সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের দখল মুক্ত করার দাবি

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিলসিকে এস আলম গ্রুপের কবল থেকে দখল মুক্ত করে প্রকৃত মালিক ও প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তাদের কাছে মালিকানা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন শেয়ার হোল্ডাররা।

রোববার (১১ আগস্ট) সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডাররা এবিষয়ে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে। ব্যাংকটির মালিকানা প্রকৃত মালিকদের হাতে ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আবেদন করা হয়।

প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানব বন্ধন থেকে দেশের অন্যতম সনামধন্য এই ব্যাংকটিকে অর্থ পাচারকারীদের কবল থেকে পুনরূদ্ধার করে ব্যাংকের বর্তমান অবৈধ পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়ে ব্যাংকটির প্রকৃত মালিক, প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ের একটি নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের মাধ্যমে ব্যাংকটি মালিকানা হস্তান্তরের জোর দাবি জানিয়েছেন। এতে করে ব্যাংকটির আমানতকারী শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। দেশের আর্থিক খাত সংস্কারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলনের অন্যতম দাবির সাথে একাত্ততা প্রকাশ করে এবং দেশ ও অর্থনীতির স্বার্থ রক্ষায় এই প্রদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য শেয়ার হোল্ডাররা জোর দাবি জানিয়েছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত এসআইবিপিলসি’র মালিকানা জোর করে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দখল করে নেয় আওয়ামী মদদপুষ্ট এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের চরমভাবে হেনস্তা করে এক দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নরের যোগসাজশে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে ব্যাংকটির মালিকানা পরিবর্তন করা হয়।

এরপর থেকে এস আলাম গ্রুপের মাধ্যমে নামে বেনামে মনোনয়নকৃত পরিচালকদের সমন্বয়ে গঠিত অবৈধ বোর্ড কর্তৃক ব্যাংকটি দীর্ঘ সাত বছর যাবৎ পরিচালিত হয়ে আসছিল। মূলত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদের (এস আলম) নিকটবর্তী আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমেই ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। বর্তমানে তার জামাতা মো. বেলাল আহমেদ ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান তারা।

এতে বলা হয়, ১৯৯৫ সালে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির অন্যতম উদ্যোক্তা পরিচালক এবং তৎকালীণ পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব:) ডাঃ রেজাউল হক এর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সুযোগ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি অত্যন্ত সুচারুরূপে পরিচালিত হয়ে আসছিল। সমাজের স্বনামধন্য, গুণী, সৎ, মেধাবী ও ব্যাংকিং বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। ব্যাংকটিকে উত্তোরত্তর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। সে সময় ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ার হোল্ডাররা তাদের কাঙ্খিত লভ্যাংশ পেয়েছেন।

পরবর্তীতে গত ৭ বছর আওয়ামী মদদপুষ্ট এস আলম ও তার সহযোগীদের চক্রান্তে সাধারণ আমানতকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা নামে বেনামে অবৈধভাবে ব্যাংক থেকে লুট পাট করে পাচার করা হয়। আর এই লুট-পাটের কাজে তাদেরকে ন্যাক্কারজনকভাবে অবৈধ পন্থায় নামে-বেনামে ব্যাংকের অর্থ পাচার করতে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাদেরই আজ্ঞাবহ চরম দুর্নীতিবাজ বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। তাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে শুধু এসআইবিএল নয় বরং সম্পূর্ণ আর্থিক খাত আজ হুমকির মুখে। সাধারণ আমানতকারীদের স্বার্থ আজ ক্ষতির দ্বারপ্রান্তে। বর্তমানে সাধারণ আমানতকারীরা তাদের জমাকৃত অর্থ প্রয়োজন অনুযায়ী উত্তোলন করতে পারছেন না। স্বৈরাচারী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার অবৈধ অর্থের অন্যতম যোগানদাতা হিসেবে এস আলম গ্রুপ সক্রিয়ভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ পন্থায় সহযোগিতা করে আসছে বলেও মানববন্ধনে জানানো হয়।

মানবন্ধনে বলা হয়, বর্তমানে পট পরিবর্তনের পর সম্পূর্ণ জাতি যখন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, এখনও এই কুচক্রী মহলের আজ্ঞাবহ ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সাধারণ আমানতকারীদের টাকা পাচার করার প্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার