এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম চলতি সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ চীনে নিম্নমুখী চাহিদা এলএনজির দাম কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। যদিও স্পট মার্কেটে এখনো প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি গড়ে ১২ ডলারের ওপরে বেচাকেনা হচ্ছে।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় আগস্টে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১২ ডলার ২০ সেন্ট, গত সপ্তাহে যা ছিল ১২ ডলার ৫০ সেন্ট। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১১ ডলার ৮০ সেন্ট।
এ বিষয়ে ব্রেইনচাইল্ড কমোডিটি ইন্টেলিজেন্সের বাজার বিশ্লেষক ক্লাস ডোজেম্যান বলেন, ‘চীনে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ায় এলএনজির চাহিদা কমেছে। একই সঙ্গে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ও উৎপাদন মূল্যের মতো অর্থনৈতিক সূচকগুলো বছরের দ্বিতীয়ার্ধে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এছাড়া জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ঠাণ্ডার প্রকোপ কম থাকার সম্ভাবনায় গ্যাসের চাহিদা অতিরিক্ত বৃদ্ধির ঝুঁকি কম। তবে এশিয়ায় চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে এলএনজির চাহিদা বাড়তে পারে।
বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের সিনিয়র এলএনজি বিশ্লেষক চার্লস কোস্টেরোস বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় তাপমাত্রা বাড়লেও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত। এ ভারসাম্য বজায় থাকায় প্রাকৃতিক গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনও কমেছে।’
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস অনুযায়ী আগস্টে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থ-ওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্থির হয়েছে ৯ ডলার ৮২ সেন্ট। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে দশমিক ৮৫ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
আরগাস আগস্টে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ৯ ডলার ৮০ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিজ একই মাসের সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ৯ ডলার ৭৭ সেন্ট।
ঘূর্ণিঝড় বেরিলের কারণে বন্ধ হওয়া ফ্রিপোর্ট এলএনজি পুনরায় উৎপাদন চালু করার দিকে নজর দিয়েছে। ফ্রিপোর্টের টেক্সাস প্লান্ট বৃহস্পতিবার থেকে অল্প পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে।
এদিকে স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানিয়েছেন, টানা নয় সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গত শুক্রবার থেকে আটলান্টিক সাগরপথে এলএনজি পরিবহনের ব্যয় কিছুটা কমে দৈনিক ৮৮ হাজার ২৫০ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে পরিবহন ব্যয় বেড়ে দৈনিক ৫৬ হাজার ৭৫০ ডলারে পৌঁছেছে, যা গত ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ।