আন্তর্জাতিক
জাপানে সস্তায় মিলছে বিলাস পণ্য, বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়
জাপানে কম দামে মিলছে নামিদামি ব্র্যান্ডের পণ্য। এসব কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য পর্যটক। জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দাম হ্রাসের প্রভাব পড়ছে দামি ব্র্যান্ডের পণ্যেও। জুলাই মাসে গত ৩৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দাম হয়েছে ইয়েনের। এর ফলে জাপানে এসে ভিড় করছেন সারা বিশ্বের বিলাস পণ্যপ্রেমী মানুষ। বিলাস পণ্যের ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলো এতে অখুশি। কারণ তাদের কেতাদুরস্ত জুতো, দামী হুইস্কি সবই এখন বিশ্বের অন্যান্য জায়গার তুলনায় জাপানে সস্তা। এতে তাদের লাভের পরিমাণও কমছে।
কিছু পর্যটক, যেমন চীনের পর্যটকরা, নিজের দেশে এমন পণ্য না কিনে জাপানে গিয়ে তা কিনছেন। ইয়েনের দামের পরিবর্তনশীলতার কারণে সংস্থাগুলো চাইলেই দাম বাড়াতে পারছে না। ফলে যত দিন ইয়েন দুর্বল থাকবে, তত দিন লাভও বাড়বে না।
২৯ বছর বয়সি ঝাং লেই চীনের দক্ষিণের রাজ্য হুনান থেকে এসেছেন। পেশায় ডিজে ঝাং জাপানে প্রথমবারের মতো এলেও আবার আসতে চান। শনিবারে টোকিয়োর গিনজা অঞ্চলে তাকে দেখা যায় কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকতে।
দুটো লুই ভুটন ব্র্যান্ডের ব্যাগ ও স্পোর্টসের পোশাকের ব্র্যান্ড ওনিটসুকা টাইগারের ব্যাগ হাতে ঝাং বলেন, ‘‘এখানে এসব আরো সস্তা।’’ গরম থেকে বাঁচতে হাতপাখা নিয়ে লুই ভুটন দোকানের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন আরো ১৫ জন ক্রেতা। ততক্ষণে ঝাং হাতের দিকে দেখিয়ে বলেন, তিনি ঘড়ি কিনতে চান। কোন ব্র্যান্ড? ‘‘রোলেক্স’’, তার জবাব।
এই ধারা লুই ভুটনকে অবাক করেছে। সংস্থাটির প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জাঁ-জাঁক গুইয়োনি বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসা দিক বদল করে এশিয়া থেকে জাপানের দিকে ঘুরেছে।’’
এমন ধারা চীনে এই সংস্থার লাভ ব্যাপকভাবে কমাচ্ছে, জানান তিনি। গুইয়োনি বলেন, মুদ্রার দামের দ্রুত বদল এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু চলতি সপ্তাহে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন তারা কারণ ব্যাংক অফ জাপান সুদের হার বাড়িয়েছে বুধবারে।
ডিওর, শানেল, মাউন্ট ফুজি
চীনে লুই ভুটনের জনপ্রিয় আলমা বিবি হ্যান্ডব্যাগের দাম দুহাজার মার্কিন ডলারের কিছু বেশি। জাপানে তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮৭৫ ডলারের কাছাকাছি দামে। এর আগের মাসে, আরো ১০০ ডলার কম দাম ছিল এই ব্যাগের।
চীনে এই ব্যাগের দামের সমমানে পৌঁছাতে জাপানের ইয়েনকে ডলারপিছু ১৩৬ ইয়েন ছুঁতে হবে। গত বৃহস্পতিবার সাড়ে চার মাসে সবচেয়ে ভালো দাম ছিল ইয়েনের। এক ডলারে মিলেছে ১৪৯ ইয়েন।
শুধু ব্যাগ নয়, দামী মদ কেনাতেও ঝুঁকছেন চীনা পর্যটকরা বলে জানিয়েছে পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থা রেমি কনত্রো। কারটিয়ের ব্র্যান্ডের মালিক সুইস সংস্থা রিশেমঁ জাপানে বছরের প্রথমার্ধ্বে তার বিক্রি বাড়িয়েছে ৬০ শতাংশ। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন চীনা, আমেরিকান ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নানা দেশ থেকে আসা পর্যটকরা।
ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ফুমিকো আনিসাকে জিজ্ঞেস করা হয় জাপানে তার পরিকল্পনা কী। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘শপিং, শপিং, শপিং! দামী ব্র্যান্ড এখানে সস্তা। আমরা ডিওর ব্র্যান্ডের জিনিস কিনব। কিন্তু তার আগে শানেল ঘুরে আসব।’’
টোকিও ছাড়াও পশ্চিমের শহর ওসাকায় যাবেন তিনি, মাউন্ট ফুজির কাছে। সেখানে একটি বিশাল শপিং মল আছে, যেখানে বিশ্বের নামী ব্র্যান্ডের সমাহার। জুন মাসে রেকর্ডসংখ্যক ৩১ লাখ পর্যটক আসেন জাপানে। করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে জাপানে বেড়াতে আসেন ৩২ লাখ পর্যটক।
সরকারের মতে, এবছর পর্যটকরা জাপানে প্রায় ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করবেন। বার্ধক্যে জর্জরিত জনসংখ্যার দেশ জাপানে পর্যটন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় আয়ের উৎস।
নিউইয়র্ক থেকে আসা পর্যটক ইয়াদভিন্দর সিং বলেন, তিনি সেভাবে কেনাকাটার পরিকল্পনা নিয়ে না আসলেও জারা ও অন্যান্য দোকানে কম দাম দেখে তার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন। ২৬ বছর বয়সী এই পর্যটক বলেন, ইতিমধ্যেই অনেক কেনাকাটা হয়ে গেছে তার। জামাকাপড়, গয়না, জুতো…গোটা আউটফিটই কিনেছি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার কোটির সম্পত্তি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে সামান্য সরকারি বেতন পেয়েও ভিনদেশে কীভাবে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী।
দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর বুধবার আলজাজিরার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান। ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি পাঁচশরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার।
আলজাজিরা বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বেশ ভালো সখ্যতা ছিল সাইফুজ্জামানের। যা তিনি নিজেই স্বীকার করে বলেছেন, “আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বাড়ে।
কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যম বলেছে, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে তাদের সাংবাদিক সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যায়। ওই সময় ‘ছদ্মবেশী’ সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামী দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন।
এছাড়া ওই সময় লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তিনি। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।
সাইফুজ্জামান আলজাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।
আলজাজিরার ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
হংকং যাওয়ার পথে ফ্লাইটে বাংলাদেশি যাত্রীর মৃত্যু
ঢাকা থেকে হংকং যাওয়ার পথে ফ্লাইটের ভেতরে এক বাংলাদেশি যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে হংকং-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে হংকংগামী ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ৪৭ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি যাত্রী মারা গেছেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টায় ছেড়ে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৪৯ মিনিটে হংকংয়ে পৌঁছায়। ফ্লাইট মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়।
হংকং পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তারা বুধবার সকাল ৮টার কিছুক্ষণ পরে খবর পেয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী থেকে আসা সিএক্স৬৬২ ফ্লাইটে এক যাত্রী মারা গেছেন। পুলিশের তরফ থেকে মৃত ওই বাংলাদেশি যাত্রীর ময়নাতদন্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কলিং ভিসা চালু করলো মালয়েশিয়া, যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
প্লান্টেশনে বিদেশী কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ‘চাহিদাপত্র’ সত্যায়ন করার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বন্ধ থাকা কলিং ভিসা আবারো চালু করল দেশটি।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় মালেশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে মালয়েশিয়া সরকার নতুন করে তাদের প্ল্যান্টেশন সেক্টরে বিদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন করা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্ল্যান্টেশন সেক্টরের চাহিদাপত্র ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সত্যায়ন করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র সত্যায়নের জন্য উল্লেখিত বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া তথ্যাদি বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র সত্যায়নের জন্য প্রায় ১৫ রকমের তথ্যাদি বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানির অনুমোদনপত্র (কমপক্ষে কোম্পানির একজন কর্মচারী হতে হবে ম্যানেজার পর্যায়ে), সত্যায়ন ফি’র মূল ব্যাংক স্লিপ, শ্রমিকদের সবশেষ বেতন স্লিপ (চার/পাঁচজন শ্রমিকের নমুনা বেতন স্লিপ), কোম্পানির পটভূমি তথ্যের একটি প্রোফাইল যেখানে উল্লেখ থাকবে বিদ্যমান শ্রমিকের সংখ্যা (দেশী ও বিদেশী), শ্রমিকদের দুই/তিনজনের ফোন নম্বর, কোম্পানির ব্যাংক স্টেটমেন্ট (বিগত তিন মাসের) যেখানে ১০০ শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম ব্যালেন্স থাকতে হবে দুই লাখ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।
এছাড়াও বিদেশী শ্রমিক ক্ষতিপূরণ প্রকল্পের সকসো নথি (বিদ্যমান কর্মীদের নমুনা নথি), বিদেশী কর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি এবং সার্জিকা এক স্কিম (এসপিআইকেপিএ) (এসকেএইচপিপিএ)-এর নথি (বিদ্যমান শ্রমিকদের নমুনা নথি), বিদ্যমান শ্রমিকদের আবাসন সম্পর্কে জেটিকে অনুমোদিত সার্টিফিকেট, জমির মালিকানার দলিল/জমি ইজারা দলিল, প্রতিশ্রুতি/গ্যারান্টি পত্র, পরিচালকের স্বাক্ষরিত ডিমান্ড লেটার, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, কর্মসংস্থান চুক্তি, রিক্রুটিং এজেন্ট (বিআরএ) এবং কোম্পানির মধ্যে চুক্তি, মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোটা অনুমোদন পত্রসহ সকল নথির দুই সেট তৈরি করে এক সেট মূল এবং এক সেট অনুলিপি হিসেবে দিতে হবে।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিমের সাথে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল তাকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেও সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্তে উৎফুল্ল মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন আতিশি
দিল্লির রাজনীতিতে আজ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর, দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আতিশি মার্লেনার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় আপের পরিষদীয় দলের বৈঠকে দিলীপ পাণ্ডের প্রস্তাবে আতিশির নাম সর্বসম্মতভাবে সমর্থিত হয়। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা খুব শিগগিরই আসবে।
বর্তমানে দিল্লি সরকারের শিক্ষা ও গণপূর্ত বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন আতিশি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন তিনি। দিল্লির স্কুলগুলোতে শিক্ষার মান পরিবর্তনের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করছেন আতিশি।
দুর্নীতির মামলায় সিসোদিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন কালকাজির ৪৩ বছর বয়সী আতিশি। কেজরিওয়াল এবং সিসোদিয়া যখন কারাগারের ছিলেন, তখন আতিশি এএপি পার্টির সব ধরনের ইভেন্ট এবং মিডিয়াগুলোতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
এর আগে গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দলীয় সভায় হঠাৎ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। মানুষের রায়ে যদি ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন, তাহলেই কেবল ওই চেয়ারে আবার বসবেন।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রায় ছয়মাস জেলে ছিলেন কেজরিওয়াল। কয়েকদিন আগেই ছাড়া পেয়েছেন তিনি। তারপর রোববার প্রথমবার দলীয় কার্যালয়ে যান এবং দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা দেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বুধবার বিশ্বের আর্থিক খাতগুলো তাকিয়ে থাকবে মার্কিন ফেডের দিকে
পুরো বিশ্বের আর্থিক খাত এখন তাকিয়ে আছে ফেডারেল রিজার্ভের দিকে। সুদের হার কমানোর বিষয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী বুধবার কী সিদ্ধান্ত নেয়, নজর সেদিকেই। এই বহুল প্রত্যাশিত পদক্ষেপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, তার প্রভাব থাকবে পৃথিবীজুড়েই। এমনকি ডলার তেজি থাকবে, নাকি তা তেজ হারাবে, তা–ও নির্ভর করবে ফেডের সিদ্ধান্তের ওপর।
মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে ফেড দীর্ঘ সময় ধরে নীতি সুদহার বাড়িয়েই চলছিল। অনেক বছরের মধ্যে এখন তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছরের মধ্যে নেওয়া প্রথম পদক্ষেপে সুদের হার কতটা কমানো হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে চলতি বছরের শেষে রয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি বাড়তি উদ্বেগের বিষয়।
সোসাইটি জেনারেলের এফএক্স অ্যান্ড রেটস বিভাগের করপোরেট গবেষণা বিষয়ক প্রধান কেনেথ ব্রো বলেন, ‘আমরা জানি না এই ধারা কেমন হবে। এটি কি ১৯৯৫ সালের মতো হবে, যখন ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট করে হার কমানো হচ্ছিল। নাকি এটা ২০০৭–০৮ সালের মতো হবে, যখন ৫০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হয়েছিল।’
দেখা যাক বিশ্বের আর্থিক বাজারে প্রত্যাশা কী:
১. নেতৃত্বকে অনুসরণ করা
গত বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তখন এই প্রশ্ন ছিল যে ফেড যদি নীতি সুদ না কমায়, তাহলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার কতটা কমাতে পারবে। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যে সুদের হার কমাচ্ছে, তা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে এখন স্বস্তি দেবে।
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে যাচ্ছে বলে বাজারে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছে, তা ইতিমধ্যে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নীতি সুদ কমাতে উৎসাহিত করেছে। তবে ইউরোপে ফেডের তুলনায় সুদের হার হ্রাস কম হবে। কারণ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক অব ইল্যান্ড মূল্যস্ফীতির বিষয়ে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছে।
বন্ড বাজারের জন্যও নীতিসুদ কমানো আশীর্বাদ হতে পারে। ২০২৩ সাল শেষের পর এই প্রথম বারের মতো মার্কিন, জার্মান ও ব্রিটিশ সরকারি বন্ডের বিপরীতে সুদ আয় কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২. স্বস্তির জায়গা
উদীয়মান দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য মার্কিন সুদের হার কমানোর বিষয়টি বেশ স্বস্তির ব্যাপার হবে। এর ফলে তারা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য আরও বেশি সমর্থন জোগাতে পারবে। রয়টার্স যে ১৮টি উদীয়মান দেশের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তাদের অর্ধেকই এরই মধ্যে সুদের হার কমাতে শুরু করেছে। তারা এই কাজ করছে ফেডের পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনিশ্চয়তার বিষয়টিও তাদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে রয়েছে। বিএনপি পারিবাসের কর্মকর্তা ট্রাং নগুয়েন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হবে। রাজস্ব নীতির যে ভিন্নতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা সুদের হার কমানোর এই কালচক্রকে জটিল করে তুলেছে।
৩. ডলারের শক্তিক্ষয়
যেসব দেশ আশা করছে যে মার্কিন নীতিসুদ কমানোর ফলে ডলারের শক্তি কমবে এবং তাদের মুদ্রা শক্তিশালী হবে, তাদের সেই আশা পূরণ না–ও হতে পারে। বিনিয়োগ ব্যাংক জে পি মর্গান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে ফেডের সুদের হার কমানোর সর্বশেষ চার কালচক্রের তিনটির ক্ষেত্রেই প্রথম দফায় ডলার শক্তিশালী হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার কমানো অন্যদের জন্য কতটা আপেক্ষিক, তার ওপর ডলারের দামের বিষয়টি নির্ভর করবে। ডলার যদি সত্যিই কম আয়ের মুদ্রা না হয়ে ওঠে, তাহলে অ–মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে এর আবেদন থেকেই যাবে।
তবে এশিয়ার অনেক দেশ মার্কিনদের আগেই সুদের হার কমিয়েছে। এর ফলে জুলাই ও আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার ওন, থাইল্যান্ডের বাথ ও মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতের দাম বেড়েছে। আর ডলারের বিপরীতে চীনের ইউয়ানের দাম বছরজুড়ে যতটা কমেছিল, সেই ঘাটতি ওই সময়ে পূরণ হয়ে যায়।
৪. ইকুইটির অগ্রযাত্রা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার কারণে অর্থ বিনিয়োগ হোঁচট খেয়েছিল। মার্কিন সুদহার কমলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হবে, ফলে ইকুইটি বিনিয়োগ আবার বাড়তে পারে। আগস্টে দুর্বল মার্কিন কর্মসংস্থান পরিসংখ্যান প্রকাশের পরের তিন দিনে বিশ্বে শেয়ারবাজারের ৬ শতাংশ পতন হয়েছিল।
৫. উজ্জ্বল দিন
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমালে মূল্যবান ও মৌলিক ধাতু সুবিধা পেতে পারে। কম সুদের হার ও দুর্বল ডলার বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধাতু কিনতে উৎসাহিত করতে পারে। স্বর্ণের মতো মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়তে পারে। দেখা গেছে বন্ড থেকে আয় কমে গেলে এর দাম বাড়ে, কারণ বিনিয়োগকারীরা সোনা কেনেন।
সোনার দাম এখন রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের জন রিড বলেন, বিনিয়োগকারীদের সোনা কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।