শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে করা সব হয়রানিমূলক মামলা আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। আর বৃহস্পতিবারের (১৫ আগস্ট) মধ্যে ঢাকার সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৪ আগস্ট) মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ অন্যান্য বিষয়ের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা একথা বলেন।
তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে বিচারের জন্য কি কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা বিভিন্ন সংগঠন জানতে চাচ্ছে। আমরা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যে মিথ্যা ও হয়রানিরমূলক মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহারের বিষয়ে। আমরা যে বলেছিলাম তিন দিনের মধ্যে করা সম্ভব, সেটা সম্ভব হয়নি। মামলা প্রত্যাহারের জন্য পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়ায় পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইন মন্ত্রণালয় একা করতে পারে না। গতকাল থেকে পুলিশ প্রায় পূর্ণোদ্যমে কাজ শুরু করেছে।
উপদেষ্টা বলেন, এই বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঢাকা শহরে যে মিথ্যা, হয়রানিমূলক মামলা হয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে। ইনশাআল্লাহ ৩১ আগস্টের মধ্যে সারাদেশে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এই গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ করা মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার হবে। আমাদের মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন তারা দিনে-রাতে কাজ করছেন।
আসিফ নজরুল বলেন, রোজিনা ইসলাম ও মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ দুটি খুবই আলোচিত মিথ্যা মামলা ছিল। তাদের মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে আগামীকালকের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও অনেকের মামলা প্রত্যাহার করা হবে। ইতিমধ্যে রোজিনা ইসলামের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে।
আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার যে সহযোগিতামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। সেটা আমরা সম্পন্ন করেছি, বলেন আসিফ নজরুল।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে সম্পূর্ণ দলীয়ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এর অর্ধেকের মতো কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন, সেখানে আমরা বেশ কিছু আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছি। যতটা সম্ভব যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দিচ্ছি। এক-দুটি ভুল হচ্ছে, সেগুলো সংশোধনেরও স্কোপ থাকবে।
অধস্তন আদালতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অধস্তন আদালতে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার আমরা নিষিদ্ধ করেছি। সেখানে স্থান সংকট আছে, জনবলের সংকট আছে।
সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ইতিমধ্যে আমাদের ড্রাফটিং উইং এর মাধ্যমে যতগুলো নিবর্তনমূলক আইন আছে, সেগুলোর তালিকা করেছি। সবচেয়ে খারাপ যে ধারাগুলো রয়েছে যেগুলোর অধীনে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়েছে, আপনারা মুক্ত সাংবাদিকতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শ্বাসরুদ্ধকর একটা অবস্থা ছিল। আমরা এগুলো বাতিল বা সংশোধন যেটা প্রয়োজন সেটা করবো।
সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যা মামলা গতি পাবে কি না-এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, অবশ্যই, রাজপথে থেকে আপনারা সারাক্ষণ আমাদের ওপর চাপ রাখবেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে আমরা জাতির কাছে সবাই দায়ী থাকবো।