ক্যাটাগরি: জাতীয়

জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৪৪ জন

জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭২৬টি। এতে নিহতের সংখ্যা ৬৪৪ এবং আহত কমপক্ষে এক হাজার ৮২ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৮৭, শিশু ১১৪। ২৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৭, যা মোট নিহতের ৩৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ সময়ে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৪ নিহত, ৩ আহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩১টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ২৫ নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৫ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত ১০ কারণে গত মাসে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫৬টি অর্থাৎ ৩৫ দশমিক ২৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৭৮টি অর্থাৎ ৩৮ দশমিক ২৯ ভাগ আঞ্চলিক সড়কে, ৭৯টি গ্রামীণ সড়কে এবং ১০৭টি শহরের সড়কে এবং ৬টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ১৬৩টি মুখোমুখি সংঘর্ষ। ৩১৪টি হয়েছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা এক হাজার ১৪৭টি। সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, সকালে ২৩ দশমিক ৮২ শতাংশ, দুপুরে ২১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, বিকেলে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং রাতে ২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ২৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এই বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৭২টি দুর্ঘটনায় ১৫৫ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৪৫টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছেন।

সংগঠনটি বলছে, গত মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৫ দশমিক ৬৭ জন। জুনে তা বেড়ে গিয়ে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন ২১ দশমিক ৪৬ জন। এই হিসাবে জুন মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। বেপরোয়া যানবাহন এবং পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে। তাই, সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।

পরিবহন চালকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়- এ কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, মোটরসাইকেলচালকদের বিরাট অংশ কিশোর-যুবক। এরা বেপরোয়া চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যদের আক্রান্ত করছে। মোটরসাইকেল বেপরোয়া চালানোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতির সম্পর্ক রয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। মোটকথা, দেশে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার