বৃক্ষরোপণ করে পুরস্কারের বদলে শাস্তি পেয়েছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীন। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে সেই শাস্তি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রোববার (১৪ জুলাই) বিষয়টি জানাজানি হয়।
অব্যাহতি পাওয়া রুহুল আমীন সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনি ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি চা বোর্ডের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, ২০১৯ ও ২০২০ সালে হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও থাকাকালে মোহাম্মদ রুহুল আমীন দম্পতি ব্যক্তিগত খরচে বিভিন্ন স্কুল ও সড়কের পাশে ৩০ হাজার বৃক্ষরোপণ করেন। পরে ২০২১ সালে এ দম্পতিকে বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার-২০২০ এর জন্য মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে তাদের বাদ দিয়ে এ পদক দেওয়া হয় হাটহাজারী উপজেলা পরিষদকে। অথচ উপজেলা পরিষদ বৃক্ষরোপণ করেনি, এমনকি বৃক্ষরোপণ পদকের জন্য আবেদনও করেনি। বৃক্ষরোপণের সঙ্গে পরিষদের কোনো সম্পর্কই ছিল না।
২০২২ সালে ২৮ মে রুহুল আমীন পুরস্কারের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত লিখে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পত্র দেন। ওই ঘটনার প্রায় দুই বছর পর গত ৩ এপ্রিল রুহুল আমীনকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮–এর ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তিরস্কার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এরপর রুহুল আমীন তার ওপর আরোপিত দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের অনুলিপি চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু ২২ এপ্রিল এক চিঠিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের অনুলিপি সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলে জানায়। পরে রুহুল আমীন ওই সব তথ্য ছাড়াই নিজস্ব প্রমাণ দিয়ে তার ওপর আরোপিত দণ্ডাদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন রাষ্ট্রপতির কাছে। এরপর রাষ্ট্রপতি যাবতীয় নথি যাচাই-বাছাই শেষে রুহুল আমীনকে বিভাগীয় মামলার শাস্তি থেকে অব্যাহতি দেন।