দৈনন্দিন জীবনের গৎবাঁধা অফিস কারোরই ভালো লাগে না। অনেকেই আছেন অনিচ্ছা সত্ত্বেও, শুধু পেটের দায়ে হাজিরা দিয়ে থাকেন কর্মস্থলে। আবার অনেকে ছয় অঙ্কের বেতন পেয়েও সন্তুষ্ট নয় নিজ কর্মক্ষেত্র নিয়ে। বর্তমানে তাই বহু তরুণ-তরুণী চাকরি ছেড়ে বেছে নিচ্ছেন উদ্যোক্তা হওয়ার মতো পথ। অনেকে আবার নেমে পড়ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন কন্টেন্ট ক্রিয়েশনে।
তেমনি একজন নিশা শাহ। লন্ডনের এই ব্যাংকার তার চাকরি ছেড়ে আত্মপ্রকাশ করেছেন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে। এখন তার আয়ের অঙ্ক শুনলে চোখ কপালে উঠবে অনেকের।
২০২২ সালে লন্ডনে ক্রেডিট এগ্রিকোলে সহকারী পরিচালক হিসেবে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে যোগদান করেন নিশা শাহ। এ সময় তার বেতন ছিল বছরে ২ লাখ ৫৬ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় তিন কোটি টাকা। কিন্তু নিজের চাকরি নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান নিশা। তারপরই চাকরি ছেড়ে নেমে পড়েন কন্টেন্ট ক্রিয়েটশনে। গত এক বছরে তিনি ইউটিউব থেকে যা আয় করেছেন তা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ কোটি টাকা।
নিশা জানান, ৯ বছরের করপোরেট ক্যারিয়ারে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না। এটা তাকে সেই উন্মাদনা দিতে ব্যর্থ হচ্ছিল যা তিনি চান। তিনি মানুষকে সহযোগিতা করতে চাইতেন কিন্তু এখানে তাকে বিভিন্ন করপোরেশন ও সরকারপক্ষকে সহযোগিতা করতে হতো, ফলে তিনি তা উপভোগ করতে পারতেন না।
নিশা জানতেন তার আগ্রহ ছিল ব্যক্তিগত অর্থায়ন এবং আর্থিক খাতের কঠিন বিষয়গুলো সবার জন্য সহজভাবে উপস্থাপন করাতে। একবার তিনি তার বাবা-মাকে সাহায্য করেছিলেন প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড কর এড়িয়ে যেতে। তিনি জানান, শুধু ব্যক্তিগত অর্থের জ্ঞান থাকার সুবাদে কারো পকেটে থাকা অর্থের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
তারপরই ইউটিউবে ভিডিও বানানো শুরু করেন নিশা। তার ভিডিওর বিষয়বস্তু ছিল ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও আত্মউন্নয়ন। ধীরে ধীরে তার চ্যানেলে ১০ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয়। এটি তাকে চাকরি ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করে। কিন্তু তার জন্য ভাগ্য বদলে যায়। বর্তমানে ইউটিউবের ভিডিও থেকে বছরে ১০ লাখ ডলারের বেশি আয় করে থাকেন নিশা।
২০২২ সালের জুনে নিশা সিদ্ধান্ত নেন প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ভিডিও আপলোড করবেন তিনি। পরে একই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নিশা প্রতিদিন একটি ভিডিও আপলোড করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে এক মাসে ৫০ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও তিন হাজার ডলার আয় করেন এ ব্যাংকার।