মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে গত দুই বছর দফায় দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এর ফলও পেয়েছে। তাদের চাহিদা ও সরবরাহ দু’দিককার ব্যবস্থাপনাই ঠিক থাকায় কমে এসেছে মূল্যস্ফীতি। এবার বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করার পালা। নীতি সুদহার কমিয়ে সে ইঙ্গিতই দিল চীন ও কানাডা।
বৃহস্পতিবার নিক্কেই এশিয়ার খবরে বলা হয়, পিপলস ব্যাংক অব চায়না এক বছরের মধ্যমেয়াদি ঋণ সুবিধার (এমএলএফ) হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৩ শতাংশে এনেছে। মাত্র এক সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে সুদহার কমাতে এটি চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় পদক্ষেপ। গত সোমবার সাত দিন মেয়াদি রিভার্স রেপোর সুদহার ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনীতির প্রকৃত খাতের উন্নতির জন্য আর্থিক খাতের মাধ্যমে সহায়তা করার অংশ হিসেবে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপ।
এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি আনতে ব্যাংক অব কানাডা বুধবার নীতি সুদহার আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। এ সুদহার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে। এর আগে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টানা এক বছর নীতি সুদহার ৫ শতাংশে রাখে ব্যাংক অব কানাডা। দেশটির নীতি সুদের এ হার ছিল গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, করোনা অতিমারি পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক হারে বেড়ে যায় পণ্যমূল্য। দেশে দেশে দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে, ২০২২ সালে বিশ্বের গড় মূল্যস্ফীতি পৌঁছায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়ানোসহ ব্যাপক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির পথে হাঁটতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। সরবরাহ ব্যবস্থাতেও উন্নতি আনার চেষ্টা করা হয়। ফলে ২০২৩ সালে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে। এটি আরও কমে ২০২৪ সালে ৫ দশমিক ৯ এবং ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এমআই