কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ডাটা সেন্টারে আগুন ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে সপ্তাহখানেক বন্ধ ছিল ইন্টারনেট। এতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে বাড়তে থাকা রেমিট্যান্সপ্রবাহ। এর প্রভাব পড়েছে দেশের ডলারের বাজারে। অস্থিরতা তৈরি হয়েছে খোলাবাজারে। ডলারের দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫ টাকা।
এমন পরিস্থিতিতে কার্ব মার্কেটে ডলারের দর নির্ধারণ করে দিয়েছে মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রি করলেই ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) সংগঠনটির সভাপতি এম এস জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের সব মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের জন্য মার্কিন ডলারের সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য বর্তমানে ১১৯ টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো। যদি কোনো মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশনা অমান্য করে তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ব্যবস্থা নেবে। অ্যাসোসিয়েশনের সব সদস্যকে এই বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
এর আগেও ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিযান পরিচালনা করেছিল। সে সময়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিলগালাও করা হয়।
প্রসঙ্গত, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স শাটডাউনের খবরে এক দিনের ব্যবধানে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে যায় দু-তিন টাকা। গত মঙ্গলবার দাম বেড়ে ১২৪ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে ডলার। এর আগে একলাফে ডলারের দাম সাত টাকা বেড়ে মে মাসের ৯ তারিখে খেলাবাজারে ১২৮ টাকায় উঠেছিল।
পরে তা কমে ১২০-১২১ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। নতুন করে ফের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা ও পল্টন এলাকার বিভিন্ন মানি চেঞ্জার হাউসে ডলারের দামের এ তথ্য পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জুলাইয়ে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গুজব ছড়ানোর ফলে দেশে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন করছেন অনেক প্রবাসী। ফলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারে। এ কারণে এক দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম বেড়েছে দু-তিন টাকা।
এখন এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১২৪ থেকে ১২৪ টাকা ২০ পয়সা। গত রবিবার ও সোমবারও খোলাবাজারে ডলার ১২১-১২২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মঙ্গলবার ক্রেতা-বিক্রেতা পরিচয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সব মানি চেঞ্জার হাউসেই ডলার কেনা হচ্ছে ১২৩ থেকে ১২৩ টাকা ৫০ পয়সায়। আর বিক্রি করা হচ্ছে ১২৪ থেকে ১২৪ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত।
মতিঝিলে ডলার কিনতে আসা শরিফ নামের এক ব্যক্তি বলেন, হঠাৎ কয়েক দিনের জন্য দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে। ডলার কিনতে এসে দেখি প্রতি ডলারে দু-তিন টাকা দাম বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে এ দামেই কিনতে হলো।