ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

শেখ হাসিনার পতন, ক্ষতিগ্রস্ত ভারতের ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা

ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য গত বছর থেকে উৎপাদিত খাদ্য বাংলাদেশে রপ্তানি শুরু করে আদিত্য মানাক্ষ্মি। ৪৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী বর্তমানে তার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারছেন না। জুলাই থেকে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে তা পরবর্তীতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিলে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটে। এতেই তার ব্যবসা থমকে যায়। খবর আল জাজিরা

মানাক্ষ্মী বাংলাদেশে নারকেল এবং পাস্তা রপ্তানি করত। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত গত এক বছরে তিনি ১০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করেন। যা তার মতো একজন ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকের জন্য বড় সফলতা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেই আশা থমকে গেছে। সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, জানিনা সামনে কী হবে? আমরা শুধু পরিস্থিতি ভালো হওয়ার জন্য দোয়া করতে পারি। আল জাজিরাকে বলেন মানাক্ষ্মী।

কলকাতার উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী রাজীব গোয়েঙ্কা। তার ঢাকাতে একটি পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে তিনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রতি বছর তার কারখানা থেকে ৩০ লাখ পোশাক তৈরি করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে প্যান্ট এবং শার্ট। কিন্তু জুলাই থেকে আন্দোলনের ফলে তার কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হয়।

এ অবস্থায় তিনি ইউরোপীয়ান ক্রেতাদের নতুন করে পোশাক সরবরাহের তারিখ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও তিনি নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না, বর্ধিত সময়ের মধ্যে তিনি অর্ডার সম্পন্ন করতে পারবেন কিনা। কারণ ব্যাংকগুলো কবে থেকে এলসি সুবিধা দিতে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের মজবুত ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। ভারতের পণ্য রপ্তানি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ এ রয়েছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশে ভারত টেক্সটাইল, চা, কফি, অটো পার্টস, বিদ্যুৎ, কৃষিপণ্য, লোহা, স্টিল এবং প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করে। যার বাজার মূল্য ১১.১ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া রেডিমেট গার্মেন্টস ও চামড়া এবং চামড়া পণ্যসহ ভারত বাংলাদেশ থেকে গত অর্থ বছরে ১.৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিসিয়েটিভ এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, চলতি বছর ভারত বাসমতি চাল রপ্তানির ওপর নিষধাজ্ঞা আরোপ করার পর রপ্তানি কিছুটা কমেছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ঘাটতির কারণে ঢাকা ভারত থেকে আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। তবে আশা করছি দ্রুতই এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ভৌগলিক কারণে বাংলাদশে ভারতকে বাদ দিতে পারবে না।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার