদু মাছ ইলিশের মৌসুম চলছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ ‘উপহার’ যাওয়াটা ছিল অনেকটাই নিশ্চিত। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবস্থার বদল হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে মাছ রপ্তানি বন্ধ। এমন অবস্থায় ভারতের বাজারে এই মাছটির দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আবার অবৈধপথে ভারতে যাওয়া কিছু মাছ আবার বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
এছাড়া শুধু ইলিশ নয়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে ভারতের বাজারে। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার জনপ্রিয় মাছের বাজারগুলোতে চলতি বর্ষায় ‘বেস্ট সেলার’ পদ্মা নদীর ইলিশের সংকটে পড়েছে। ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তবে এই মাছটি সীমান্তের অপর পাশে পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশের মানুষের কাছে হট ফেভারিট।
এনডিটিভি বলছে, বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া ইলিশের সিংহভাগই পেয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ। এছাড়া দুর্গা পূজাকে ঘিরে সুস্বাদু এই মাছের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। যদিও ইলিশ মাছটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে পাওয়া যায়, তবে বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিখ্যাত ইলিশ কূটনীতির অংশ হিসাবে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে বার্ষিক ইলিশ রপ্তানির সুবিধা দিতেন। ২০১২ সাল থেকে অন্যান্য দেশে রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ভারতে মাছ বিক্রির অনুমতি দিতো হাসিনার সরকার।
এনডিটিভি বলছে, পশ্চিমবঙ্গের পরে ইলিশ সরবরাহের এই সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়েছে ত্রিপুরা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি পদ্মার ইলিশের প্রধান ক্রেতা এবং সেখানে সুস্বাদু এই খাবারের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভের জেরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও স্থিতিশীল না হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক অজয় সাহাই গত সপ্তাহে বলেছিলেন: বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের কারণে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা অনুমান করছি। আমরা প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করি।