ক্যাটাগরি: জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকারকে ৬ প্রস্তাব দিলো রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বিষয়ে ৬টি প্রস্তাব করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এ প্রস্তাবগুলো দেন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবাইয়াত ফেরদৌস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ২০১৪ সাল থেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শত শত নেতা-কর্মীকে গুম, ক্রসফায়ার, খুন, জেল, জুলুম, নির্যাতন করতে করতে বেপরোয়া খুনিরা নির্দলীয় নিরস্ত্র ছাত্রদেরও খুন করা শুরু করলে বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে শহীদ হয় বেরোবির ছাত্রনেতা আবু সাঈদ। তারপর আর জীবন দেওয়ার মানুষের অভাব হয়নি। গত ১৬ জুলাই থেকে বাংলাদেশের নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে এ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। এই যুদ্ধ মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ হতে হতে জাতীয় ঐক্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে।

তারা বলেন, বাংলাদেশ এই প্রথম একটি সরকার পেয়েছে, যে সরকার ছাত্রদের নেতৃত্বে জনতার অভ্যুত্থানের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সরকারে আন্দোলনকারী নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আছে। এই অবস্থায় সকল পক্ষের উচিত হচ্ছে, এই বিজয় এ এবং ঐক্যকে সত্যিকারের জাতীয় ঐক্যে রূপান্তর করে অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রস্তাবগুলো হলো—

১. বিজয়ের অব্যবহিত পর থেকেই কতিপয় রাজনৈতিক দলের নামে দেশের বহু জায়গায় সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং দখলবাজি করে গত কয়েকদিনে জনগণের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। সরকার দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রের সর্বস্তরের নাগরিকের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

২. জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এই হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা এবং নির্দেশ পালনকারীদের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করবেন এবং তাদের বিচারের আওতায় আনবেন।

৩. বিগত আমলের বিপুল দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং দুর্নীতি লুটপাটের বিচারের ব্যবস্থা এবং পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করবেন।

৪. আয়নাঘর স্থায়ীভাবে বন্ধ করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা এবং বিগত আমলের গুম ও ক্রসফায়ারের সুনির্দিষ্ট তালিকা প্রণয়ন এবং এসব জঘন্য অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শান্তি নিশ্চিত করবেন।

৫. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফার যেসব দাবি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি সেগুলো এবং ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সড়ক ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

৬. অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানসহ কোনো উপদেষ্টা পরবর্তী ‘জাতীয় সংসদ’ নির্বাচনে যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে বিধান করবেন।

কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার