ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট কমছে

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় শুরু হওয়া অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর। তৈরি হওয়া কনটেইনার জটও কমতে শুরু করেছে। গত চারদিনে ১৪ হাজার টিইইউএসের বেশি কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেলিভারি হয়েছে ৪ হাজার ৬১৪ টিইইউএস কনটেইনার পণ্য। চারদিনে ৩ হাজারের বেশি কনটেইনার কমেছে বন্দর অভ্যন্দরে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৮ হাজার টিইইউএসের কিছু বেশি কনটেইনার ছিল। যার বেশিরভাগই আমদানি পণ্যভর্তি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এ অবস্থায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়েছে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমেও।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, গত কয়েকদিন যেভাবে পণ্য ডেলিভারি হয়েছে, আমদানিকারকরা খালাস নিয়েছে, সে ধারা অব্যাহত থাকলে দ্রুতই বন্দর পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস কনটেইনার ধারণক্ষমতা রয়েছে। বন্দরে স্বাভাবিক সময়ে গড়ে ৩০ থেকে ৩১ হাজার টিইইউএস কনটেইনার থাকে। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলকে ঘিরে পণ্য ডেলিভারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২৪ জুলাই পর্যন্ত পাঁচদিনে বন্দর ইয়ার্ডে ৪২ হাজার টিইইউএসের কাছাকাছি হয়ে যায়। বন্দর থেকে সরাসরি খালাস না হওয়ায় ও জাহাজীকরণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক সময়ের বেশি কনটেইনার জমে যায়।

এতে বন্দরে সরাসরি পণ্যখালাসে বেগ পেতে হয়। কনটেইনার ও পণ্য খালাস নিতে আসার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং ডিপোগুলোতে কনটেইনার বহনকারী প্রাইমমুভারের অতিরিক্ত চাপের কারণে বন্দর অভ্যন্তরেও যানজট তৈরি হয়। এতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট পরিচালনা করতে বেগ পেতে হয়। গতি কমে যায় বন্দর অপারেশনেও। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে ৩৮ হাজার ২০৮ টিইইউএস কনটেইনার ছিল।

বন্দর সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গত শনিবার (আগের ২৪ ঘণ্টায়) ৩ হাজার ৪৯৯ টিইইউএস, রোববার ২ হাজার ৭৪৮ টিইইউএস, সোমবার ৩ হাজার ৩৫১ টিইইউএস এবং সর্বশেষ মঙ্গলবার ৪ হাজার ৬১৪ টিইইউএস কনটেইনার ডেলিভারি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২৭৮ টিইইউএস কনটেইনার জাহাজীকরণ হয়। ১৬ টিইইউএস কনটেইনার আইসিডিতে (কনটেইনার হ্যান্ডলিং) পাঠানো হয়। বন্দর থেকে ৬৩৮ টিইইউএস খালি কনটেইনার ডিপোগুলোতে পাঠানো হয়।

পাশাপাশি আমদানি পণ্যভর্তি ৪৯২ টিইইউএস কনটেইনার ডিপোতে পাঠানো হয় এবং ১ হাজার ৪৪৮ টিইইউএস পণ্যভর্তি কনটেইনার অনচেচিজ ডেলিভারি দেওয়া হয় বন্দর থেকে। আবার বন্দর ইয়ার্ড থেকে ২ হাজার ৬৭৪ টিইইউএস পণ্য সরাসরি খালাস নেন আমদানিকারকরা।

বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দর ইয়ার্ডে থাকা কনটেইনারের সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। তবে এটি আরও কমে আসলে বন্দরে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারণে বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হাজারের বেশি হয়েছিল। গত কয়েকদিন ধারাবাহিক ডেলিভারি দেওয়ার কারণে বন্দরে ধীরে ধীরে কনটেইনারের সংখ্যা কমে আসছে। এভাবে আমদানিকারকরা পণ্য খালাস নিলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কনটেইনারের সংখ্যা কমে আসবে। তবে বর্তমানে বন্দরের অপারেশন স্বাভাবিক ও নির্বিঘ্ন হচ্ছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার