দেশে চলমান অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে রাজধানীর ব্যাংকপাড়া নামে পরিচিত মতিঝিলে এলাকায় মানুষের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। তবে ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহকের উপস্থিতি থাকলেও নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে প্রায় সব ব্যাংকের শাখা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ রবিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল ও গুলিস্তান এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এদিকে প্রিমিয়ার ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিময়ে শাখা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। একই কারণে বন্ধ সে বিষয়ে জানাতে পারেননি দায়িত্বরত কর্মচারীরা। মাহিদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী শাখাটিতে এসে অনেকক্ষণ থেকে ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সম্পন্ন করতে পারেননি। তিনি জানান কোন নোটিশ ছাড়াই এভাবে শাখা বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। অন্যান্য ব্যাংকের মতো একটি বিকল্প দরোজা রাখলেও পারত। কিন্তু এই শাখাটি পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরের পাশেই অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস। কিন্তু আজ ব্যাংকের প্রধান দরজা বন্ধ রাখতে দেখা যায়। সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান দরজা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু অপর পাশে একটি ছোট দরজা আছে সে দিক দিয়ে গ্রাহক আসা-যাওয়া করতে পারছেন। ছাত্র আন্দোলনের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যার উপস্থিতি অনেক কম। এ কারণে লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে শাখায়। তাছাড়া শাখার নিরাপত্তার জন্য আমাদের নিয়োগকৃত নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী রয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পার্শ্ববর্তী থানাতেও অবহিত করে রেখেছি।
এদিকে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার দরজার আংশিক, দিলকুশার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংকের প্রধান দরজা বন্ধ দেখা গেছে আজ।
বক চত্বরে অবস্থিত সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল ব্রাঞ্চের কাউন্টারগুলো ছিল লোকশুন্য। মাঝেমধ্যে দুই একজন গ্রাহক আসছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে খুব দ্রুত চলে যাচ্ছেন।
ব্যাংক এশিয়ার মতিঝিল শাখার দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান, মাঝে মাঝে আশপাশে মিছিলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে কখনো শাটার বন্ধ রাখছি আবার কখনো খুলছি। আমার কাছে শাখার নিরাপত্তা সবার আগে। গ্রাহকরা যাতে নির্বিঘ্নে লেনদেন করতে পারে সেই ব্যবস্থাও রেখেছি আমরা। বিকল্প গেটও আছে প্রধান গেটও খুলে দিচ্ছি মাঝে মাঝে।
মতিঝিল এলাকা ঘুরে আরো দেখা যায়, চলাচলের প্রধান বাহন এখন রিকশা, সিএনজি এবং প্রাইভেটকার। এদিকে দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ফকিরাপুল বাসস্ট্যান্ডে কোনো বাস দেখা যায়নি।
ফকিরাপুলের জনতা ব্যাংকের লেনদেনের চিত্রেও ফুটে উঠেছে ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব। গ্রাহক উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন লেনদেন স্বাভাবিক। তারা জানান, এই শাখাতে মূলত বিমানের টিকিট কেনাবেচা করা গ্রাহকরা টাকা জমা দিয়ে থাকেন। এখন বারোটা বাজছে। দুইটার পর থেকে চাপ তৈরি হবে লেনদেনের। প্রতিদিনই এই সময় অল্প গ্রাহক দেখা যায়। ছাত্র আন্দোলনকে লেনদেনের জন্য কোনো সমস্যা মনে করছে না তিনি। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী থানাতে অবহিত করে রাখা হয়েছে।
নটরডেম কলেজের বিপরীত পাশে অবস্থিত এটিএমগুলোতে কোনো গ্ৰাহক দেখা যায়নি। নির্বিঘ্নে লেনদেন করা যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে দু-একজন করে এসে টাকা ওঠাচ্ছেন। তবে অন্যান্য দিনের মতো চাপ নেই বলে জানা গেছে। আজ নেটওয়ার্কেও কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত কর্মীরা।
কাফি