জাতীয়
আজ আবু সাঈদের বাড়িতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাড়িতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তার সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুজন ছাত্র প্রতিনিধিও যাবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি হেলিকপ্টারযোগে আসবেন। এরপর তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিমানবন্দরে আবু সাঈদের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ সময় তিনি বলেন, এই সময়ে আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে। যে আবু সাঈদের ছবি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এটা কেউ ভুলতে পারবে না। কী অবিশ্বাস্য একটা সাহসী যুবক বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এবং তারপর থেকে আর কোনো যুবক, কোনো যুবতী হার মানেনি। সামনে এগিয়ে গেছে এবং বলেছে যত গুলি মারো, মারতে পারো। আমরা আছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
নিহত আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুরে গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ গ্রেফতার
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ডিএমপির ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সেলিম আলতাফ জর্জের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া ও ঢাকায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। এর কোনো একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তুলে রিমান্ড চাইবে পুলিশ।
সেলিম আলতাফ জর্জ কুষ্টিয়া-৪ আসন থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকার টিকিট পাননি।
সেলিম আলতাফ আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার দৌহিত্র তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
ম্যাজিস্ট্রেসির যে ৫ ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে সেনাবাহিনীর কমিশন প্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এই ক্ষমতা প্রদান করা হয়। এই ধারা অনুযায়ী সরকারকে মেট্রোপলিটনের বাইরে যে কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুলিশের ক্ষেত্রে সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার নিচে কাউকে দায়িত্ব প্রদান করা না গেলেও অন্যদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে আইনে শর্ত আরোপ করা হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭(১) ধারা অনুযায়ী ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ (সেনা কর্মকর্তা) সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (জেলা প্রশাসক) তত্ত্বাবধানে কাজ করবেন।
গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও বেআইনি সমাবেশ ভঙ্গের ক্ষমতা
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ফৌজদারি কার্যবিধির ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। এসব ধারা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাগণ কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তারের আদেশ, তল্লাশির আদেশ ও বেআইনি সমাবেশ ভঙ্গের জন্য আদেশ দিতে পারবেন।
গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তারের আদেশ
ফৌজদারি কার্যবিধির ৬৪ ও ৬৫ ধারায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট তার উপস্থিতিতে ও এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে কোনো অপরাধ করলে তিনি নিজে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন অথবা অন্য কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিতে পারবেন। এছাড়া ৮৩ ও ৮৪ ধারা অনুযায়ী অধিক্ষেত্রের বাহিরে কার্যকরের জন্য পরোয়ানা জারি করতে পারবেন। আইনের ৮৬ ধারার বিধান মতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিতে পারবেন অথবা অপরাধ জামিনযোগ্য না হলে তাকে আদালতে পাঠাবেন।
তল্লশি সংক্রান্ত আদেশ
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৯৫(২) ধারার বিধানমতে তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে ডাক বা টেলিগ্রাম বিভাগের দ্বারা তল্লাশী পরিচালনা করবার ও উক্ত দলিল, পার্সেল বা ব্যক্তি আটক করার ব্যবস্থা করতে পারবেন। ১০০ ধারার বিধানমতে কোনো ব্যক্তিকে বেআইনিভাবে আটক করার বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ পেলে তল্লাশি পরোয়ানা জারি করতে পারবেন। ১০৫ ধারার বিধানমতে নিজ উপস্থিতিতেও ম্যাজিস্ট্রেট তল্লাশির আদেশ দিতে পারবেন।
শান্তিরক্ষায় মুচলেকা গ্রহণ
শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা থাকলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারা অনুযায়ী শান্তি শান্তিরক্ষায় সদাচরণের মুচলেকা গ্রহণ করতে পারবেন। ১০৯ ধারার বিধানমতে অধিক্ষেত্রের মধ্যে ভবঘুরে ও সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে মুচলেকা নিতে পারবেন। ১১০ ও ১২৬ ধারা অনুযায়ী অভ্যাসগত অপরাধীর কাছ থেকে জামিনদারসহ বা জামিনদার ছাড়াও শান্তিরক্ষায় মুচলেকা নিতে এবং প্রয়োজনে মুচলেকা বাতিল করতে পারবেন।
বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গের আদেশ দান
ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ ধারা অনুযায়ী সর্বসাধারণের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে এই ধরনের পাঁচ বা তারবেশি ব্যক্তির সমাবেশ ছত্রভঙ্গের আদেশ দিতে পারেন। আদেশ অমান্য করলে ১২৮ ধারা অনুযায়ী একজন ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ভঙ্গে বল প্রয়োগের আদেশ দিতে পারেন। ১৩০ ধারার বিধান অনুযায়ী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে প্রয়োজনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন।
এছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩৩ ধারা অনুযায়ী একজন ম্যাজিস্ট্রেট পথ, নদী, খাল বা প্রকাশ্য স্থানে বেআইনি বাঁধা অপসারণ, ব্যবসা বা সংরক্ষিত এলাকায় মানুষের আরাম আয়েশের বিঘ্ন ঘটানো, গৃহ বা তাবু হতে ক্ষতিকর বস্তু বা বৃক্ষ অপসারণ, জলাশয় ঘেরাও, বিপজ্জনক প্রাণী ধ্বংস বা আটক ইত্যাদি আদেশ দিতে পারেন। কোনো ব্যক্তি ১৪২ ধারার বিধান মতে ক্ষতি এড়াতে কোনো ব্যক্তির উপর নির্দিষ্ট স্থানে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
আরএমপির ১৫ পুলিশ পরিদর্শক পদে রদবদল
পদায়নের এক মাস পর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ১২ থানার নয়টি থেকে নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পদায়ন ও দুই থানার ওসি রদবদল করা হয়েছে। এছাড়া গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) ও মেট্রোকোর্টসহ সব মিলিয়ে ১৫ পুলিশ পরিদর্শক পদে রদবদল করা হয়েছে।
আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক অফিস আদেশে তাদের রদবদল করেন। এতে বলা হয়েছে- এই পদায়ন ও রদবদলের আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এছাড়া অফিস আদেশটি পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
আদেশে ওসি হিসেবে যাদের বদলি করা হয়েছে: পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মেহেদী মাসুদকে বোয়ালিয়া মডেল থানায়, মো. আশরাফুল ইসলামকে রাজপাড়া থানায়, মো. মতিয়ার রহমানকে চন্দ্রিমা থানায়, মো. আব্দুল মালেককে মতিহার থানায়, মো. আব্দুল মতিনকে কাটাখালি থানায়, মো. মাহবুব আলমকে শাহ মখদুম থানায়, মো. মনিরুল ইসলামকে হিসেবে পবা থানায়, মো. কামাল হোসেনকে হিসেবে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় ও মো. হাসানুজ্জামানকে কর্ণহার থানায় নতুনভাবে পদায়ন করা হয়েছে।
এদিকে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার বর্তমান ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ ও পবা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলমকে মেট্রোপলিটন কোর্টে বদলি করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার বর্তমান ওসি মো. মশিউর রহমানকে নগর বিশেষ শাখায় (সিটিএসবি) বদলি করা হয়েছে। একই আদেশে নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম ও মো. আব্দুল আলীমকে নগর গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) বদলি করা হয়েছে। এছাড়া আরএমপির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. মঞ্জুরুল কবিরকে নগর বিশেষ শাখায় বদলি করা হয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, থানার ওসি ও পুলিশ পরিদর্শক পর্যায়ে পদায়ন ও রদবদলের এই অফিস আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
কারাগারে ডিভিশন পাচ্ছেন যারা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোট ৩৭ জন এমপি-মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে নয়জনকে কারাগারে ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বকশিবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরে কারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেসব বন্দিরা সাজাভোগ করেছেন, তারা রেয়াত পেতে পেতে মুক্তি পেতে পারেন। যখন তারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তখন তারা মুক্তি পেতে পারেন। যারা মুক্তির আওতায় চলে আসেন, তাদের বিষয়ে প্রস্তাবনা আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাই। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বেটিংয়ের পর চূড়ান্তভাবে যদি মাফ করতে হয় সেটি রাষ্ট্রপতি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে মাফ করার অধিকার রাষ্ট্রপতির। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রধান উপদেষ্টাও পারেন। এ রকম অনেক বন্দিদের বিষয়ে প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আছে। এই বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করছি। এই বিষয়ে অতি শিগগিরই একটি বৈঠকের প্রস্তাবনা আছে। যারা অক্ষম চলাফেরা করতে পারে না, অথবা যারা রেয়াত পাওয়ার যোগ্য, তাদের মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
পলাতক বন্দিদের মধ্যে জঙ্গি কতজন রয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত নয়জন জঙ্গি পালিয়েছে। এছাড়া, বিচারাধীন মামলার অনেক জঙ্গি পালিয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৭০ জন জঙ্গি পলাতক রয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক বন্দিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে ছিল মোট ৯৮ জন। এদের মধ্যে অনেককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা কত ও বর্তমানে কতজন বন্দি রয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের সব কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪২ হাজারেরও কিছু বেশি। এই মুহূর্তে আমাদের কারাগারে আছে ৫০ হাজারেরও বেশি বন্দি।
কারাগারে হামলার সময় কত আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগার থেকে ৯৪টি অস্ত্র লুট হয়ে গিয়েছিল। এখনো উদ্ধার করা বাকি আছে ২৯টি অস্ত্র। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মোট সংখ্যা ৬৫টি।
কারাগারে নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়ম-বহির্ভূত কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলমান রয়েছে। যেসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মোটা দাগে বড় ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে আমি অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা নিচ্ছি। এ বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা শিগগিরই দেখা যাবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সৎ অফিসারদের আমরা পদায়ন করছি। লম্বা সময় ধরে কিছু লোক একই জায়গায় কাজ করছিল, তাদের সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে সাধারণ মানুষসহ কতজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গি বের হয়ে এসেছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ রকম আলোচিত মোট ৪৩ জন বন্দি এখন পর্যন্ত কারাগার থেকে জামিন পেয়ে মুক্ত হয়েছেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর কিছু কিছু কারাগারে হামলা হয়। এ সময় সাধারণ মানুষদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়। এরা আসলে কারা ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ তাদের চিহ্নিত করেছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, তাদের শনাক্ত করার জন্য আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি। ৫ আগস্টের পরে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে অনেক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতেও হামলা হয়েছিল। কারাগার যেহেতু একটি ক্ষোভের জায়গা ছিল, এরই বহিঃপ্রকাশ এসব হামলা।
তিনি বলেন, যেসব কারাগারে বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, আমরা প্রতিটিতেই মামলা করেছি। মামলায় আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে আসামি করতে পারিনি। কারণ পরিস্থিতি যেহেতু ভিন্ন ছিল। অজ্ঞাতনামা আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মূলত মামলা করা হয়েছে। আটটি কারাগারে বিশৃঙ্খলার দায়ে মোট আটটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমাদের পাঁচটি কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়েছে, সে সংক্রান্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। তবে, সবমিলিয়ে আমাদের ১৭টি কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
কারাগারের কর্মকর্তাদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যোগদান করার পর মাদকের বিষয়ে ব্যাপক অভিযোগ পাচ্ছি। আসলে এই বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ বন্দিদের বিষয়ে যেমন পাচ্ছি, তেমনি কারারক্ষী এবং কারা কর্মকর্তাদের বিষয়েও পাচ্ছি। এই বিষয়ে আমাদের সবচেয়ে আশঙ্কার জায়গাটি হলো যে, এটিকে আমরা খুঁজে কীভাবে বের করব। কারাগারে যেন মাদক না ঢুকতে পারে, সেই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। মাদকাসক্ত কেউ কারা বিভাগে চাকরিরত অবস্থায় থাকতে পারবে না।
কারাগারে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ বিষয়ে আমরাও আমাদের মতো করে তদন্ত করছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে এই বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গত ১৫ বছরে যে পরিমাণ কাস্টডিয়ালের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, এটা আসলে আইনের একটা বিষয়। রুটিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি কোনো জায়গায় সন্দেহ হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে…। আর কেউ যদি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তাহলে তাদের আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।
জুলাই ও আগস্টে আন্দোলন চলাকালে যারা গ্রেপ্তার হয়েছিল, তাদের মধ্যে কতজন বন্দি এখনো কারাগারে আছে, আর কতজন জামিন পেয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্দোলন চলার সময় যেই ধরনের মামলা হয়েছিল এবং গ্রেপ্তার হয়েছিল এ ধরনের বন্দি এখন আমাদের কাছে নেই। সবাই জামিন প্রাপ্ত হয়ে গেছেন এবং জামিনে বের হয়েছেন। আন্দোলনের কতজন বন্দি জামিনে বের হয়ে গেছে তার সঠিক সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে, সেই সময় আমাদের বন্দি সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার, এখন তা ৫৫ হাজার। তাহলে বলা যায় ওই সময় এসব মামলায় গ্রেপ্তার প্রায় ১৫ হাজার বন্দি ধীরে ধীরে জামিন পেয়ে বের হয়েছেন।
বিদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সাজা ভোগ হওয়ার পরও তাদের অনেকে জেলে থেকে যায়। এখন পর্যন্ত কতজন বিদেশি বন্দি আছে এবং তাদের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিদেশি বন্দিদের সাজা শেষ হয়ে গেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরে আমরা তাদের ডি-পোর্ট করি। এখন আমাদের কারাগারে মোট ১৪৩ জন বিদেশি বন্দি রয়েছে। আমরা যদি ক্লিয়ারেন্স পাই, তাহলে আমরা তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।
গত ৫ আগস্টের পরে যেসব মন্ত্রী এবং এমপিরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তারা কারাগারে কোনো ডিভিশন পাচ্ছেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি গেজেটেড অফিসাররা কারাগারে আসলে ডিভিশন পেয়ে যান। বাকি যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি বা এমপি-মন্ত্রী আছেন, তারা আবেদন করবেন অথবা এ বিষয়ে আদালত বললে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর যাদের বিষয়ে আদালত বলবে না, তারা যদি আবেদন করেন, তখন সে আবেদনটি আমরা ডিসির কাছে পাঠাবো। ডিসি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমরা তাদের ডিভিশন দিতে পারব। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের কাছে বিশেষ বন্দি (এমপি-মন্ত্রী) মোট ৩৭ জন… তাদের মধ্যে নয়জন ডিভিশন পাচ্ছেন, আর বাকিদের বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত ভান্ডারী জুলাই-আগস্টে ঐতিহাসিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশ দুটি সার্ক ও বিমসটেকের সদস্য এবং অভিন্ন ইতিহাস ও জনগণের মধ্যে অত্যন্ত গভীর মিথস্ক্রিয়ার ভিত্তিতে উভয় দেশেরই ‘চমৎকার’ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এখনও মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ভান্ডারী নেপালের বিশাল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে দুদেশ শিগগিরই জ্বালানি বাণিজ্য শুরু করতে সক্ষম হবে।
রাষ্ট্রদূত ভান্ডারী নেপালকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদার প্রস্তাবের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত বিশেষ করে চিকিৎসা শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেপালি শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসাও করেন।
তিনি বলেন, নেপালের অনেক চিকিৎসক বাংলাদেশে শিক্ষা লাভ করেছেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সার্ক, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন, ২০১৪ সালের পর এর কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। সার্কের সদর দপ্তর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত।
রাষ্ট্রদূত সার্ক ও বিমসটেকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার এবং বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।