ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় বিশ্বব্যাংক

অন্তর্বর্তী সরকারকে সব বিষয়ে সহায়তা দিয়ে পাশে থাকতে চায় বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে কোনোভাবেই উদ্বিগ্ন নয় সংস্থাটি। বরং বাংলাদেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চায় তারা।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।

আবদৌলায়ে সেক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক এবং বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭২ সাল থেকে ৪২ বিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতিসহ দীর্ঘস্থায়ী শক্তিশালী অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে কাজ করতে প্রস্তুত।

সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জেনেছি। যার ফলে আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির সংস্কারে কীভাবে সহযোগিতা করব সেটিও আলোচনা করেছি। কারণ, জটিল কিছু সংস্কার বাংলাদেশের প্রয়োজন। এখানে আর্থিক খাতে সংস্কার প্রয়োজন, বাণিজ্যে সংস্কার প্রয়োজন, আমরা এগুলোতে বিনিয়োগে আগ্রহী।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন এ দেশে বেসরকারি খাতে চাকরির বাজার সৃষ্টিতে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে যুবকরা এখানে বড় সম্পদ। এ ছাড়া এখানে জলবায়ু পরিবর্তন অনেক বড় ঝুঁকি, সেখানে অন্তর্বর্তীমূলক বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমরা বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্ক গড়তে কাজ করছি।’

বাংলাদেশের ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিশ্বব্যাংক উদ্বিগ্ন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘আমরা মোটেই বাংলাদেশের ঋণের কিস্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আমি অনেক দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, এটি কখনোই আমাদের উদ্বেগের বিষয় নয়।’

কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, সে সময় তিনি কিছু সংস্কারের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। এখন বাংলাদেশ নিয়ে তার অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এটি আমাদের খুব জটিল এজেন্ডা। আপনারা দেখেছেন, বিশ্বব্যাংক গ্রুপ অনেক সংস্কারে সহযোগিতা করেছে। তারপরও এখানে বেশকিছু ইস্যু আছে। যেমন আপনারা কীভাবে খেলাপি ঋণ কমাবেন, কীভাবে ব্যাংকগুলোতে স্থিতিশীলতা আনবেন। আমি মনে করি এ জন্য আমাদের এজেন্ডা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও এগুলোতে সংস্কারে কাজ করতে উৎসাহী।’

বাংলাদেশে আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘আমরা দেখেছি অনেক নীতিই এখানে আয়ত্বে এসেছে। বিশ্বব্যাংক এখানে সংস্কারে কাজ করছে। একটি শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী আর্থিক খাত। আমরা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী, বিশেষ করে ব্যাংক খাতে মূলধন বাড়াতেও কাজ করতে চাই। বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের অনেক বেশি সুযোগ আছে।’

অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের স্থবির অর্থনীতিকে চালু করার জন্য যত রকমের সহযোগিতা দরকার বিশ্বব্যাংক তা দেবে। আইএফসি ও বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা চেয়েছি আমরা। তারা বলেছে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য তারা যে কোনো কিছুই করতে পারে। নিয়মকানুন মেনে তারা বিনিয়োগ করবে।’

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার