জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেশি অবদান রেখেছে ভ্যাট। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভ্যাট আদায় হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার ৭১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ভ্যাট খাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। যেখানে গত ২০২২-২৩ অর্থবছর আদায় হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৪২৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ভ্যাট আদায় প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ১৭ শতাংশে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদায়ী অর্থবছরে ভ্যাট খাতে আইএমএফের প্রত্যাশা ছিল প্রায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। আইএমএফের প্রত্যাশার চেয়েও ভ্যাট খাতে বেশি আদায় হয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সিগারেট খাত থেকে সব মিলিয়ে ৩৭ হাজার ৯১৫ কোটি টাকার শুল্ককর আদায় হয়েছে। ৩১টি কোম্পানি সিগারেট বিক্রির বিপরীতে সরকারকে এই শুল্ককর দিয়েছে। সিগারেটের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক আদায় করে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ। এই বিভাগের গত অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে শুল্ককর আদায়ের চিত্রটি পাওয়া গেছে।
সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে ব্যান্ডরোল থাকে। কারণ কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় প্রতিষ্ঠানকে প্যাকেটের গায়ে ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বাজারজাত করতে হয়। ব্যান্ডরোল বিক্রির মাধ্যমেই সরকার সিগারেট থেকে রাজস্ব আদায় করে থাকে।
ভ্যাট অনুবিভাগের হিসাবমতে, গত জুন মাসে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট আদায় হয়েছে। এ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৯৪৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৯৫৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় জুনে বাড়তি আদায় হয়েছে ৪ হাজার ১০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কেবল জুনে ভ্যাট খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২১ শতাংশ।
কাস্টমস খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৯১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছর কাস্টমস খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯২ হাজার ৭৩২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছরে কাস্টমস খাতে আহরণ প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ।
আয়কর খাতে গত অর্থবছরে আয়কর ও ভ্রমণকর আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয় ১৬ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮১৯ কোটি টাকা, আর লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, ঘাটতি হয়েছে ৯ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর।
এটি সাময়িক হিসাব। সংস্থাটির রাজস্ব আদায়ের মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়। সেই হিসাবে, রাজস্ব আদায়ের মূল লক্ষ্য থেকে ৪৭ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা ও সংশোধিত লক্ষ্য থেকে ২৭ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছে।
তবে ভালো করেছে ভ্যাট খাত। ১ লাখ ৫১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।